অনলাইনে একাধিক পেজ খুলে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৫

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০ থেকে ৩০টি ফেইসবুক পেজ খুলে শাড়ি ও থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিত একটি চক্র। এসব বিজ্ঞাপনে বিশাল মূল্যছাড়ের ঘোষণাও করত তারা। মূল্যছাড়ের ঘোষণা দিয়ে বিক্রির জন্য যেসব পণ্যের ছবি পেজে আপলোড দিত মূলত সেসব পণ্য না দিয়ে অন্য পণ্য সরবরাহ করতো। এভাবে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের ঠকিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। হাতিয়ে নিচ্ছিল লাখ লাখ টাকা।

প্রতারণার শিকার এক গ্রাহকের করা জিডির সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে এ চক্রের খোঁজ পায় ঢাকা মহানগার অপরাধ তথ্য ও গোয়েন্দা বিভাগ ডিবি লালবাগ ডিবিশন। উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদের তত্ত্বাবধায়নে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের ৫ সদস্যকে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ চক্রের মূল দলনেতা মো. বাপ্পি হাসান, তার সহযোগী মো. আরিফুল ওরফে হারিসুল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. বিপ্লব শেখ ও নুর মোহাম্মদ।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদ জানান, সম্প্রতি ডিএমপির পল্টন থানায় এক ভুক্তভোগী এ সংক্রান্ত একটি জিডি করেন। জিডির পর থেকে এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে গত রোববার হাজারীবাগ থানার শঙ্কর এলাকার চার তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে এই চক্রের পাঁচ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সবার বাড়ি নড়াইল। চক্রটির আরও একটি গ্রুপ নড়াইলে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ডিসি রাজীব আল মাসুদ আরও জানান, চক্রটি প্রতিদিন ১০০-১৫০টি প্রতারণা পার্সেল পাঠাত। এভাবে চক্রটি মাসে ২০-৩০ লাখ টাকা আয়

করত। গত ৫-৬ বছর ধরে চক্রটি এই প্রতারণা ব্যবসা করে আসছে। চক্রটির সঙ্গে এসএ পরিবহনের লোকজনও জড়িত আছে।

‘চক্রটি গত ৫-৬ বছর ধরে তাদের এই প্রতারণা ব্যবসা চালাচ্ছিল। চক্রটি ফেইসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে আকর্ষণীয় পণ্য বিশেষ করে মেয়েদের পোশাকের চকটকদার বিজ্ঞাপন দিত। স্বাভাবিক মূল্যের অনেক কম মূল্য লিখে তারা এসব পোশাকের বিজ্ঞাপন দিত বলে জানান ডিসি রাজীব।

এরা কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এসএ পরিবহনকে ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় প্রতারণা করেছে। আমরা এসএ পরিবহনের কয়েকজনের নাম পেয়েছি যারা এ প্রতারণার বিষয়টি জানেন। আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি বলেন ডিসি রাজীব।

ডিসি রাজীব আল মাসুদ বলেন, আমরা তাদের ২১টি ফেইসবুক পেজের সন্ধান পেয়েছি, যার মাধ্যমে তারা প্রতারণা করত। ১৭৭টি খারাপ শাড়ি, থ্রি পিস জব্দ করেছি। এসব কাপড় সাধারণত বাসা বাড়িতে ব্যবহারের পর পুরাতন হয়ে গেলে অনেকে বিক্রি করে দেয়, আবার অনেকে মানুষজনকে দান করে দেয়। চক্রটি এসব কাপড় কিনে মানুষজনকে ডেলিভারি দিত ভালো পণ্যের নামে।

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ০৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

অনলাইনে একাধিক পেজ খুলে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৫

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০ থেকে ৩০টি ফেইসবুক পেজ খুলে শাড়ি ও থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিত একটি চক্র। এসব বিজ্ঞাপনে বিশাল মূল্যছাড়ের ঘোষণাও করত তারা। মূল্যছাড়ের ঘোষণা দিয়ে বিক্রির জন্য যেসব পণ্যের ছবি পেজে আপলোড দিত মূলত সেসব পণ্য না দিয়ে অন্য পণ্য সরবরাহ করতো। এভাবে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের ঠকিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। হাতিয়ে নিচ্ছিল লাখ লাখ টাকা।

প্রতারণার শিকার এক গ্রাহকের করা জিডির সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে এ চক্রের খোঁজ পায় ঢাকা মহানগার অপরাধ তথ্য ও গোয়েন্দা বিভাগ ডিবি লালবাগ ডিবিশন। উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদের তত্ত্বাবধায়নে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের ৫ সদস্যকে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ চক্রের মূল দলনেতা মো. বাপ্পি হাসান, তার সহযোগী মো. আরিফুল ওরফে হারিসুল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. বিপ্লব শেখ ও নুর মোহাম্মদ।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদ জানান, সম্প্রতি ডিএমপির পল্টন থানায় এক ভুক্তভোগী এ সংক্রান্ত একটি জিডি করেন। জিডির পর থেকে এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে গত রোববার হাজারীবাগ থানার শঙ্কর এলাকার চার তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে এই চক্রের পাঁচ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সবার বাড়ি নড়াইল। চক্রটির আরও একটি গ্রুপ নড়াইলে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ডিসি রাজীব আল মাসুদ আরও জানান, চক্রটি প্রতিদিন ১০০-১৫০টি প্রতারণা পার্সেল পাঠাত। এভাবে চক্রটি মাসে ২০-৩০ লাখ টাকা আয়

করত। গত ৫-৬ বছর ধরে চক্রটি এই প্রতারণা ব্যবসা করে আসছে। চক্রটির সঙ্গে এসএ পরিবহনের লোকজনও জড়িত আছে।

‘চক্রটি গত ৫-৬ বছর ধরে তাদের এই প্রতারণা ব্যবসা চালাচ্ছিল। চক্রটি ফেইসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে আকর্ষণীয় পণ্য বিশেষ করে মেয়েদের পোশাকের চকটকদার বিজ্ঞাপন দিত। স্বাভাবিক মূল্যের অনেক কম মূল্য লিখে তারা এসব পোশাকের বিজ্ঞাপন দিত বলে জানান ডিসি রাজীব।

এরা কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এসএ পরিবহনকে ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় প্রতারণা করেছে। আমরা এসএ পরিবহনের কয়েকজনের নাম পেয়েছি যারা এ প্রতারণার বিষয়টি জানেন। আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি বলেন ডিসি রাজীব।

ডিসি রাজীব আল মাসুদ বলেন, আমরা তাদের ২১টি ফেইসবুক পেজের সন্ধান পেয়েছি, যার মাধ্যমে তারা প্রতারণা করত। ১৭৭টি খারাপ শাড়ি, থ্রি পিস জব্দ করেছি। এসব কাপড় সাধারণত বাসা বাড়িতে ব্যবহারের পর পুরাতন হয়ে গেলে অনেকে বিক্রি করে দেয়, আবার অনেকে মানুষজনকে দান করে দেয়। চক্রটি এসব কাপড় কিনে মানুষজনকে ডেলিভারি দিত ভালো পণ্যের নামে।