সুদের টাকা শোধে বিক্রি করা নবজাতক ফিরে পেলেন মা

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় সুদের টাকা পরিশোধের জন্য নবজাতক শিশু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে অভিযোগকারী রানী বেগম ও অভিযুক্ত লাকি বেগমের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে শিশুটিকে উদ্ধারসহ ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় রাখা হয়েছে।

শিশুটির মা রানী বেগম পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বাদুরতলী এলাকার হান্নান চৌকিদারের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি ফতুল্লার আলীগঞ্জ পিডব্লিউডি কলোনিতে বাস করেন। স্বামী হান্নান চৌকিদার রাজমিস্ত্রির কাজ করেন এবং দিনমজুরের কাজ করেন রানী।

থানায় দেয়া অভিযোগে তিনি বলেন, বছর দুই পূর্বে তিনি প্রতিবেশী লাকি বেগমের কাছ থেকে চড়া সুদে ৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। গত ২ বছরে ৫ হাজার টাকার বিপরীতে লাকি বেগমকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এতেও সুদের টাকা পরিশোধ না হওয়ায় লাকি বেগমের প্ররোচনায় একদিনের নবজাতক শিশুকে বিক্রি করে দেন আরেক নারীর কাছে। তবে সন্তান বিক্রির টাকাও তিনি পাননি বলে অভিযোগ রানীর। এমনকি সুদ ও আসল মিলিয়ে এখনও ১ লাখ ৩ হাজার বাকি আছে দাবি করে গত ১৪ এপ্রিল মারধরের হুমকি দিয়েছে লাকি বেগম।

রানীর অভিযোগ, এক বছর আগে ভোর পাঁচটার দিকে তার ছেলে সন্তান প্রসব হয়। ওইদিন বিকেলে লাকি বেগমের প্ররোচনায় এবং সুদের টাকার পরিশোধের জন্য ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সন্তানকে বিক্রি দেন। তবে সন্তান বিক্রির টাকার পরিবর্তে লাকি তাকে একটি পুরাতন খাট ও টিভি দিয়েছিল এবং সুদের টাকা কেটে নিয়েছিল। তাকে একটি টাকাও দেয়া হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে লাকি বেগমের দাবি, অভাবের তাড়নায় রানী বেগম স্বেচ্ছায় তার নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করেছে। সুদের টাকা পরিশোধের জন্য এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ অস্বীকার করেন

তিনি। এদিকে প্রতিবেশীরা বলছেন, রানী তার সন্তান বিক্রির টাকা দিয়ে বাসায় নতুন খাট ও টিভি কিনেছিলেন।

লাকি বেগমও পিডব্লিউডি কলোনিতে ভাড়া থাকেন। তার স্বামী হজরত আলী প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং বাবা মো. আজাদ সোহরাওয়ার্দী স্মৃতি মিলনায়তনের পাহারাদার। লাকি বেগমের দাবি, রানী তার কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি, ফলে সুদের প্রশ্নই আসে না। তবে রানীর স্বামী হান্নান বহুদিন আগে টাকা নিয়েছিল আবার পরিশোধও করে দিয়েছে।

রানীর নবজাতক সন্তান বিক্রির বিষয়ে লাকি বেগম বলেন, ‘রানীর স্বামী আরেকটা বিয়ে করছে। রানীর কোন খোঁজ-খবর নেয় না। এক বছর আগে রানীর গর্ভে সন্তান আসার পর রানী অনেকটা হতাশায় ভোগে। অভাবের কথা চিন্তা করে সে নিজের সন্তান বিক্রির কথা আমাকে জানায়।

তখন আমি বলি বাচ্চা যে বিক্রি করবি কোন মানুষ ভাও-টাও করছোস? তখন সে বলে আফা না কোন মানুষ ভাও করি নাই। তয় আমি বাচ্চা বেইচা ফালামু। তখন আমি বলি তোর বাচ্চা বেচবি না-কি করবি হেইডা তোর বুঝ। একদিন ভোর রাইতে ওর বাচ্চা হইবো।

