জুন-জুলাইয়ে আকাশে ওড়ার পরিকল্পনা এয়ার অ্যাস্ট্রার

শাফিউল ইমরান

সদ্য প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি এয়ারলাইন্স এয়ার অ্যাস্ট্রা চারটি উড়োজাহাজ লিজ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে আগামী জুন-জুলাই মাসে আকাশে উড়বে নতুন এয়ারলাইন্স কোম্পানিটির উড়োজাহাজ।

এয়ার অ্যাস্ট্রা জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ৪টি এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের এয়ারক্রাফট লিজ নিয়েছে। এটিআর ৭২ একটি যমজ ইঞ্জিন বিশিষ্ট টার্বোপ্রোপ বিমান। আঞ্চলিক বিমান পরিসেবা দেয়ার জন্য ফরাসি-ইতালীয় বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা এটিআর এটি তৈরি করে। ফ্লাইট অপারেশন শুরুর প্রথম দিন থেকেই এ চার উড়োজাহাজ বিভিন্ন গন্তব্যে উড়াল দেবে।

এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের মার্চে আসার কথা থাকলেও বিভিন্ন জিও পলিটিকাল বা যুদ্ধের কারণে শুরু করতে পারিনি। তবে, সবকিছু ঠিক থাকলে জুন ও জুলাই নাগাদ ফ্লাইট চালু রাখার আশা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রা শুরুর প্রথম দিন থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটের প্রতিটি বিমানবন্দরেই ফ্লাইট চালাবে এয়ার অ্যাস্ট্রা।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লো-কষ্ট ক্যারিয়ার থাকবে তাই ভাড়া অন্যদের চেয়ে এফোটেবল হবে আশা করছি। ডিজিট্যাল সার্ভিস ইনপ্রুভমেন্টের চেষ্টা করবো।’

একটা এয়ালাইন্স কষ্ট মানেজমেন্টের দিকে দক্ষ হতে হয়। আমরা যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ফিক্সট কস্ট ও ওভারহেড কস্ট যেগুলো আছে সেগুলো একটু বেটার মানেজ করার। ওটা করতে পারলে আমরা অনদের চেয়ে বেশি এফোটেবল হবে বলে আশা রাখি বলেন সিইও ইমরান।

এর আগে ২০২১ সালের বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ- বেবিচকের কাছে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্তি ও ফ্লাইট পরিচালনার আবেদন জমা দেয় এয়ার অ্যাস্ট্রা। গত বছরের ৪ নভেম্বর তারা এনওসি পায়।

বর্তমানে দেশে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং নভোএয়ার ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ার এস্ট্রার পাশাপাশি ‘ফ্লাই ঢাকা’ নামে আরেকটি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান শিগগিরই ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৯৫ সালে বেসরকারি এয়ারলাইন্স অ্যারো বেঙ্গলকে আকাশপথে চলাচলের জন্য অনুমতি দেয়া হয়। ১৯৯৫ সালে অনুমতি পেলেও যাত্রা শুরু করতে অ্যারো বেঙ্গলের দুই বছর সময় পার হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালে প্রথম যাত্রী পরিবহন শুরু করলেও ১৯৯৮ সালেই তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অ্যারো বেঙ্গলের পর পরই চালু হয়েছিলো এয়ার পারাবত, এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, রয়েল বেঙ্গল ও বেস্ট এয়ার- যেগুলোর কোনোটিই এখন আর সচল নেই। এ ৬টি এয়ারলাইন্সই অর্থ সংকট দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পরবতীতে আরও দুটি এয়ারলাইন্স রিজেন্ট এয়ার, ও ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ইউএস বাংলা, নভোএয়ার অভ্যান্তরীন রুটের পাশাপাশি আর্šÍজাতিক রুটেও যাত্রী পরিবহন করে চলছে।

‘প্রেফেশনাল না হলে এয়ারলাইন্স ব্যাবসায় টিকতে পারবেনা’ অতীতে যারা এসেছিল তারা ঠিকভাবে ব্যাবসা পরিচালনা করতে না পারলেও বর্তমানে দেশের অভ্যান্তরীন এবং আন্তজাতিক রুটে যাত্রী বেড়ে গেছে তাতে দেশীয় এয়ারলাইন্স কোম্পানীগুলোর জন্য পজেটিভ সংকেত বলে উল্লেখ করেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বিগত ৫ বছরে আমাদের যাত্রী সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সেই পরিপেক্ষিতে আগে যারা এই ব্যাবসায় টিকতে পরেনি তাদের বিভিন্ন সমস্যা ছিল। কিন্ত এখন যারা আসছে তারা যে পারবেনা তা নয়, এখন তারা কতটা প্রোফেশনালী কাজ করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়।’

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ০৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

