৫৪টি নদীকে দূষণমুক্ত করতে আইনি নোটিশ

দেশের ৫৪টি নদীকে দূষণমুক্ত করতে একটি সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। গতকাল ডাকযোগে বেলার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস হাসানুল বান্না এই নোটিশ পাঠান।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয় সচিব, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয় সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে অবিলম্বে ৫৪টি নদীকে দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও দূষিত নদীসমূহকে দূষণমুক্ত করতে একটি সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, নদীসমূহের দূষণের উৎস চিহ্নিত করা, দূষণকারীর পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত, দূষণ প্রতিরোধ, দূষণকারীকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিপুরণ আদায় এবং অতি দূষিত ও প্রাণহীন নদীগুলোকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ঘোষণার পাশাপাশি নদীগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনারও দাবি জানানো হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখিত নদীগুলো হলো— বুড়িগঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, মেঘনা, বালু, আড়িয়াল খাঁ, ময়নাকাটা, বিলপদ্ম, কীর্তিনাশা, সুতি, পারুলি, চিলাই, কালিগঙ্গা, পদ্মা, বানার, লৌহজং, বংশী (ঢাকা বিভাগ), যমুনা, করতোয়া, গঙ্গা, আত্রাই, নারোদ, ইছামতি (রাজশাহী বিভাগ), তিস্তা, খড়খড়িয়া (রংপুর বিভাগ), ক্ষীরু (ময়মনসিংহ বিভাগ), কর্ণফুলী, হালদা, বিল ডাকাতিয়া, তিতাস (চট্টগ্রাম বিভাগ), ময়ূর, ভৈরব, রুপসা, মাথাভাঙ্গা, পশুর, কাকশিয়ালী, গড়াই, মধুমতি, কুমার (খুলনা বিভাগ), কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, লোহালিয়া, তেঁতুলিয়া, খাকদোনা, শিববাড়ীয়া (বরিশাল বিভাগ), সুরমা, কুশিয়ারা, সুতাং, সোনাই, কোরাঙ্গী, বরাক ও ধোলাই (সিলেট বিভাগ)।

সরকারি বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা,

ব্যক্তি বিশেষের গবেষণা এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে দূষিত নদীগুলো চিহ্নিত করে নোটিশে যুক্ত করা হয়েছে। এসব গবেষণায় ঢাকা ও আশপাশের ছয়টি যথা : বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদী দূষণের ভয়াবহতা উঠে এসেছে। এছাড়া চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, দেশের উত্তরাঞ্চলের করতোয়া, তিজ্ঞ, আত্রাই, পদ্মা, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কীর্তণখোলা, রূপসা ও লোয়ার মেঘনা নদীসমূহের পানিতে থাকা মাত্রাতিরিক্ত ধাতু মাটির উর্বরতা বিনষ্ট করছে। সেচ কাজে এ পানি ব্যবহারের ফলে খাদ্যের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত ভারি ধাতু মানবদেহে প্রবেশ করে মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এছাড়াও লোয়ার কুমার, ধলেশ্বরী, বালু, সুতি, পারুলি এবং চিলাই নদীতে শিল্প দূষণে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে মর্মে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ০৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

৫৪টি নদীকে দূষণমুক্ত করতে আইনি নোটিশ

নিজস্ব বাতা পরিবেশক

দেশের ৫৪টি নদীকে দূষণমুক্ত করতে একটি সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। গতকাল ডাকযোগে বেলার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস হাসানুল বান্না এই নোটিশ পাঠান।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয় সচিব, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয় সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে অবিলম্বে ৫৪টি নদীকে দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও দূষিত নদীসমূহকে দূষণমুক্ত করতে একটি সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, নদীসমূহের দূষণের উৎস চিহ্নিত করা, দূষণকারীর পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত, দূষণ প্রতিরোধ, দূষণকারীকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিপুরণ আদায় এবং অতি দূষিত ও প্রাণহীন নদীগুলোকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ঘোষণার পাশাপাশি নদীগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনারও দাবি জানানো হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখিত নদীগুলো হলো— বুড়িগঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, মেঘনা, বালু, আড়িয়াল খাঁ, ময়নাকাটা, বিলপদ্ম, কীর্তিনাশা, সুতি, পারুলি, চিলাই, কালিগঙ্গা, পদ্মা, বানার, লৌহজং, বংশী (ঢাকা বিভাগ), যমুনা, করতোয়া, গঙ্গা, আত্রাই, নারোদ, ইছামতি (রাজশাহী বিভাগ), তিস্তা, খড়খড়িয়া (রংপুর বিভাগ), ক্ষীরু (ময়মনসিংহ বিভাগ), কর্ণফুলী, হালদা, বিল ডাকাতিয়া, তিতাস (চট্টগ্রাম বিভাগ), ময়ূর, ভৈরব, রুপসা, মাথাভাঙ্গা, পশুর, কাকশিয়ালী, গড়াই, মধুমতি, কুমার (খুলনা বিভাগ), কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, লোহালিয়া, তেঁতুলিয়া, খাকদোনা, শিববাড়ীয়া (বরিশাল বিভাগ), সুরমা, কুশিয়ারা, সুতাং, সোনাই, কোরাঙ্গী, বরাক ও ধোলাই (সিলেট বিভাগ)।

সরকারি বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা,

ব্যক্তি বিশেষের গবেষণা এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে দূষিত নদীগুলো চিহ্নিত করে নোটিশে যুক্ত করা হয়েছে। এসব গবেষণায় ঢাকা ও আশপাশের ছয়টি যথা : বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদী দূষণের ভয়াবহতা উঠে এসেছে। এছাড়া চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, দেশের উত্তরাঞ্চলের করতোয়া, তিজ্ঞ, আত্রাই, পদ্মা, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কীর্তণখোলা, রূপসা ও লোয়ার মেঘনা নদীসমূহের পানিতে থাকা মাত্রাতিরিক্ত ধাতু মাটির উর্বরতা বিনষ্ট করছে। সেচ কাজে এ পানি ব্যবহারের ফলে খাদ্যের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত ভারি ধাতু মানবদেহে প্রবেশ করে মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এছাড়াও লোয়ার কুমার, ধলেশ্বরী, বালু, সুতি, পারুলি এবং চিলাই নদীতে শিল্প দূষণে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে মর্মে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।