আমি পাশের বাড়ির দাই বেডিরে (রুবিয়া বেগম) ডাক দিয়া আনলাম। বাচ্চা হইলো। তখন রানী বলে, খালা বাচ্চা বেইচ্চা দিমু। পোলার বাপে কইছে, বাচ্চা বিক্রি করে দিতে। তারপর পাশের এক ভাড়াটিয়ার কাছে ২৫ হাজার টাকায় রানী তার বাচ্চা বিক্রি করে দেয়। আমিও রানীর সঙ্গে গিয়েছি। যেদিন বাচ্চা হয়েছে সেদিনই সে বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছে। হাবিল চাচার বউসহ (প্রতিবেশী) অনেকেই বিষয়টি জানে।’

এদিকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাকি বেগম মানুষকে চড়া সুদে টাকা ধার দেন। অনেকেই টাকা পরিশোধ না করতে পারলে মারধরের শিকার হয়েছেন। বাবা ও স্বামী সরকারি কর্মচারী হওয়ায় এলাকায় লাকি বেগমের বেশ প্রভাব রয়েছে। তবে রানীর সন্তান বিক্রির পর সে বাড়িতে নতুন খাট ও টিভি এনেছিল বলেও নিশ্চিত করেন প্রতিবেশীরা। তার স্বামী হান্নান দ্বিতীয় বিয়ে করে বউ নিয়ে পিরোজপুরে থাকে বলেও শুনেছেন প্রতিবেশীরা। রানীর কোন খোঁজ-খবর সে নেয় না।

এদিকে এই ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের হলে গত শনিবার রাতে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার দক্ষিণ পাশা এলাকা থেকে রানীর বিক্রি করে দেয়া শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে ওই এলাকা থেকে আটক করা হয় শিশুটিকে কিনে নেয়া রানু (৪০) নামের এক নারীকে। তিনি দক্ষিণ পাশা এলাকার জাহাঙ্গীর মিয়ার স্ত্রী।

রানু বেগম জানান, তার এক মেয়ে ও প্রতিবন্ধী এক ছেলে আছে। তিনি একটি ছেলে শিশু দত্তক নেবেন বলে আগেই প্রতিবেশীদের জানিয়ে রেখেছিলেন। বছরখানেক আগে সুমা নামে আত্মীয় রানুকে নবজাতক এক শিশুকে তার মা বিক্রি করবে বলে জানায়। পরে তিনি ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে রানীর শিশুটিকে ‘দত্তক’ হিসেবে নিয়েছিলেন। তার নাম রেখেছেন ইউসুফ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রানু বলেন, নিজের সন্তানের মতোই তাকে গত একবছর লালন করেছেন রানু।

এদিকে সুমা নামে ওই নারী জানান, তার বোন ঝর্নার মাধ্যমে নবজাতক শিশু বিক্রির কথা জানতে পারেন। পরে তিনি তার মামি রানুকে বিষয়টি জানালে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। এদিকে ঝর্না জানান, তাকে নবজাতক বিক্রির কথা জানিয়েছে আলীগঞ্জের পিডব্লিউডি কলোনির রুবিনা তাকে ফোন করে জানায়।

রুবিনার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, লাকি বেগম তাকে বাচ্চা বিক্রির কথা জানায়। পরে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাচ্চাটি কিনে নেয় রানু বেগম। লাকি টাকা নেয় এবং বাচ্চাটিকে তার মা নিজেই রানু বেগমের হাতে তুলে দেয়।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে পিডব্লিউডি কলোনি এলাকাতে লাকি বেগমকে পাওয়া না গেলেও তার মা, বাবা ও প্রতিবেশী এক নারীকে (দাই) থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিশু উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

রোববার বিকেলে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরের দক্ষিণপাশা গ্রামে অভিযান চালিয়ে বাচ্চাটিকে উদ্ধারসহ আটক করা হয়েছে রানু বেগমকে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত লাকি বেগম ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পলাতক। তাকেও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ০৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

