ঈদে চার দিনে ঢাকা ছাড়বে এক কোটি ২০ লাখ মানুষ

ঢাকায় প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে এবার ঈদে এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। ঈদের চারদিন আগ থেকে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ বৃদ্ধি পাবে। সে হিসাবে প্রতিদিন ৩০ লাখ মানুষ গ্রামের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। এর মধ্যে ১৬ লাখ যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে দেশের পরিবহন ব্যবস্থায়।

বাকি ১৪ লাখ যাত্রী বিকল্প ব্যবস্থায় যাতায়াত করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। তাই সড়ক ও পরিবহনে যাত্রীদের চাপ কমাতে ঈদের ১০-১৫ দিনে আগ থেকে ঢাকার ছাড়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তা না হলে ঈদযাত্রার দুর্ভোগ কমবে না বলে মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জান সংবাদকে বলেন, ‘২০১৯-২০ সালে ঈদযাত্রার বিভিন্ন পরিসংখ্যানে জানা গেছে, এক কোটি ১৫ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। এছাড়া গত বছর মোবাইল সিম ব্যবহারকারী বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী ৬০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়ে। এছাড়া এবার তা দ্বিগুণ হবে। সেই অনুপাতে ধরা হয়েছে এক কোটি ২০ টাকা।’

ঈদযাত্রায় ১৪ লাখ যাত্রী কোন যানবাহন পাবেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় দিনে ১৬ লাখ যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে বাসে ৮ লাখ, ট্রেনে এক লাখ, লঞ্চে এক লাখ ২৫ হাজার, মোটরসাইকেল ৩ লাখ এবং ব্যক্তিগত গাড়িতে ৩ লাখ মানুষ যেতে পারবে। কিন্তু ১৪ লাখ যাত্রী কোন যানবাহন পাবেন না। ফলে তারা ‘বিকল্প উপায়ে’ যাবেন। আর সেই বিকল্প উপায় হলো বাস, ট্রেন বা লঞ্চের ছাদ বা ট্রাকে কিংবা অন্য কোন উপায়ে, অর্থাৎ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।’

তাই ঈদযাত্রায় গণপরিবহনে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি বাড়িয়ে পরিবারের সদস্যদের আগে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে হবে। এছাড়া গার্মেন্টস ও বিভিন্ন কারখানা শ্রমিকদের ঈদের ৮-১০ দিন আগে ধাপে ধাপে ছুটি দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তাহলে চাপটা অনেকটা কমে যাবে বলে জানান তিনি।

ঈদযাত্রায় অসহনীয়

যানজটের আশঙ্কা

ঈদে ঢাকা থেকে এক কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এছাড়া এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আরও প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার,

গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে।

এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সব পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা। না হলে যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে।’ তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব পথের ফুটপাত, রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

ঢাকার প্রবেশ দ্বারগুলো যানজটমুক্ত রাখার পরামর্শ

রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলো বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, বাবুবাজার ব্রিজ, পোস্তগোলা, টঙ্গী রেলস্টেশন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু, মীরের বাজার, উলুখোলা, কাঞ্চন ব্রিজ, গাবতলী মাজার রোড, মীরের দৌর, আশুলিয়া, ইপিজেড, চন্দ্রা, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু, জিঞ্জিরা, কেরানীগঞ্জ, হাতিরঝিল, মহাখালী, রামরা, শেখের জায়গা, আমুলিয়া, ডেমরা, সুলতানা কামাল ব্রিজ, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর, মেঘনা টোল, ভুলতা, গাউছিয়া, বরফা। অন্যদিকে বিআরটি নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যাতায়াতে মানুষজনকে অসহনীয় যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

তাই এসব এলাকায় যানজটমুক্ত রাখার পরামর্শ যাত্রী কল্যাণ সমিতির। এসব এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায় সংগঠনটি। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেন সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক।

ঈদযাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি

সড়কে চাঁদাবাজির কারণেও যানজট হয় মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য এবং পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয়।’

অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও পরিবহন সংকট, করোনাভাইরাসে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাতে কিছু পরিবহন মালিক-চালকরা ‘মরিয়া হয়ে উঠেছে’ বলেও অভিযোগ করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে সরকার ‘কাগুজে বাঘের মতো’ হুঁশিয়ারি দিলেও দৃষ্টান্তমূলক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণে এবারের সব পথে দ্বিগুণ-তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হবে।’

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী, বেশি ভাড়া আদায়ের লোভ, ফিটনেসবিহীন যান, পণ্যবাহী যানে যাত্রীবহন, নৌপথে পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম না থাকা, চালককে বিশ্রাম না দিয়ে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা বিরামহীন যান চালাতে বাধ্য করা, অদক্ষ চালক দিয়ে আনফিট গাড়ি চালনার কারণে সড়ক ও নৌ দুর্ঘটনায় প্রতিবছর ঈদে কয়েকশ’ যাত্রীর প্রাণহানি হয়।’

নৌ পথে ইজারাদাদের নৈরাজ্য বন্ধের দাবি

সারাদেশে নৌ ও ফেরিঘাটে নিয়োজিত ইজারাদারেরা ঈদে যাত্রী পারাপারে বাড়তি টোল আদায়ের নৈরাজ্য চালায় বলে অভিযোগ করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়াসহ বিভিন্ন ফেরিঘাটে যানবাহন চলাচল ৫০ শতাংশ বাড়লেও ফেরির সংখ্যা কমেছে। ফলে এই ঈদে এখানে শত শত যানবাহন উভয় পাড়ে আটকা পড়তে পারে। এসব ফেরিঘাটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো, বিদ্যমান ফেরিগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

‘কালবৈশাখীর শঙ্কা থাকায়’ নৌপথ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আনফিট নৌযান চলাচল বন্ধ করাসহ ফিটনেসধারী নৌযানে যাতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঈদযাত্রায় ছিনতাই, ডাকাতিসহ প্রতারক চক্রের হাত থেকে যাত্রীদের রক্ষায় প্রতিটি বাস, লঞ্চ ও রেল স্টেশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২ , ০৫ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমাদ্বান ১৪৪৩

ঈদে চার দিনে ঢাকা ছাড়বে এক কোটি ২০ লাখ মানুষ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকায় প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে এবার ঈদে এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। ঈদের চারদিন আগ থেকে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ বৃদ্ধি পাবে। সে হিসাবে প্রতিদিন ৩০ লাখ মানুষ গ্রামের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। এর মধ্যে ১৬ লাখ যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে দেশের পরিবহন ব্যবস্থায়।

বাকি ১৪ লাখ যাত্রী বিকল্প ব্যবস্থায় যাতায়াত করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। তাই সড়ক ও পরিবহনে যাত্রীদের চাপ কমাতে ঈদের ১০-১৫ দিনে আগ থেকে ঢাকার ছাড়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তা না হলে ঈদযাত্রার দুর্ভোগ কমবে না বলে মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জান সংবাদকে বলেন, ‘২০১৯-২০ সালে ঈদযাত্রার বিভিন্ন পরিসংখ্যানে জানা গেছে, এক কোটি ১৫ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। এছাড়া গত বছর মোবাইল সিম ব্যবহারকারী বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী ৬০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়ে। এছাড়া এবার তা দ্বিগুণ হবে। সেই অনুপাতে ধরা হয়েছে এক কোটি ২০ টাকা।’

ঈদযাত্রায় ১৪ লাখ যাত্রী কোন যানবাহন পাবেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় দিনে ১৬ লাখ যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে বাসে ৮ লাখ, ট্রেনে এক লাখ, লঞ্চে এক লাখ ২৫ হাজার, মোটরসাইকেল ৩ লাখ এবং ব্যক্তিগত গাড়িতে ৩ লাখ মানুষ যেতে পারবে। কিন্তু ১৪ লাখ যাত্রী কোন যানবাহন পাবেন না। ফলে তারা ‘বিকল্প উপায়ে’ যাবেন। আর সেই বিকল্প উপায় হলো বাস, ট্রেন বা লঞ্চের ছাদ বা ট্রাকে কিংবা অন্য কোন উপায়ে, অর্থাৎ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।’

