তোমাকে ছোঁয়া যদি সহজ হতো
রওশন রুবী
তোমাকে ছোঁয়া যদি সহজ হতো
আমি কি তোমাকে ছুঁয়ে দিতাম?
যাবতীয় কর্ম-শেষে ছন্নছাড়া দশটি অঙুল
উর্ধমুখী রাখি ঠিকই, তাই বলে কি ছুঁয়ে দিতাম?
অপলক চেয়ে থেকে ভেঙে যেতাম,
মেঘও হতাম
বৃষ্টি দিতাম
বসন্ত আর ফুল-রেণুদের প্রসন্নতা ঠিকই দিতাম,
ঘাসের কাছে রাখা আমার জন্মকালের গন্ধটুকু
লুকিয়ে রাখা মায়ের ছোঁয়া কাঠের বাক্স এবং
অনেক গল্প দিতাম।
তোমাকে ছোঁয়ার আগে তোমার কক্ষপথে ঘুরতে যেতাম,
তোমার হরফগুলো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফলিয়ে নিতাম,
তোমাকে ছোঁয়া যদি সহজ হতো
আমি কি তোমাকে ছুঁয়ে দিতাম?
পায়ের নিজস্ব দাবি আছে আমি কি সে ভুলেই যেতাম?
জসীম উদ্দীন রোড
ইকবাল পারভেজ
প্রজাপতি ছাড়া আজ আর কোনো পাখি নেই
ধাতব পাখির ঝাঁক উঠে নামে
আমাদের কাকের শহরে
আজ তারাও গেছে
নাসিরুদ্দীন হোজ্জার দেশে
একটি প্রজাপতি আজ আমাদের পাখি
আর দেয়ালে দেয়ালে অসংখ্য টিকটিকি
ভেঙ্গে গেছে শৃঙ্খল গার্বেজ চলাচল
যে পাখিরা ওঠা নামা করে
তাদের সুরক্ষার জন্য
এয়ার সুটার চোখ রাখে আকাশে
এমতাবস্থায় আমাদের জসীমউদ্দীন রোড
পাখিশূন্য হয়ে পড়ে
একটি প্রজাপতি আজ আমাদের পাখি
আর দেয়ালে দেয়ালে লেপ্টে আছে
অসংখ্য টিকটিকি
না থাকা ঐশ্বর্য
নীনা হাসেল
রোদের বজ্রনাদ গোপন রেখেছি
পাঁজরের হাড়ের গভীরে
শব্দের মৃদু তাল পড়ছে হৃদয়ে
কিছু না থাকা ঐশ্বর্য দিতে পারি
দিতে পারি বৃষ্টিস্নাত পান্না সবুজ
অনাবিষ্কৃত বনভূমি
কণ্ঠে আঙুল রেখে শুনছিলে
হৃদয়ের কম্পন স্টেথোস্কোপের নিচে
মেঘে ঢাকা তিমির তারার ঝিকিমিকি
চলন্ত গাড়ির সবুজ নিয়ন ড্যাশে
নিশ্বাসের তালের সঙ্গত
নৈশ সংগীতে
বৃষ্টিভেজা চুল আর জলে ভারি রেইন কোট
আর কিছু না থাকা ঐশ্বর্য।
ছোঁয়া
রিকি দাশ
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি সব আবার আসবে বলে,
সাজিয়ে নিই ক্যালেন্ডারের পাতা।
বাহারি সাজসজ্জায় মাতিয়ে রাখি,
রঙ-বেরঙের যতসব আগমনী খেয়াল।
আ¤্রমুকুলের গন্ধমাখা সকাল থেকে,
কাঠঠোকরার দুপুর; তুলসীতলার প্রদীপে
খুজঁতে থাকি বাঁচিয়ে রাখার আশীষ!
দিনপঞ্জির নিউজপ্রিন্টে ফুটে ওঠে
আমাদের আগামীর বয়স,
ঘরে ঘরে খিলখিল করে কাঠগোলাপ সুতো।
সুঁচের ফোঁড়ে ফোঁড়ে নতুনের অস্পৃশ্য বাঁধনকে
বেঁধে রাখার এ যেন আকুল মিনতি!
পুরোনো মায়ার স্নিগ্ধ সময় কাঁটা,
প্রাণের মেঘমায়ার ছোঁয়ায়,
এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পহেলা বৈশাখ।
শিরোনামহীন কবিতা
সুপ্তি জামান
সুপ্রভাত বলে চোখের পাতায় কেউ চুমু খায়নি
সকাল থমকে দাঁড়ায়নি অভিমানে
অভিমান টভিমান আজকাল অনুভবে আসে না
বিষাদ ওঁৎ পেতে থাকে যেমন ক্ষিপ্র চিতা
সুযোগ পেলেই ঘাড় মটকে দেয় হরিণীর
সকালবেলায় বিছানায় গড়াগড়ি করার অভ্যেস নেই আমার,
টুপ করে সকাল নামে, আমিও চোখ খুলি তড়িঘড়ি
একটি অনাড়ম্বর ফিকে দিনের শুরু
দেখি মশারির ভেতর কয়েকটি মশা পড়ে আছে
পাঁড় মাতালের মতো চিৎপটাং
চুমুর লাল দাগ
বিন্দু বিন্দু লাল লেগে আছে শরীরে
অনুভবের গভীর অতলে আকাক্সক্ষা গুমরে মরে
চোরা স্রোত বয়ে যায় শিরায় শিরায়
পলিমাটির মতো নরম শরীর
নরম হৃদয়ের মানুষের কী প্রয়োজন?
