ধনু নদে পানি বাড়ছে, ঝুঁকিতে বাঁধ

পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের ধনু নদের পানি যেন ঠেলছে বাঁধগুলোকে। যে কারণে হাওরের খালিয়াজুরী উপজেলার ৫৫ কিলোমিটার বাঁধের সাত কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের কির্তনখোলা ফাটলের পর ফাটল দিচ্ছে।

গতকাল সকাল থেকে ধনুর পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল থেকে একই বাঁধের চার স্থান ধসে গেছে। এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় হাওরবাসী। জমিতে এখনও কাঁচাই রয়েছে অধিকাংশ ধান। যদিও কৃষিবিভাগ জানাচ্ছে অর্ধেক কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে হাওরের চিত্র ভিন্ন। 

কৃষকরা বলছেন মাত্র ২৫ ভাগ ধান কেটেছেন তারা। তার উপর কাঁচা আধাপাকা। কৃষক মকবুল মোল্লাসহ অনেকেই বলছেন কাঁচার কারণে ধানে ৮/১০ মনের স্থলে ৩/৪ মন পাচ্ছেন। এদিকে বাঁধ মেরামতে গত ২ এপ্রিল থেকেই দিনরাত এক করে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী। ফসল রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা অন্যদিকে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কাঁচা ধান কাটছেন কৃষকরা। এতে কোন ভাবাইে ক্ষতি পুষাতে পারবে না হাওরবাসী। বছরজুড়ে কি খেয়ে বেঁচে থাকবে না থাকবে এমন নানা দুশ্চিন্তায় দিনরাত কাটছে হাওরবাসীর। চলছে এক প্রকার নীরব হাহাকার।

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এফএম মোবারক আলী জানান, হাওরের ধান ৬০ ভাগ কাটা শেষ। যা কৃষকের তথ্যের সঙ্গে মিল নেই। তবে সকালে মদন উপজেলার ফতেপুর তলার হাওরের বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ওই বাঁধের ভেতরের ১২০০ হেক্টর ফসল থাকলেও শতকরা ৫ ভাগ ডুবেছে। কৃষকরা বলছেন কাঁচা ধান ৫ ভাগ কাটতে পারলেও বাকি সব তলিয়ে গেছে।  

কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা যায়, এ বছর জেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮শ’ ২৮ হেক্টর জমিতে। এরেমাঝে হাওরেই আবাদ হয়েছে ৪১ হাজার হেক্টর জমি। 

কির্তনখোলা বাঁধ পরিদর্শনকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান এখন হাওরের ৩৬৫ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধের সবটাই ঝুঁকিপূর্ণ। ধনুসহ সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত গতিতে। বাঁধের সমান সমান পানির লেভেল। বৃষ্টি হলেই উপচে হাওরে ঢুকবে পানি। এছাড়া আমরা আজ ১৬ দিন ধরে বাঁধগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। এখন আর কয়টা দিন পেলে হয়তো সম্পূর্ণ ধান কেটে ফেলতে পারতো কৃষক। ধনুর পানি বাড়ার অবস্থা বিপজ্জনক বলেও জানান তিনি। 

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ০৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

ধনু নদে পানি বাড়ছে, ঝুঁকিতে বাঁধ

প্রতিনিধি, নেত্রকোনা

পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের ধনু নদের পানি যেন ঠেলছে বাঁধগুলোকে। যে কারণে হাওরের খালিয়াজুরী উপজেলার ৫৫ কিলোমিটার বাঁধের সাত কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের কির্তনখোলা ফাটলের পর ফাটল দিচ্ছে।

গতকাল সকাল থেকে ধনুর পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল থেকে একই বাঁধের চার স্থান ধসে গেছে। এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় হাওরবাসী। জমিতে এখনও কাঁচাই রয়েছে অধিকাংশ ধান। যদিও কৃষিবিভাগ জানাচ্ছে অর্ধেক কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে হাওরের চিত্র ভিন্ন। 

কৃষকরা বলছেন মাত্র ২৫ ভাগ ধান কেটেছেন তারা। তার উপর কাঁচা আধাপাকা। কৃষক মকবুল মোল্লাসহ অনেকেই বলছেন কাঁচার কারণে ধানে ৮/১০ মনের স্থলে ৩/৪ মন পাচ্ছেন। এদিকে বাঁধ মেরামতে গত ২ এপ্রিল থেকেই দিনরাত এক করে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী। ফসল রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা অন্যদিকে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কাঁচা ধান কাটছেন কৃষকরা। এতে কোন ভাবাইে ক্ষতি পুষাতে পারবে না হাওরবাসী। বছরজুড়ে কি খেয়ে বেঁচে থাকবে না থাকবে এমন নানা দুশ্চিন্তায় দিনরাত কাটছে হাওরবাসীর। চলছে এক প্রকার নীরব হাহাকার।

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এফএম মোবারক আলী জানান, হাওরের ধান ৬০ ভাগ কাটা শেষ। যা কৃষকের তথ্যের সঙ্গে মিল নেই। তবে সকালে মদন উপজেলার ফতেপুর তলার হাওরের বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ওই বাঁধের ভেতরের ১২০০ হেক্টর ফসল থাকলেও শতকরা ৫ ভাগ ডুবেছে। কৃষকরা বলছেন কাঁচা ধান ৫ ভাগ কাটতে পারলেও বাকি সব তলিয়ে গেছে।  

কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা যায়, এ বছর জেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮শ’ ২৮ হেক্টর জমিতে। এরেমাঝে হাওরেই আবাদ হয়েছে ৪১ হাজার হেক্টর জমি। 

কির্তনখোলা বাঁধ পরিদর্শনকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান এখন হাওরের ৩৬৫ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধের সবটাই ঝুঁকিপূর্ণ। ধনুসহ সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত গতিতে। বাঁধের সমান সমান পানির লেভেল। বৃষ্টি হলেই উপচে হাওরে ঢুকবে পানি। এছাড়া আমরা আজ ১৬ দিন ধরে বাঁধগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। এখন আর কয়টা দিন পেলে হয়তো সম্পূর্ণ ধান কেটে ফেলতে পারতো কৃষক। ধনুর পানি বাড়ার অবস্থা বিপজ্জনক বলেও জানান তিনি।