সুদের টাকা শোধে বিক্রি করা নবজাতক ফিরে পেলেন মা

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় সুদের টাকা পরিশোধের জন্য নবজাতক শিশু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে অভিযোগকারী রানী বেগম ও অভিযুক্ত লাকি বেগমের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে শিশুটিকে উদ্ধারসহ ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় রাখা হয়েছে।

শিশুটির মা রানী বেগম পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বাদুরতলী এলাকার হান্নান চৌকিদারের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি ফতুল্লার আলীগঞ্জ পিডব্লিউডি কলোনিতে বাস করেন। স্বামী হান্নান চৌকিদার রাজমিস্ত্রির কাজ করেন এবং দিনমজুরের কাজ করেন রানী।

থানায় দেয়া অভিযোগে তিনি বলেন, বছর দুই পূর্বে তিনি প্রতিবেশী লাকি বেগমের কাছ থেকে চড়া সুদে ৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। গত ২ বছরে ৫ হাজার টাকার বিপরীতে লাকি বেগমকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এতেও সুদের টাকা পরিশোধ না হওয়ায় লাকি বেগমের প্ররোচনায় একদিনের নবজাতক শিশুকে বিক্রি করে দেন আরেক নারীর কাছে। তবে সন্তান বিক্রির টাকাও তিনি পাননি বলে অভিযোগ রানীর। এমনকি সুদ ও আসল মিলিয়ে এখনও ১ লাখ ৩ হাজার বাকি আছে দাবি করে গত ১৪ এপ্রিল মারধরের হুমকি দিয়েছে লাকি বেগম।

রানীর অভিযোগ, এক বছর আগে ভোর পাঁচটার দিকে তার ছেলে সন্তান প্রসব হয়। ওইদিন বিকেলে লাকি বেগমের প্ররোচনায় এবং সুদের টাকার পরিশোধের জন্য ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সন্তানকে বিক্রি দেন। তবে সন্তান বিক্রির টাকার পরিবর্তে লাকি তাকে একটি পুরাতন খাট ও টিভি দিয়েছিল এবং সুদের টাকা কেটে নিয়েছিল। তাকে একটি টাকাও দেয়া হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে লাকি বেগমের দাবি, অভাবের তাড়নায় রানী বেগম স্বেচ্ছায় তার নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করেছে। সুদের টাকা পরিশোধের জন্য এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ অস্বীকার করেন

তিনি। এদিকে প্রতিবেশীরা বলছেন, রানী তার সন্তান বিক্রির টাকা দিয়ে বাসায় নতুন খাট ও টিভি কিনেছিলেন।

লাকি বেগমও পিডব্লিউডি কলোনিতে ভাড়া থাকেন। তার স্বামী হজরত আলী প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং বাবা মো. আজাদ সোহরাওয়ার্দী স্মৃতি মিলনায়তনের পাহারাদার। লাকি বেগমের দাবি, রানী তার কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি, ফলে সুদের প্রশ্নই আসে না। তবে রানীর স্বামী হান্নান বহুদিন আগে টাকা নিয়েছিল আবার পরিশোধও করে দিয়েছে।

রানীর নবজাতক সন্তান বিক্রির বিষয়ে লাকি বেগম বলেন, ‘রানীর স্বামী আরেকটা বিয়ে করছে। রানীর কোন খোঁজ-খবর নেয় না। এক বছর আগে রানীর গর্ভে সন্তান আসার পর রানী অনেকটা হতাশায় ভোগে। অভাবের কথা চিন্তা করে সে নিজের সন্তান বিক্রির কথা আমাকে জানায়।

তখন আমি বলি বাচ্চা যে বিক্রি করবি কোন মানুষ ভাও-টাও করছোস? তখন সে বলে আফা না কোন মানুষ ভাও করি নাই। তয় আমি বাচ্চা বেইচা ফালামু। তখন আমি বলি তোর বাচ্চা বেচবি না-কি করবি হেইডা তোর বুঝ। একদিন ভোর রাইতে ওর বাচ্চা হইবো।

