গণমাধ্যমকর্মীদের আইন পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ চলছে : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া সংসদীয় কমিটিতে গেছে এবং সংসদীয় কমিটি সেটি পরিবর্তন, পরিমার্জন এমনকি ফেরত পাঠানো সবই করতে পারে, সেই ক্ষমতা কমিটির আছে। সেই সঙ্গে আমি জানিয়েছি এটি পরিবর্তন-পরিমার্জন করার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। সুতরাং সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে সবাই শুধু সেখানে অসঙ্গতির কথাগুলো বলছে, ভালো দিকগুলো নিয়ে কেউ আলোচনা করছে না।

গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নবনির্বাচিত পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে ডিআরইউতে সব মত এবং পথের সাংবাদিকদের একসঙ্গে কাজ করার প্রশংসা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।

প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা শেষে সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘আওয়ামী লীগ দেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু ও পাকিস্তানের পক্ষের দল এবং জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে দলের (বিএনপি) জন্ম অগণতান্ত্রিকভাবে, সেই দলের নেতা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন মানুষ হাসে। সুতরাং তাদের গণতন্ত্রের কথা বলার অধিকার কতটুকু আছে সেটিই প্রশ্ন।

তিনি বলেন, ‘যাদের জন্মটা অগণতান্ত্রিকভাবে, ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে রাজনীতির কাকদের সমন্বয় ঘটিয়ে যে দলের জন্ম, সেই দলের নেতা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে মানুষ হাসে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজ­রুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল যে সরকার গঠিত হয়েছিল, জিয়াউর রহমান সেই সরকারের ৪০০ টাকা বেতনের চাকুরে ছিলেন এবং নিয়মিত বেতন গ্রহণ করেছেন।’

‘বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণা

জিয়াউর রহমান পাঠ করেছেন, জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা বহুজন পাঠ করেছেন। ২৬ মার্চ প্রথম ঘোষণা পাঠ করেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান, জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। স্কুলের দপ্তরিকে যারা হেডমাস্টার বানাতে চায় তাদের নিয়ে আমার কিছু বলার নাই। দপ্তরি ঘণ্টা বাজায় কিন্তু স্কুল কখন ছুটি হবে সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে হেডমাস্টার। সুতরাং দপ্তরিকে হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করে কোন লাভ নেই।’

তিনি বলেন, ‘শুধু তারাই নন, ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম শহরে যখন বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানি বাহিনীর তা-ব-হত্যাকান্ড চলছে, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ অফিসের দপ্তরি নূরুল হক নিজের জীবন বাজি রেখে মাইকিং করে সমস্ত চট্টগ্রাম শহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে শুনিয়েছেন। অন্যদিকে জিয়াউর রহমান চার দেয়ালের মধ্যে প্রহরী পরিবেষ্টিত অবস্থায় ২৭ মার্চ ঘোষণা পাঠ করেছেন। স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার জন্য যদি বাহবা দিতে হয় তাহলে নূরুল হক অনেক বেশি বাহবা পাওয়ার যোগ্য। নূরুল হকের ভূমিকা অনেক বেশি সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

‘আর ক’দিন আগে পাকিস্তানের গণতন্ত্রের উদাহরণ দিয়ে মির্জা ফখরুল সাহেবরা বেকায়দায় পড়ে গেছেন, তাদের পাকিস্তানপ্রীতি ক’দিন আগে উন্মোচিত হয়েছে, সে কারণে তারা উল্টো কথা বলছেন’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই উচ্চ পর্যায়ের নেতা বলেন, ‘তাদের আন্দোলন কোন ঈদের পরে? আমরা গত ১২-১৩ বছর ধরে ঈদের পরে, রোজার পরে, বার্ষিক পরীক্ষার পরে, শীতের পরে, বর্ষার পরে তাদের আন্দোলন হবে এরকম শুনে আসছি। তাই কোন ঈদের পরে সেটি একটু খোলসা করলে ভালো হয়।’

ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু তার বক্তব্যে সাংবাদিকতার উৎকর্ষের জন্য প্রতিবছর জাতীয় বাজেটে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির জন্য ৩ থেকে ৫ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের দাবি উত্থাপন করেন। সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব ডিআরইউয়ের কর্মকা- তুলে ধরেন। তথ্যমন্ত্রী তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বিধি অনুসারে বিবেচনায় নেয়ার আশ্বাস দেন।

