বাঁশখালী কুতুবদিয়ায় ইপসার ঘরে ঠাঁই ৮ গৃহহীন পরিবারের

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকা খানখানাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম এবং নুর মোহাম্মদ। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে তাদের ফসলি জমি ও ভিটেমাটি। সর্বস্ব হারিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর নতুন করে মাথাগোঁজার ঠাঁই হলো বাঁশখালী-কুতুবদিয়ার ৮ পরিবারের। ভিটেমাটি না থাকায় কখনো খাস জায়গায় আবার কখনো বেড়িবাঁধের পাশে পলিথিন ব্যবহার করে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করার সেই অতীতের দুঃখ গাঁথা স্মৃতির বর্ণনা দেন তারা।

এদিকে ঘর পাওয়া ৮ পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০২২ সালে বেসরকারি এনজিও সংস্থা ইপসার উদ্যোগে ৪ শতক জায়গার ওপর ২ রুম বিশিষ্ট বাঁশখালীতে ৪টি, কুতুবদিয়ায় ৪টি, নদী ভাঙ্গন ও স্থানচ্যুত ৮ পরিবারকে জমি প্রদানসহ ঘর নির্মাণ এবং বিশুদ্ধ পানির জন্য ৪টি নলকূপ ও বিদ্যুতের সুব্যবস্থা করে দেওয়াই জীবনের বাকি সময় নিশ্চিন্তে কাটিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা। মনোরম এবং সুন্দর জমিসহ ঘর পাওয়ায় আবেগাপ্লুত হয়ে আত্মহারা মনোয়ারা বেগম জানান, ‘৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে আমাদের ফসলি জমি ও একমাত্র মাথাগোঁজার ঠাঁইটি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়, ‘গত ১৩ বছর আগে আমার স্বামীও মারা গেলে কষ্টের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। দীর্ঘ ৩১ বছর নানান কষ্ট বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন এনজিও সংস্থার উদ্যোগে আমি একটি ঘর পেয়ে আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে এখন ভালোভাবে বসবাস করতে পারব। এজন্য আমি এনজিও সংস্থা ইপসার কাছে চির কৃতজ্ঞ। ভূমিহীন জেলে নুর মোহাম্মদ জানান, ‘নদী ভাঙ্গনে অনেক বছর আগে আমার বসতভিটা সমুদ্রে বিলীন হয়ে গেছে। আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে অনেক বছর ধরে কষ্টে দিন যাপন করেছি। এ ঘরটি পেয়ে মনে হল মাথার ওপর থেকে বড় একটা পাথর সড়ে গেছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে দুশ্চিন্তা থেকে বেঁচে গেলাম। জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার কয়েকটি উপকূলীয় ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গনের কবলে স্থানচ্যুত পরিবারের মানুষগুলোকে বিশুদ্ধ পানি, নলকূপ, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্টিন, সেমিপাকা ঘরের জন্য টিনসহ উপকূলীয় এলাকার অসহায় মহিলাদেরকে দক্ষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেলাই মেশিন বিতরণ ও এলাকার হতদরিদ্র মানুষগুলোকে নানা ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বেসরকারি এনজিও সংস্থা ইপসা। ইপসার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ড. প্রবাল বড়–য়া বলেন, ‘নদী ভাঙ্গনের কবলে স্থানচ্যুত ভিটেমাটি হারা মানুষগুলোর ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে ইপসা। ইতোমধ্যে বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় ছনুয়া ও খানখানাবাদ ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গনের ফলে ভিটেমাটি হারা ৮ পরিবারকে ৪ শতক জায়গার ওপর জমিসহ আটটি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বাঁশখালীর চাম্বল, শেখেরখীল, ছনুয়া, গ-ামারা ও খানখানাবাদে নলকূপ, টিন, স্যানেটারি ল্যাপট্রিনসহ অসহায় মহিলাদের সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ০৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

