খাদ্যদ্রব্যের অবৈধ মজুদে ৫ বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা

খাদ্যদ্রব্যের অবৈধ মজুদে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত আইনের নাম দেয়া হয়েছে ‘খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২২’। এই খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সামরিক শাসনমালের জারি করা অধ্যাদেশগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ‘দ্য ফুড গ্রেইন সাপ্লাই প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯’ এবং ‘ফুড স্পেশাল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ দুটো আইনকে একসঙ্গে করে নতুন আইন করা হচ্ছে।

খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ করা যায়, যাতে সিস্টেমের মধ্যে আনা যায়- সেজন্য আইনটি করা হচ্ছে বলে জানান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা।

অপরাধের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘উৎপাদন সংক্রান্ত অপরাধের মধ্যে রয়েছে খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ক্ষতিকর কিছু মিশিয়ে উৎপাদন করল। নির্দিষ্ট সময়ের বেশি মজুদ করা। সরকারি কর্মসূচির নামাঙ্কিত বা বিতরণকৃত এমন চিহ্ন যুক্ত ছাড়া সরকারি থাদ্য গুদাম থেকে খাদ্যশস্য ভর্তি বস্তা গ্রহণ, স্থানান্তর, মজুদ করা, হাত বদল বা পুনরায় বিক্রি করাও অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।’

খসড়া আইনে কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ যদি এই আইনের অধীনে অপরাধ করে তবে তার সর্বোচ্চ পাঁচ বছর জেল বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। মন্ত্রিসভা বলে দিয়েছে, নিরাপদ খাদ্য আদালতই এগুলো দেখবে, আলাদা কোন আদালত লাগবে না।’

প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টও এই বিচার করতে পারবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যে জুরিসডিকশন ওই পর্যন্ত শাস্তি দিতে পারবে।’

জব্দ করা খাবার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আরেকটি সুন্দর জিনিস করা হয়েছে, কোন খাদ্যদ্রব্য যদি জব্দ করা

হয়, সেই খাদ্য যদি পঁচনশীল হয়, সেই খাদ্যদ্রব্য নিলাম ডেকে বিক্রি করে শুধু স্যাম্পল হিসেবে অল্প একটু রাখা যাবে।’

খাদ্যপণ্য যদি পচনশীল নাও হয় এরপরও ৪৫ দিনের মধ্যে নিলাম করে দিতে হবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘টাকাটা কোর্টের কাছে থাকবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি যদি খালাস পান তবে টাকাটা তিনি পেয়ে যাবেন। আর দণ্ড পেলে আদালত যেভাবে আদেশ দিবে সেভাবে হবে।’

এছাড়া সরকারি কোন কর্মসূচির আওতায় নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম বিতরণ এবং সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিক্রি বা বিতরণের জন্য বিএসটিআই নির্ধারিত বাটখারা বা মাপ ব্যবহার না করে হেরফের করলে প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী সাজা দেয়া যাবে অপরাধীদের।

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ০৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

খাদ্যদ্রব্যের অবৈধ মজুদে ৫ বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

খাদ্যদ্রব্যের অবৈধ মজুদে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত আইনের নাম দেয়া হয়েছে ‘খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২২’। এই খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সামরিক শাসনমালের জারি করা অধ্যাদেশগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ‘দ্য ফুড গ্রেইন সাপ্লাই প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯’ এবং ‘ফুড স্পেশাল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ দুটো আইনকে একসঙ্গে করে নতুন আইন করা হচ্ছে।

খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ করা যায়, যাতে সিস্টেমের মধ্যে আনা যায়- সেজন্য আইনটি করা হচ্ছে বলে জানান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা।

অপরাধের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘উৎপাদন সংক্রান্ত অপরাধের মধ্যে রয়েছে খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ক্ষতিকর কিছু মিশিয়ে উৎপাদন করল। নির্দিষ্ট সময়ের বেশি মজুদ করা। সরকারি কর্মসূচির নামাঙ্কিত বা বিতরণকৃত এমন চিহ্ন যুক্ত ছাড়া সরকারি থাদ্য গুদাম থেকে খাদ্যশস্য ভর্তি বস্তা গ্রহণ, স্থানান্তর, মজুদ করা, হাত বদল বা পুনরায় বিক্রি করাও অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।’

খসড়া আইনে কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ যদি এই আইনের অধীনে অপরাধ করে তবে তার সর্বোচ্চ পাঁচ বছর জেল বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। মন্ত্রিসভা বলে দিয়েছে, নিরাপদ খাদ্য আদালতই এগুলো দেখবে, আলাদা কোন আদালত লাগবে না।’

প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টও এই বিচার করতে পারবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যে জুরিসডিকশন ওই পর্যন্ত শাস্তি দিতে পারবে।’

জব্দ করা খাবার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আরেকটি সুন্দর জিনিস করা হয়েছে, কোন খাদ্যদ্রব্য যদি জব্দ করা

হয়, সেই খাদ্য যদি পঁচনশীল হয়, সেই খাদ্যদ্রব্য নিলাম ডেকে বিক্রি করে শুধু স্যাম্পল হিসেবে অল্প একটু রাখা যাবে।’

খাদ্যপণ্য যদি পচনশীল নাও হয় এরপরও ৪৫ দিনের মধ্যে নিলাম করে দিতে হবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘টাকাটা কোর্টের কাছে থাকবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি যদি খালাস পান তবে টাকাটা তিনি পেয়ে যাবেন। আর দণ্ড পেলে আদালত যেভাবে আদেশ দিবে সেভাবে হবে।’

এছাড়া সরকারি কোন কর্মসূচির আওতায় নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম বিতরণ এবং সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিক্রি বা বিতরণের জন্য বিএসটিআই নির্ধারিত বাটখারা বা মাপ ব্যবহার না করে হেরফের করলে প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী সাজা দেয়া যাবে অপরাধীদের।