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২ , ০৮ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমাদ্বান ১৪৪৩

গণমাধ্যমকর্মীদের আইন পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ চলছে : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া সংসদীয় কমিটিতে গেছে এবং সংসদীয় কমিটি সেটি পরিবর্তন, পরিমার্জন এমনকি ফেরত পাঠানো সবই করতে পারে, সেই ক্ষমতা কমিটির আছে। সেই সঙ্গে আমি জানিয়েছি এটি পরিবর্তন-পরিমার্জন করার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। সুতরাং সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে সবাই শুধু সেখানে অসঙ্গতির কথাগুলো বলছে, ভালো দিকগুলো নিয়ে কেউ আলোচনা করছে না।

গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নবনির্বাচিত পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে ডিআরইউতে সব মত এবং পথের সাংবাদিকদের একসঙ্গে কাজ করার প্রশংসা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।

প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা শেষে সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘আওয়ামী লীগ দেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু ও পাকিস্তানের পক্ষের দল এবং জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে দলের (বিএনপি) জন্ম অগণতান্ত্রিকভাবে, সেই দলের নেতা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন মানুষ হাসে। সুতরাং তাদের গণতন্ত্রের কথা বলার অধিকার কতটুকু আছে সেটিই প্রশ্ন।

তিনি বলেন, ‘যাদের জন্মটা অগণতান্ত্রিকভাবে, ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে রাজনীতির কাকদের সমন্বয় ঘটিয়ে যে দলের জন্ম, সেই দলের নেতা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে মানুষ হাসে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজ­রুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল যে সরকার গঠিত হয়েছিল, জিয়াউর রহমান সেই সরকারের ৪০০ টাকা বেতনের চাকুরে ছিলেন এবং নিয়মিত বেতন গ্রহণ করেছেন।’

‘বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণা

জিয়াউর রহমান পাঠ করেছেন, জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা বহুজন পাঠ করেছেন। ২৬ মার্চ প্রথম ঘোষণা পাঠ করেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান, জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। স্কুলের দপ্তরিকে যারা হেডমাস্টার বানাতে চায় তাদের নিয়ে আমার কিছু বলার নাই। দপ্তরি ঘণ্টা বাজায় কিন্তু স্কুল কখন ছুটি হবে সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে হেডমাস্টার। সুতরাং দপ্তরিকে হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করে কোন লাভ নেই।’

তিনি বলেন, ‘শুধু তারাই নন, ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম শহরে যখন বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানি বাহিনীর তা-ব-হত্যাকান্ড চলছে, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ অফিসের দপ্তরি নূরুল হক নিজের জীবন বাজি রেখে মাইকিং করে সমস্ত চট্টগ্রাম শহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে শুনিয়েছেন। অন্যদিকে জিয়াউর রহমান চার দেয়ালের মধ্যে প্রহরী পরিবেষ্টিত অবস্থায় ২৭ মার্চ ঘোষণা পাঠ করেছেন। স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার জন্য যদি বাহবা দিতে হয় তাহলে নূরুল হক অনেক বেশি বাহবা পাওয়ার যোগ্য। নূরুল হকের ভূমিকা অনেক বেশি সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

‘আর ক’দিন আগে পাকিস্তানের গণতন্ত্রের উদাহরণ দিয়ে মির্জা ফখরুল সাহেবরা বেকায়দায় পড়ে গেছেন, তাদের পাকিস্তানপ্রীতি ক’দিন আগে উন্মোচিত হয়েছে, সে কারণে তারা উল্টো কথা বলছেন’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই উচ্চ পর্যায়ের নেতা বলেন, ‘তাদের আন্দোলন কোন ঈদের পরে? আমরা গত ১২-১৩ বছর ধরে ঈদের পরে, রোজার পরে, বার্ষিক পরীক্ষার পরে, শীতের পরে, বর্ষার পরে তাদের আন্দোলন হবে এরকম শুনে আসছি। তাই কোন ঈদের পরে সেটি একটু খোলসা করলে ভালো হয়।’

ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু তার বক্তব্যে সাংবাদিকতার উৎকর্ষের জন্য প্রতিবছর জাতীয় বাজেটে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির জন্য ৩ থেকে ৫ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের দাবি উত্থাপন করেন। সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব ডিআরইউয়ের কর্মকা- তুলে ধরেন। তথ্যমন্ত্রী তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বিধি অনুসারে বিবেচনায় নেয়ার আশ্বাস দেন।