বাঁশখালী কুতুবদিয়ায় ইপসার ঘরে ঠাঁই ৮ গৃহহীন পরিবারের

প্রতিনিধি, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকা খানখানাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম এবং নুর মোহাম্মদ। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে তাদের ফসলি জমি ও ভিটেমাটি। সর্বস্ব হারিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর নতুন করে মাথাগোঁজার ঠাঁই হলো বাঁশখালী-কুতুবদিয়ার ৮ পরিবারের। ভিটেমাটি না থাকায় কখনো খাস জায়গায় আবার কখনো বেড়িবাঁধের পাশে পলিথিন ব্যবহার করে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করার সেই অতীতের দুঃখ গাঁথা স্মৃতির বর্ণনা দেন তারা।

এদিকে ঘর পাওয়া ৮ পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০২২ সালে বেসরকারি এনজিও সংস্থা ইপসার উদ্যোগে ৪ শতক জায়গার ওপর ২ রুম বিশিষ্ট বাঁশখালীতে ৪টি, কুতুবদিয়ায় ৪টি, নদী ভাঙ্গন ও স্থানচ্যুত ৮ পরিবারকে জমি প্রদানসহ ঘর নির্মাণ এবং বিশুদ্ধ পানির জন্য ৪টি নলকূপ ও বিদ্যুতের সুব্যবস্থা করে দেওয়াই জীবনের বাকি সময় নিশ্চিন্তে কাটিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা। মনোরম এবং সুন্দর জমিসহ ঘর পাওয়ায় আবেগাপ্লুত হয়ে আত্মহারা মনোয়ারা বেগম জানান, ‘৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে আমাদের ফসলি জমি ও একমাত্র মাথাগোঁজার ঠাঁইটি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়, ‘গত ১৩ বছর আগে আমার স্বামীও মারা গেলে কষ্টের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। দীর্ঘ ৩১ বছর নানান কষ্ট বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন এনজিও সংস্থার উদ্যোগে আমি একটি ঘর পেয়ে আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে এখন ভালোভাবে বসবাস করতে পারব। এজন্য আমি এনজিও সংস্থা ইপসার কাছে চির কৃতজ্ঞ। ভূমিহীন জেলে নুর মোহাম্মদ জানান, ‘নদী ভাঙ্গনে অনেক বছর আগে আমার বসতভিটা সমুদ্রে বিলীন হয়ে গেছে। আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে অনেক বছর ধরে কষ্টে দিন যাপন করেছি। এ ঘরটি পেয়ে মনে হল মাথার ওপর থেকে বড় একটা পাথর সড়ে গেছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে দুশ্চিন্তা থেকে বেঁচে গেলাম। জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার কয়েকটি উপকূলীয় ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গনের কবলে স্থানচ্যুত পরিবারের মানুষগুলোকে বিশুদ্ধ পানি, নলকূপ, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্টিন, সেমিপাকা ঘরের জন্য টিনসহ উপকূলীয় এলাকার অসহায় মহিলাদেরকে দক্ষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেলাই মেশিন বিতরণ ও এলাকার হতদরিদ্র মানুষগুলোকে নানা ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বেসরকারি এনজিও সংস্থা ইপসা। ইপসার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ড. প্রবাল বড়–য়া বলেন, ‘নদী ভাঙ্গনের কবলে স্থানচ্যুত ভিটেমাটি হারা মানুষগুলোর ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে ইপসা। ইতোমধ্যে বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় ছনুয়া ও খানখানাবাদ ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গনের ফলে ভিটেমাটি হারা ৮ পরিবারকে ৪ শতক জায়গার ওপর জমিসহ আটটি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বাঁশখালীর চাম্বল, শেখেরখীল, ছনুয়া, গ-ামারা ও খানখানাবাদে নলকূপ, টিন, স্যানেটারি ল্যাপট্রিনসহ অসহায় মহিলাদের সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।