আমি পাশের বাড়ির দাই বেডিরে (রুবিয়া বেগম) ডাক দিয়া আনলাম। বাচ্চা হইলো। তখন রানী বলে, খালা বাচ্চা বেইচ্চা দিমু। পোলার বাপে কইছে, বাচ্চা বিক্রি করে দিতে। তারপর পাশের এক ভাড়াটিয়ার কাছে ২৫ হাজার টাকায় রানী তার বাচ্চা বিক্রি করে দেয়। আমিও রানীর সঙ্গে গিয়েছি। যেদিন বাচ্চা হয়েছে সেদিনই সে বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছে। হাবিল চাচার বউসহ (প্রতিবেশী) অনেকেই বিষয়টি জানে।’

এদিকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাকি বেগম মানুষকে চড়া সুদে টাকা ধার দেন। অনেকেই টাকা পরিশোধ না করতে পারলে মারধরের শিকার হয়েছেন। বাবা ও স্বামী সরকারি কর্মচারী হওয়ায় এলাকায় লাকি বেগমের বেশ প্রভাব রয়েছে। তবে রানীর সন্তান বিক্রির পর সে বাড়িতে নতুন খাট ও টিভি এনেছিল বলেও নিশ্চিত করেন প্রতিবেশীরা। তার স্বামী হান্নান দ্বিতীয় বিয়ে করে বউ নিয়ে পিরোজপুরে থাকে বলেও শুনেছেন প্রতিবেশীরা। রানীর কোন খোঁজ-খবর সে নেয় না।

এদিকে এই ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের হলে গত শনিবার রাতে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার দক্ষিণ পাশা এলাকা থেকে রানীর বিক্রি করে দেয়া শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে ওই এলাকা থেকে আটক করা হয় শিশুটিকে কিনে নেয়া রানু (৪০) নামের এক নারীকে। তিনি দক্ষিণ পাশা এলাকার জাহাঙ্গীর মিয়ার স্ত্রী।

রানু বেগম জানান, তার এক মেয়ে ও প্রতিবন্ধী এক ছেলে আছে। তিনি একটি ছেলে শিশু দত্তক নেবেন বলে আগেই প্রতিবেশীদের জানিয়ে রেখেছিলেন। বছরখানেক আগে সুমা নামে আত্মীয় রানুকে নবজাতক এক শিশুকে তার মা বিক্রি করবে বলে জানায়। পরে তিনি ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে রানীর শিশুটিকে ‘দত্তক’ হিসেবে নিয়েছিলেন। তার নাম রেখেছেন ইউসুফ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রানু বলেন, নিজের সন্তানের মতোই তাকে গত একবছর লালন করেছেন রানু।

এদিকে সুমা নামে ওই নারী জানান, তার বোন ঝর্নার মাধ্যমে নবজাতক শিশু বিক্রির কথা জানতে পারেন। পরে তিনি তার মামি রানুকে বিষয়টি জানালে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। এদিকে ঝর্না জানান, তাকে নবজাতক বিক্রির কথা জানিয়েছে আলীগঞ্জের পিডব্লিউডি কলোনির রুবিনা তাকে ফোন করে জানায়।

রুবিনার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, লাকি বেগম তাকে বাচ্চা বিক্রির কথা জানায়। পরে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাচ্চাটি কিনে নেয় রানু বেগম। লাকি টাকা নেয় এবং বাচ্চাটিকে তার মা নিজেই রানু বেগমের হাতে তুলে দেয়।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে পিডব্লিউডি কলোনি এলাকাতে লাকি বেগমকে পাওয়া না গেলেও তার মা, বাবা ও প্রতিবেশী এক নারীকে (দাই) থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিশু উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

রোববার বিকেলে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরের দক্ষিণপাশা গ্রামে অভিযান চালিয়ে বাচ্চাটিকে উদ্ধারসহ আটক করা হয়েছে রানু বেগমকে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত লাকি বেগম ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পলাতক। তাকেও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।