জুন-জুলাইয়ে আকাশে ওড়ার পরিকল্পনা এয়ার অ্যাস্ট্রার

শাফিউল ইমরান

image

সদ্য প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি এয়ারলাইন্স এয়ার অ্যাস্ট্রা চারটি উড়োজাহাজ লিজ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে আগামী জুন-জুলাই মাসে আকাশে উড়বে নতুন এয়ারলাইন্স কোম্পানিটির উড়োজাহাজ।

এয়ার অ্যাস্ট্রা জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ৪টি এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের এয়ারক্রাফট লিজ নিয়েছে। এটিআর ৭২ একটি যমজ ইঞ্জিন বিশিষ্ট টার্বোপ্রোপ বিমান। আঞ্চলিক বিমান পরিসেবা দেয়ার জন্য ফরাসি-ইতালীয় বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা এটিআর এটি তৈরি করে। ফ্লাইট অপারেশন শুরুর প্রথম দিন থেকেই এ চার উড়োজাহাজ বিভিন্ন গন্তব্যে উড়াল দেবে।

এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের মার্চে আসার কথা থাকলেও বিভিন্ন জিও পলিটিকাল বা যুদ্ধের কারণে শুরু করতে পারিনি। তবে, সবকিছু ঠিক থাকলে জুন ও জুলাই নাগাদ ফ্লাইট চালু রাখার আশা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রা শুরুর প্রথম দিন থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটের প্রতিটি বিমানবন্দরেই ফ্লাইট চালাবে এয়ার অ্যাস্ট্রা।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লো-কষ্ট ক্যারিয়ার থাকবে তাই ভাড়া অন্যদের চেয়ে এফোটেবল হবে আশা করছি। ডিজিট্যাল সার্ভিস ইনপ্রুভমেন্টের চেষ্টা করবো।’

একটা এয়ালাইন্স কষ্ট মানেজমেন্টের দিকে দক্ষ হতে হয়। আমরা যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ফিক্সট কস্ট ও ওভারহেড কস্ট যেগুলো আছে সেগুলো একটু বেটার মানেজ করার। ওটা করতে পারলে আমরা অনদের চেয়ে বেশি এফোটেবল হবে বলে আশা রাখি বলেন সিইও ইমরান।

এর আগে ২০২১ সালের বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ- বেবিচকের কাছে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্তি ও ফ্লাইট পরিচালনার আবেদন জমা দেয় এয়ার অ্যাস্ট্রা। গত বছরের ৪ নভেম্বর তারা এনওসি পায়।

বর্তমানে দেশে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং নভোএয়ার ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ার এস্ট্রার পাশাপাশি ‘ফ্লাই ঢাকা’ নামে আরেকটি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান শিগগিরই ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৯৫ সালে বেসরকারি এয়ারলাইন্স অ্যারো বেঙ্গলকে আকাশপথে চলাচলের জন্য অনুমতি দেয়া হয়। ১৯৯৫ সালে অনুমতি পেলেও যাত্রা শুরু করতে অ্যারো বেঙ্গলের দুই বছর সময় পার হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালে প্রথম যাত্রী পরিবহন শুরু করলেও ১৯৯৮ সালেই তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অ্যারো বেঙ্গলের পর পরই চালু হয়েছিলো এয়ার পারাবত, এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, রয়েল বেঙ্গল ও বেস্ট এয়ার- যেগুলোর কোনোটিই এখন আর সচল নেই। এ ৬টি এয়ারলাইন্সই অর্থ সংকট দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পরবতীতে আরও দুটি এয়ারলাইন্স রিজেন্ট এয়ার, ও ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ইউএস বাংলা, নভোএয়ার অভ্যান্তরীন রুটের পাশাপাশি আর্šÍজাতিক রুটেও যাত্রী পরিবহন করে চলছে।

‘প্রেফেশনাল না হলে এয়ারলাইন্স ব্যাবসায় টিকতে পারবেনা’ অতীতে যারা এসেছিল তারা ঠিকভাবে ব্যাবসা পরিচালনা করতে না পারলেও বর্তমানে দেশের অভ্যান্তরীন এবং আন্তজাতিক রুটে যাত্রী বেড়ে গেছে তাতে দেশীয় এয়ারলাইন্স কোম্পানীগুলোর জন্য পজেটিভ সংকেত বলে উল্লেখ করেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বিগত ৫ বছরে আমাদের যাত্রী সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সেই পরিপেক্ষিতে আগে যারা এই ব্যাবসায় টিকতে পরেনি তাদের বিভিন্ন সমস্যা ছিল। কিন্ত এখন যারা আসছে তারা যে পারবেনা তা নয়, এখন তারা কতটা প্রোফেশনালী কাজ করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়।’