নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার : অর্থমন্ত্রী

বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকার বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানিয়েছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই পদক্ষেপকে সাময়িক উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমদানিও স্বাভাবিক ধারায় ফিরবে।

গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আমদানি নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমদানি নিয়ন্ত্রণে সব সময় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমদানি নিয়ন্ত্রণ তো করতেই হবে। এটা তো ওপেন নয়। কিছু কিছু কনজ্যুমার্স আইটেম- যেগুলো আমাদের লাগবেই, সেগুলো তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করব না। কিন্তু লাক্সারি আইটেম আমরা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি এবং করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব জিনিসের দাম সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের মার্চ মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে বিশ্বে গমের দাম বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। গরুর মাংসের ৩৫ শতাংশ, মুরগির মাংসের ৫৫ শতাংশ, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ, চিনি ১১ শতাংশ, চা ১৩ শতাংশ, টিএসপি সার ৬৫ শতাংশ এবং ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে ২৩৪ শতাংশ। আমাদের এগুলো উচ্চ দামে কিনতে হয়। এগুলোকে সমন্বিত প্রয়াস অব্যাহত রেখে কাজটি করতে হয়।’

ডিজিটাল কানেকটিভিটি প্রকল্প সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ প্রজেক্টটি আমাদের বিবেচনায় ভালো প্রকল্প। সেখানে অনেক জনবল কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। গণমাধ্যমে এসেছে করোনার মধ্যে দেশে ১ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছে ই-কমার্সে। একই খাতে চলতি বছরে আরও ৫ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। আমরা যে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দিই সেক্ষেত্রে দু’টি জিনিস বিবেচনা করি। মৌলিক দু’টি এলাকা বিবেচনা করি, রেভিনিউ জেনারেশন ফর গভর্নমেন্ট এবং কর্মসংস্থান। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’

বাজেটের আকার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা সবকিছু জানিয়ে করেছি। জনগণ যাতে আরও জানতে পারে সেরকম তথ্যাদি বিবেচনায় রেখেই বাজেট সাজিয়েছি। ৯ জুন বাজেট পেশ করা হবে।’

করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা আছে, আগামী বাজেটে এটা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আইটেম ওয়াইজ আলোচনা আরও করতে হবে। এনবিআর আছে, তাদের সঙ্গে বসতে হবে। নিজস্ব মন্ত্রণালয়ের বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বাজেট তৈরি করবো। আরও কিছুদিন সময় লাগবে। আমাদের দেশের জনগণের যাতে ভোগান্তি না বাড়ে এবং তাদের ওপর বোঝা যেন বেশি না বাড়ে সেজন্য আমরা কাজ করছি। আশা করি, সেগুলো কম-বেশি আমরা অবশ্যই বিবেচনায় নেবো।’

বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে- আরও নিয়ন্ত্রণের চিন্তা-ভাবনা আছে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক রকম পণ্য আমদানি আছে। একটা আমদানি হচ্ছে প্রজেক্টের সঙ্গে সরাসরি রিলেটেড, সেটা আমরা এলাউ করি। আবার যদি আমদানি ক্ষেত্রে কনজ্যুমার আইটেম না হয়, রেভিনিউ বেনিফিশিয়ারি না হয় সেসব ক্ষেত্রে বাদ দেয়ার চেষ্টা করি। আমাদের এক্সপোর্ট অনেক বেড়েছে। তবে এক্সপোর্ট বাড়লেও ইম্পোর্টকে ওভারটেক করতে পারবে না, ইম্পোর্ট বেশি থাকবে। আগে ইম্পোর্ট হয়নি এখন ইম্পোর্ট হচ্ছে। যেগুলোর দাম বেড়েছে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এ কাজটি করতে হয়।’

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২ , ০৮ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমাদ্বান ১৪৪৩

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকার বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানিয়েছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই পদক্ষেপকে সাময়িক উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমদানিও স্বাভাবিক ধারায় ফিরবে।

গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আমদানি নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমদানি নিয়ন্ত্রণে সব সময় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমদানি নিয়ন্ত্রণ তো করতেই হবে। এটা তো ওপেন নয়। কিছু কিছু কনজ্যুমার্স আইটেম- যেগুলো আমাদের লাগবেই, সেগুলো তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করব না। কিন্তু লাক্সারি আইটেম আমরা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি এবং করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব জিনিসের দাম সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের মার্চ মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে বিশ্বে গমের দাম বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। গরুর মাংসের ৩৫ শতাংশ, মুরগির মাংসের ৫৫ শতাংশ, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ, চিনি ১১ শতাংশ, চা ১৩ শতাংশ, টিএসপি সার ৬৫ শতাংশ এবং ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে ২৩৪ শতাংশ। আমাদের এগুলো উচ্চ দামে কিনতে হয়। এগুলোকে সমন্বিত প্রয়াস অব্যাহত রেখে কাজটি করতে হয়।’

ডিজিটাল কানেকটিভিটি প্রকল্প সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ প্রজেক্টটি আমাদের বিবেচনায় ভালো প্রকল্প। সেখানে অনেক জনবল কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। গণমাধ্যমে এসেছে করোনার মধ্যে দেশে ১ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছে ই-কমার্সে। একই খাতে চলতি বছরে আরও ৫ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। আমরা যে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দিই সেক্ষেত্রে দু’টি জিনিস বিবেচনা করি। মৌলিক দু’টি এলাকা বিবেচনা করি, রেভিনিউ জেনারেশন ফর গভর্নমেন্ট এবং কর্মসংস্থান। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’

বাজেটের আকার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা সবকিছু জানিয়ে করেছি। জনগণ যাতে আরও জানতে পারে সেরকম তথ্যাদি বিবেচনায় রেখেই বাজেট সাজিয়েছি। ৯ জুন বাজেট পেশ করা হবে।’

করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা আছে, আগামী বাজেটে এটা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আইটেম ওয়াইজ আলোচনা আরও করতে হবে। এনবিআর আছে, তাদের সঙ্গে বসতে হবে। নিজস্ব মন্ত্রণালয়ের বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বাজেট তৈরি করবো। আরও কিছুদিন সময় লাগবে। আমাদের দেশের জনগণের যাতে ভোগান্তি না বাড়ে এবং তাদের ওপর বোঝা যেন বেশি না বাড়ে সেজন্য আমরা কাজ করছি। আশা করি, সেগুলো কম-বেশি আমরা অবশ্যই বিবেচনায় নেবো।’

বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে- আরও নিয়ন্ত্রণের চিন্তা-ভাবনা আছে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক রকম পণ্য আমদানি আছে। একটা আমদানি হচ্ছে প্রজেক্টের সঙ্গে সরাসরি রিলেটেড, সেটা আমরা এলাউ করি। আবার যদি আমদানি ক্ষেত্রে কনজ্যুমার আইটেম না হয়, রেভিনিউ বেনিফিশিয়ারি না হয় সেসব ক্ষেত্রে বাদ দেয়ার চেষ্টা করি। আমাদের এক্সপোর্ট অনেক বেড়েছে। তবে এক্সপোর্ট বাড়লেও ইম্পোর্টকে ওভারটেক করতে পারবে না, ইম্পোর্ট বেশি থাকবে। আগে ইম্পোর্ট হয়নি এখন ইম্পোর্ট হচ্ছে। যেগুলোর দাম বেড়েছে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এ কাজটি করতে হয়।’