মাদারীপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সিন্ডিকেটের দখলে, ভোগান্তিতে নাগরিকরা

মাদারীপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এখন দলিল লেখক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের দখলে। দলিল লেখক ও অফিস কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি এখানে সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের নিয়মে তৈরি চলছে এই সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদারীপুর শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকার জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের নিচ তলায় সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস। তার পাশেই একটি টিনশেড ঘরে দলিল লেখকদের অফিস। সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে স্থানীয় দলিল লেখকদের অদৃশ্য কমিশন বাণিজ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এখানে দলিল করতে আসা সব সেবা গ্রহীতাকে ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট অতিরিক্ত টাকা গুণতে হয়।

তাছাড়া কোন রকমের ভুল ত্রুটি থাকলে সেই দলিল রেজিস্ট্রি করতে বিশেষ উৎকোচ গ্রহণেরও অভিযোগ রয়েছে। এসব সিন্ডিকেটের কবলে জিম্মি হয়ে পড়েছে মানুষ। দলিল করতে আসা মানুষেরা তাই বাধ্য হয়েই কোন বিকল্প না থাকায় সিন্ডিকেটের চাহিদাকৃত টাকা দিয়ে দলিল সম্পাদন করেন। মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়ন থেকে সাগর সরদার একটি জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এসেছেন। দশ লাখ টাকা মূল্যমানের তার জমিটিতে সরকারের নির্ধারিত সাড়ে ৬ শতাংশ হারে টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার পরও দলিল লেখক ও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সিন্ডিকেটকে ৮০ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে। সিন্ডিকেটের চাহিদা মতো টাকা দেয়ার পরেও তাকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বসে থাকতে হয়েছে। মাদারীপুর শহরের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাকিব হাসান। তিনি তার চাচাতো ভাইয়ের দুই শতাংশ একটি জমির দলিল করতে এসেছে সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। কিন্তু সরকারি খরচ ছাড়াও তাকে দলিল লেখক ও রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের অতিরিক্ত ৩৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

শুধু এই দুই ব্যক্তিই নয়। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার যেকোন ব্যক্তিই মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে এসে সিন্ডিকেটের কবলে পড়েন। মাদারীপুরবাসী এই দালাল সিন্ডিকেটদের কাছে জিম্মি।

সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সেবা গ্রহীতা রাকিব হাসান বকুল বলেন, ‘সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক ও কর্মচারীরা মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে এই অফিসের কোন সেবা পাওয়া যায় না। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়েই তাদের চাহিদা মতো টাকা দিয়ে সেবা নিচ্ছি।

মাদারীপুর বাস-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে আসেন। তিনি বলেন, ‘এই অফিসের কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে।

আমরা চাই, এই অফিসটি হোক দালাল ও দুর্নীতিমুক্ত। এখানে সেবা নিতে এসে যেন আমরা কেউ বিড়ম্বনায় না পড়ি, সরকার যেন সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এখানে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোন কাজ করা যায় না।’

আরও খবর
যানজট নিরসনে শ্রমিকদের ভাগ করে ছুটি দেয়ার নির্দেশনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত
বাঙালি কূটনীতিকরা পাকিস্তানকে পরিত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেন
একনেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
ঈদ সামনে রেখে রাজধানীতে বেড়েছে ছিনতাই, অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য
প্রস্তাবিত গণমাধ্যম আইন স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত করবে সম্পাদক পরিষদ
বিএনপি বরাবরই ধ্বংসস্তূপ থেকে জেগে উঠে : ফখরুল
জবিতে ছয় পদে অবৈধ নিয়োগ, বেতন স্থগিত
পরীমণিকে মারধর, যৌন হয়রানি : নাসির অমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
বিয়ের চাপ দেয়ায় হোটেলে নিয়ে প্রেমিকাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা
বিজেপিবিরোধী জোট গড়ার ডাক মমতার

বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২ , ০৭ বৈশাখ ১৪২৮ ১৮ রমাদ্বান ১৪৪৩

মাদারীপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সিন্ডিকেটের দখলে, ভোগান্তিতে নাগরিকরা

নিজস্বা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এখন দলিল লেখক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের দখলে। দলিল লেখক ও অফিস কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি এখানে সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের নিয়মে তৈরি চলছে এই সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদারীপুর শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকার জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের নিচ তলায় সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস। তার পাশেই একটি টিনশেড ঘরে দলিল লেখকদের অফিস। সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে স্থানীয় দলিল লেখকদের অদৃশ্য কমিশন বাণিজ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এখানে দলিল করতে আসা সব সেবা গ্রহীতাকে ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট অতিরিক্ত টাকা গুণতে হয়।

তাছাড়া কোন রকমের ভুল ত্রুটি থাকলে সেই দলিল রেজিস্ট্রি করতে বিশেষ উৎকোচ গ্রহণেরও অভিযোগ রয়েছে। এসব সিন্ডিকেটের কবলে জিম্মি হয়ে পড়েছে মানুষ। দলিল করতে আসা মানুষেরা তাই বাধ্য হয়েই কোন বিকল্প না থাকায় সিন্ডিকেটের চাহিদাকৃত টাকা দিয়ে দলিল সম্পাদন করেন। মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়ন থেকে সাগর সরদার একটি জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এসেছেন। দশ লাখ টাকা মূল্যমানের তার জমিটিতে সরকারের নির্ধারিত সাড়ে ৬ শতাংশ হারে টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার পরও দলিল লেখক ও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সিন্ডিকেটকে ৮০ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে। সিন্ডিকেটের চাহিদা মতো টাকা দেয়ার পরেও তাকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বসে থাকতে হয়েছে। মাদারীপুর শহরের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাকিব হাসান। তিনি তার চাচাতো ভাইয়ের দুই শতাংশ একটি জমির দলিল করতে এসেছে সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। কিন্তু সরকারি খরচ ছাড়াও তাকে দলিল লেখক ও রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের অতিরিক্ত ৩৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

শুধু এই দুই ব্যক্তিই নয়। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার যেকোন ব্যক্তিই মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে এসে সিন্ডিকেটের কবলে পড়েন। মাদারীপুরবাসী এই দালাল সিন্ডিকেটদের কাছে জিম্মি।

সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সেবা গ্রহীতা রাকিব হাসান বকুল বলেন, ‘সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক ও কর্মচারীরা মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে এই অফিসের কোন সেবা পাওয়া যায় না। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়েই তাদের চাহিদা মতো টাকা দিয়ে সেবা নিচ্ছি।

মাদারীপুর বাস-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে আসেন। তিনি বলেন, ‘এই অফিসের কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে।

আমরা চাই, এই অফিসটি হোক দালাল ও দুর্নীতিমুক্ত। এখানে সেবা নিতে এসে যেন আমরা কেউ বিড়ম্বনায় না পড়ি, সরকার যেন সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এখানে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোন কাজ করা যায় না।’