তাই ঈদযাত্রায় গণপরিবহনে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি বাড়িয়ে পরিবারের সদস্যদের আগে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে হবে। এছাড়া গার্মেন্টস ও বিভিন্ন কারখানা শ্রমিকদের ঈদের ৮-১০ দিন আগে ধাপে ধাপে ছুটি দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তাহলে চাপটা অনেকটা কমে যাবে বলে জানান তিনি।

ঈদযাত্রায় অসহনীয়

যানজটের আশঙ্কা

ঈদে ঢাকা থেকে এক কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এছাড়া এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আরও প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার,

গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে।

এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সব পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা। না হলে যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে।’ তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব পথের ফুটপাত, রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

ঢাকার প্রবেশ দ্বারগুলো যানজটমুক্ত রাখার পরামর্শ

রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলো বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, বাবুবাজার ব্রিজ, পোস্তগোলা, টঙ্গী রেলস্টেশন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু, মীরের বাজার, উলুখোলা, কাঞ্চন ব্রিজ, গাবতলী মাজার রোড, মীরের দৌর, আশুলিয়া, ইপিজেড, চন্দ্রা, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু, জিঞ্জিরা, কেরানীগঞ্জ, হাতিরঝিল, মহাখালী, রামরা, শেখের জায়গা, আমুলিয়া, ডেমরা, সুলতানা কামাল ব্রিজ, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর, মেঘনা টোল, ভুলতা, গাউছিয়া, বরফা। অন্যদিকে বিআরটি নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যাতায়াতে মানুষজনকে অসহনীয় যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

তাই এসব এলাকায় যানজটমুক্ত রাখার পরামর্শ যাত্রী কল্যাণ সমিতির। এসব এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায় সংগঠনটি। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেন সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক।

ঈদযাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি

সড়কে চাঁদাবাজির কারণেও যানজট হয় মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য এবং পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয়।’

অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও পরিবহন সংকট, করোনাভাইরাসে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাতে কিছু পরিবহন মালিক-চালকরা ‘মরিয়া হয়ে উঠেছে’ বলেও অভিযোগ করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে সরকার ‘কাগুজে বাঘের মতো’ হুঁশিয়ারি দিলেও দৃষ্টান্তমূলক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণে এবারের সব পথে দ্বিগুণ-তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হবে।’

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী, বেশি ভাড়া আদায়ের লোভ, ফিটনেসবিহীন যান, পণ্যবাহী যানে যাত্রীবহন, নৌপথে পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম না থাকা, চালককে বিশ্রাম না দিয়ে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা বিরামহীন যান চালাতে বাধ্য করা, অদক্ষ চালক দিয়ে আনফিট গাড়ি চালনার কারণে সড়ক ও নৌ দুর্ঘটনায় প্রতিবছর ঈদে কয়েকশ’ যাত্রীর প্রাণহানি হয়।’

নৌ পথে ইজারাদাদের নৈরাজ্য বন্ধের দাবি

সারাদেশে নৌ ও ফেরিঘাটে নিয়োজিত ইজারাদারেরা ঈদে যাত্রী পারাপারে বাড়তি টোল আদায়ের নৈরাজ্য চালায় বলে অভিযোগ করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়াসহ বিভিন্ন ফেরিঘাটে যানবাহন চলাচল ৫০ শতাংশ বাড়লেও ফেরির সংখ্যা কমেছে। ফলে এই ঈদে এখানে শত শত যানবাহন উভয় পাড়ে আটকা পড়তে পারে। এসব ফেরিঘাটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো, বিদ্যমান ফেরিগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

‘কালবৈশাখীর শঙ্কা থাকায়’ নৌপথ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আনফিট নৌযান চলাচল বন্ধ করাসহ ফিটনেসধারী নৌযানে যাতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঈদযাত্রায় ছিনতাই, ডাকাতিসহ প্রতারক চক্রের হাত থেকে যাত্রীদের রক্ষায় প্রতিটি বাস, লঞ্চ ও রেল স্টেশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।