রিজেন্টের সাহেদ মেজর পরিচয় দিয়ে ঋণ নেয়, ব্যবহার করে দুটি ভুয়া এনআইডি

রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম নিজেকে মেজর পরিচয় দিয়ে দেড় কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তার দুটি ভুয়া এনআইডি পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সাহেদকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল এসব তথ্য জানিয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, সাহেদ এনআরবি ব্যাংক থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুয়া এনআইডি ব্যবহার করে এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজরের ভুয়া পরিচয় দিয়ে ঋণ নিয়েছেন। সেই ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকে মামলা হয়। সেই মামলার তদন্তের স্বার্থে আমাদের যে

আইও আছেন তিনি জেলগেটে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, দুদকে অভিযোগের প্রাথমিক ফাইন্ডিংস যা পাওয়া যায় এতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পরে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হয়। তদন্ত হওয়ার পরে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হয় এটা যেভাবে আইন সাপোর্ট করে।

সচিব বলেন, আপাতত এখানে যা পাওয়া গেছে সেটি হলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে যে এনআইডি কার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল সেটি ভুয়া। ব্যাংকে যে তথ্য ও কাগজপত্র রয়েছে সেখানে মেজর লেখা আছে সেটি ভুয়া এবং তার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনে যে এনআইডি কার্ড ছিল সেটা তল্লাশি করে দেখা গেছে যে, উনার এই নামে একটি কার্ড লক করা এবং আরেকটি কার্ড ডুপ্লিকেট হিসেবে বাতিল করা হয়েছে। কাজেই প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে যে বিষয়টি জালিয়াতি এবং ভুয়া এনআইডি কার্ড ব্যবহার করেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, আসলে এনআইডি কার্ডটা একটি ইউনিক কার্ড। আমার একটি কার্ড আছে এই নামে, এ নামে আর কেউ থাকবে না। তিনি যে আইডি কার্ডটি এনআরবি ব্যাংকে ব্যবহার করেছেন সেটি ভুয়া। তার দুটি কার্ডের মধ্যে একটি লক করা এবং একটি ডুপ্লিকেট। এর বাইরে আর কোন কার্ড আছে কি-না এটা তদন্তকালীন বের হয়ে আসবে।

তিনি বলেন, যদি বিধিবহির্ভূত কোন কাজ হয়ে থাকে অবশ্যই সেটা দুদক দেখবে। শুধু এনআইডি না বিধিবহির্ভূত কোন কাজ হয়ে থাকলে সেটি দুদক তদন্ত করবে।

এনবিআর ব্যাংক থেকে নথিপত্র সূত্রে দেখা গেছে, মো. সাহেদ কর্মজীবনের পরিচয়ের জায়গায় বর্ণনা দিয়েছেন তিনি ১৯৮৩ সালের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করে ২০০১ সালে মেজর হিসেবে অবসর নেন। ব্যাংকে সরবরাহ করা জাতীয় পরিচয়পত্রের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল সম্পূর্ণ জাল। এনআরবি ব্যাংক থেকে হাসপাতালের নামে ঋণ বাবদ দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২২ জুলাই মামলা করেছিল দুদক। যার তদন্তের দায়িত্ব পালন করছেন উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম। আর ওইসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই সাহেদকে ১৯ এপ্রিল কেরানীগঞ্জের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২ , ০৭ বৈশাখ ১৪২৮ ১৮ রমাদ্বান ১৪৪৩

রিজেন্টের সাহেদ মেজর পরিচয় দিয়ে ঋণ নেয়, ব্যবহার করে দুটি ভুয়া এনআইডি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম নিজেকে মেজর পরিচয় দিয়ে দেড় কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তার দুটি ভুয়া এনআইডি পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সাহেদকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল এসব তথ্য জানিয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, সাহেদ এনআরবি ব্যাংক থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুয়া এনআইডি ব্যবহার করে এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজরের ভুয়া পরিচয় দিয়ে ঋণ নিয়েছেন। সেই ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকে মামলা হয়। সেই মামলার তদন্তের স্বার্থে আমাদের যে

আইও আছেন তিনি জেলগেটে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, দুদকে অভিযোগের প্রাথমিক ফাইন্ডিংস যা পাওয়া যায় এতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পরে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হয়। তদন্ত হওয়ার পরে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হয় এটা যেভাবে আইন সাপোর্ট করে।

সচিব বলেন, আপাতত এখানে যা পাওয়া গেছে সেটি হলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে যে এনআইডি কার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল সেটি ভুয়া। ব্যাংকে যে তথ্য ও কাগজপত্র রয়েছে সেখানে মেজর লেখা আছে সেটি ভুয়া এবং তার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনে যে এনআইডি কার্ড ছিল সেটা তল্লাশি করে দেখা গেছে যে, উনার এই নামে একটি কার্ড লক করা এবং আরেকটি কার্ড ডুপ্লিকেট হিসেবে বাতিল করা হয়েছে। কাজেই প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে যে বিষয়টি জালিয়াতি এবং ভুয়া এনআইডি কার্ড ব্যবহার করেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, আসলে এনআইডি কার্ডটা একটি ইউনিক কার্ড। আমার একটি কার্ড আছে এই নামে, এ নামে আর কেউ থাকবে না। তিনি যে আইডি কার্ডটি এনআরবি ব্যাংকে ব্যবহার করেছেন সেটি ভুয়া। তার দুটি কার্ডের মধ্যে একটি লক করা এবং একটি ডুপ্লিকেট। এর বাইরে আর কোন কার্ড আছে কি-না এটা তদন্তকালীন বের হয়ে আসবে।

তিনি বলেন, যদি বিধিবহির্ভূত কোন কাজ হয়ে থাকে অবশ্যই সেটা দুদক দেখবে। শুধু এনআইডি না বিধিবহির্ভূত কোন কাজ হয়ে থাকলে সেটি দুদক তদন্ত করবে।

এনবিআর ব্যাংক থেকে নথিপত্র সূত্রে দেখা গেছে, মো. সাহেদ কর্মজীবনের পরিচয়ের জায়গায় বর্ণনা দিয়েছেন তিনি ১৯৮৩ সালের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করে ২০০১ সালে মেজর হিসেবে অবসর নেন। ব্যাংকে সরবরাহ করা জাতীয় পরিচয়পত্রের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল সম্পূর্ণ জাল। এনআরবি ব্যাংক থেকে হাসপাতালের নামে ঋণ বাবদ দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২২ জুলাই মামলা করেছিল দুদক। যার তদন্তের দায়িত্ব পালন করছেন উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম। আর ওইসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই সাহেদকে ১৯ এপ্রিল কেরানীগঞ্জের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।