শুধুই প্রশ্রয় চায়, লতার মতো।
বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২ , ০৮ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমাদ্বান ১৪৪৩
তোমাকে ছোঁয়া যদি সহজ হতো
রওশন রুবী
তোমাকে ছোঁয়া যদি সহজ হতো
আমি কি তোমাকে ছুঁয়ে দিতাম?
যাবতীয় কর্ম-শেষে ছন্নছাড়া দশটি অঙুল
উর্ধমুখী রাখি ঠিকই, তাই বলে কি ছুঁয়ে দিতাম?
অপলক চেয়ে থেকে ভেঙে যেতাম,
মেঘও হতাম
বৃষ্টি দিতাম
বসন্ত আর ফুল-রেণুদের প্রসন্নতা ঠিকই দিতাম,
ঘাসের কাছে রাখা আমার জন্মকালের গন্ধটুকু
লুকিয়ে রাখা মায়ের ছোঁয়া কাঠের বাক্স এবং
অনেক গল্প দিতাম।
তোমাকে ছোঁয়ার আগে তোমার কক্ষপথে ঘুরতে যেতাম,
তোমার হরফগুলো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফলিয়ে নিতাম,
তোমাকে ছোঁয়া যদি সহজ হতো
আমি কি তোমাকে ছুঁয়ে দিতাম?
পায়ের নিজস্ব দাবি আছে আমি কি সে ভুলেই যেতাম?
জসীম উদ্দীন রোড
ইকবাল পারভেজ
প্রজাপতি ছাড়া আজ আর কোনো পাখি নেই
ধাতব পাখির ঝাঁক উঠে নামে
আমাদের কাকের শহরে
আজ তারাও গেছে
নাসিরুদ্দীন হোজ্জার দেশে
একটি প্রজাপতি আজ আমাদের পাখি
আর দেয়ালে দেয়ালে অসংখ্য টিকটিকি
ভেঙ্গে গেছে শৃঙ্খল গার্বেজ চলাচল
যে পাখিরা ওঠা নামা করে
তাদের সুরক্ষার জন্য
এয়ার সুটার চোখ রাখে আকাশে
এমতাবস্থায় আমাদের জসীমউদ্দীন রোড
পাখিশূন্য হয়ে পড়ে
একটি প্রজাপতি আজ আমাদের পাখি
আর দেয়ালে দেয়ালে লেপ্টে আছে
অসংখ্য টিকটিকি
না থাকা ঐশ্বর্য
নীনা হাসেল
রোদের বজ্রনাদ গোপন রেখেছি
পাঁজরের হাড়ের গভীরে
শব্দের মৃদু তাল পড়ছে হৃদয়ে
কিছু না থাকা ঐশ্বর্য দিতে পারি
দিতে পারি বৃষ্টিস্নাত পান্না সবুজ
অনাবিষ্কৃত বনভূমি
কণ্ঠে আঙুল রেখে শুনছিলে
হৃদয়ের কম্পন স্টেথোস্কোপের নিচে
মেঘে ঢাকা তিমির তারার ঝিকিমিকি
চলন্ত গাড়ির সবুজ নিয়ন ড্যাশে
নিশ্বাসের তালের সঙ্গত
নৈশ সংগীতে
বৃষ্টিভেজা চুল আর জলে ভারি রেইন কোট
আর কিছু না থাকা ঐশ্বর্য।
ছোঁয়া
রিকি দাশ
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি সব আবার আসবে বলে,
সাজিয়ে নিই ক্যালেন্ডারের পাতা।
বাহারি সাজসজ্জায় মাতিয়ে রাখি,
রঙ-বেরঙের যতসব আগমনী খেয়াল।
আ¤্রমুকুলের গন্ধমাখা সকাল থেকে,
কাঠঠোকরার দুপুর; তুলসীতলার প্রদীপে
খুজঁতে থাকি বাঁচিয়ে রাখার আশীষ!
দিনপঞ্জির নিউজপ্রিন্টে ফুটে ওঠে
আমাদের আগামীর বয়স,
ঘরে ঘরে খিলখিল করে কাঠগোলাপ সুতো।
সুঁচের ফোঁড়ে ফোঁড়ে নতুনের অস্পৃশ্য বাঁধনকে
বেঁধে রাখার এ যেন আকুল মিনতি!
পুরোনো মায়ার স্নিগ্ধ সময় কাঁটা,
প্রাণের মেঘমায়ার ছোঁয়ায়,
এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পহেলা বৈশাখ।
শিরোনামহীন কবিতা
সুপ্তি জামান
সুপ্রভাত বলে চোখের পাতায় কেউ চুমু খায়নি
সকাল থমকে দাঁড়ায়নি অভিমানে
অভিমান টভিমান আজকাল অনুভবে আসে না
বিষাদ ওঁৎ পেতে থাকে যেমন ক্ষিপ্র চিতা
সুযোগ পেলেই ঘাড় মটকে দেয় হরিণীর
সকালবেলায় বিছানায় গড়াগড়ি করার অভ্যেস নেই আমার,
টুপ করে সকাল নামে, আমিও চোখ খুলি তড়িঘড়ি
একটি অনাড়ম্বর ফিকে দিনের শুরু
দেখি মশারির ভেতর কয়েকটি মশা পড়ে আছে
পাঁড় মাতালের মতো চিৎপটাং
চুমুর লাল দাগ
বিন্দু বিন্দু লাল লেগে আছে শরীরে
অনুভবের গভীর অতলে আকাক্সক্ষা গুমরে মরে
চোরা স্রোত বয়ে যায় শিরায় শিরায়
পলিমাটির মতো নরম শরীর
নরম হৃদয়ের মানুষের কী প্রয়োজন?
শুধুই প্রশ্রয় চায়, লতার মতো।