ফের বিজেপি তথা মোদিবিরোধী জোটগড়ার ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ভারতে সেই ডাকের সাড়াও মিলেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর থেকেই তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দোপাধ্যায় বিরোধী জোট তৈরির প্রক্রিয়াও পুরোদমে শুরু করে দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনার পরে মমতা ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হন। এই পরিস্থিতিতে গত ১৯ মার্চ দেশের সমস্ত অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের ও দেশের বিজেপিবিরোধী ছোট-বড় আঞ্চলিক দলগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে একজোট হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা। মমতার সেই ডাকে সাড়া
দিলেন বিজেপির এককালের জোটসঙ্গী শিবসেনা। চলতি মাসের শেষের দিকে যেকোন সময় মুম্বাইয়ে ওই বিজেপিবিরোধী জোটের বৈঠকটি হতে পারে, গত সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন শিবসেনা সংসদ সদস্য সঞ্জয় রাউত। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সঞ্জয় রাউত জানান, বিরোধী জোট নিয়ে সম্মেলন করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চিঠি দিয়েছিলেন। তারপরেই আমরা এই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। এ ব্যাপারে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বেশ কয়েকদফা আলোচনার পর বৈঠকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চলতি মাসের শেষের দিকে অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ওই বৈঠকটি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়।
তবে এই বৈঠকের খবরে গেরুয়া শিবিরকে যে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত, দু’দিন আগে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যের উপ-নির্বাচনের ফল দেখা যায় বেশির ভাগ কেন্দ্রেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তারপরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গোষ্ঠী হিংসা, রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটে। সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লেখেন বিরোধী শিবিরের ১০ জন নেতা-নেত্রী। তালিকায় ছিলেন কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী, যা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে রাজনৈতিক চর্চা ঘণীভূত হচ্ছে।
মমতার ডাকে ও শিবসেনার আহ্বানে বিজেপিবিরোধী জোটের সায় দিলেও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার বলেছেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপিবিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। তাই তিনি এবার নিজে উদ্যোগী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্য আঞ্চলিক দলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে। তিনি তাদের বোঝাবেন, বিজেপিকে হারাতে কেন দরকার হবে কংগ্রেসকে। তার কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা হতাশ হলেও এটাই হচ্ছে দেশের মানুষের দাবি। কেননা কংগ্রেস এখন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। শারদ পাওয়ার চান, কংগ্রেসের নেতৃত্বে সাবির্কভাবে বিজেপিবিরোধী জোট গঠন হোক। তিনি নিজে এ ব্যাপারে কথা বলবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্য আঞ্চলিক দলের নেতাদের সঙ্গে। তিনি তাদের বলবেন, ‘কংগ্রেস ছাড়া তৃতীয় মোর্চা গড়লে কোন লাভ হবে না।’ এই সত্যটি অস্বীকরার করার কোন উপায় নেই। শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন সবাই-ই কংগ্রেসের পক্ষে সওয়াল করেছেন।
এদিকে আবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। তারা কংগ্রেসের সঙ্গে জাতীয় জোট গঠন না করার সিদ্ধান্তের পরে শরদ পাওয়ারের এই বিবৃতি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২ , ০৭ বৈশাখ ১৪২৮ ১৮ রমাদ্বান ১৪৪৩
দীপক মুখার্জী, কলকাতা
ফের বিজেপি তথা মোদিবিরোধী জোটগড়ার ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ভারতে সেই ডাকের সাড়াও মিলেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর থেকেই তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দোপাধ্যায় বিরোধী জোট তৈরির প্রক্রিয়াও পুরোদমে শুরু করে দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনার পরে মমতা ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হন। এই পরিস্থিতিতে গত ১৯ মার্চ দেশের সমস্ত অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের ও দেশের বিজেপিবিরোধী ছোট-বড় আঞ্চলিক দলগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে একজোট হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা। মমতার সেই ডাকে সাড়া
দিলেন বিজেপির এককালের জোটসঙ্গী শিবসেনা। চলতি মাসের শেষের দিকে যেকোন সময় মুম্বাইয়ে ওই বিজেপিবিরোধী জোটের বৈঠকটি হতে পারে, গত সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন শিবসেনা সংসদ সদস্য সঞ্জয় রাউত। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সঞ্জয় রাউত জানান, বিরোধী জোট নিয়ে সম্মেলন করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চিঠি দিয়েছিলেন। তারপরেই আমরা এই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। এ ব্যাপারে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বেশ কয়েকদফা আলোচনার পর বৈঠকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চলতি মাসের শেষের দিকে অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ওই বৈঠকটি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়।
তবে এই বৈঠকের খবরে গেরুয়া শিবিরকে যে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত, দু’দিন আগে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যের উপ-নির্বাচনের ফল দেখা যায় বেশির ভাগ কেন্দ্রেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তারপরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গোষ্ঠী হিংসা, রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটে। সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লেখেন বিরোধী শিবিরের ১০ জন নেতা-নেত্রী। তালিকায় ছিলেন কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী, যা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে রাজনৈতিক চর্চা ঘণীভূত হচ্ছে।
মমতার ডাকে ও শিবসেনার আহ্বানে বিজেপিবিরোধী জোটের সায় দিলেও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার বলেছেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপিবিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। তাই তিনি এবার নিজে উদ্যোগী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্য আঞ্চলিক দলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে। তিনি তাদের বোঝাবেন, বিজেপিকে হারাতে কেন দরকার হবে কংগ্রেসকে। তার কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা হতাশ হলেও এটাই হচ্ছে দেশের মানুষের দাবি। কেননা কংগ্রেস এখন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। শারদ পাওয়ার চান, কংগ্রেসের নেতৃত্বে সাবির্কভাবে বিজেপিবিরোধী জোট গঠন হোক। তিনি নিজে এ ব্যাপারে কথা বলবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্য আঞ্চলিক দলের নেতাদের সঙ্গে। তিনি তাদের বলবেন, ‘কংগ্রেস ছাড়া তৃতীয় মোর্চা গড়লে কোন লাভ হবে না।’ এই সত্যটি অস্বীকরার করার কোন উপায় নেই। শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন সবাই-ই কংগ্রেসের পক্ষে সওয়াল করেছেন।
এদিকে আবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। তারা কংগ্রেসের সঙ্গে জাতীয় জোট গঠন না করার সিদ্ধান্তের পরে শরদ পাওয়ারের এই বিবৃতি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।