হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ঢাকাসহ ৫ জেলার ডিসিকে তলব

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডেকেছে হাইকোর্ট। আগামী ১৭ মে তাদের সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। ইটভাটা মালিকদের পক্ষে ছিলেন অনিক আর হক।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসে আদালতের আদেশ সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৭ মে আদালতে হাজির হয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি ও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এবং গাজীপুর জেলার ডিসিকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘এই পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ ও বায়ুদূষণ রোধে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেননি পাঁচ জেলার ডিসি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে আদালত অবৈধ ইটভাটার তালিকা চেয়েছিলেন। পরে ৩১৮টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে জমা দেয়া হয়। সেগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা নির্দেশনা চেয়েছিলাম। এরপর জেলা প্রশাসকরা প্রতিবেদন দিয়ে জানায়, তারা অনেক কিছু বন্ধ করেছেন। কিন্তু সাভারের এক সাংবাদিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, অনেকগুলো ইটভাটা চালু রয়েছে, যেগুলো জেলা প্রশাসকরা বলেছিলেন বন্ধ করেছেন।’

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি আমরা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ৫ জেলা প্রশাসককে হাইকোর্টে হাজির হয়ে ১৭ মে এ বিষয়ে ব্যখ্যা দিতে বলেছেন।

ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) রিট করে। ওই জনস্বার্থের রিট মামলায় গত ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি ৯ দফা নির্দেশনা জারি করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

ওইসব নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদক্ষেপ নেয়া শুরু হলে বায়ুদুষণ কিছুটা কমতে থাকে, কিন্তু বর্তমানে ঢাকা আবার সর্বোচ্চ বায়ুদূষণের শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে এইচআরপিবির পক্ষে এক সম্পূরক আবেদন দাখিল করে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নির্দেশনার আবেদন জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২ , ০৮ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমাদ্বান ১৪৪৩

হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ঢাকাসহ ৫ জেলার ডিসিকে তলব

আদালত বার্তা পরিবেশক

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডেকেছে হাইকোর্ট। আগামী ১৭ মে তাদের সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। ইটভাটা মালিকদের পক্ষে ছিলেন অনিক আর হক।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসে আদালতের আদেশ সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৭ মে আদালতে হাজির হয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি ও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এবং গাজীপুর জেলার ডিসিকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘এই পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ ও বায়ুদূষণ রোধে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেননি পাঁচ জেলার ডিসি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে আদালত অবৈধ ইটভাটার তালিকা চেয়েছিলেন। পরে ৩১৮টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে জমা দেয়া হয়। সেগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা নির্দেশনা চেয়েছিলাম। এরপর জেলা প্রশাসকরা প্রতিবেদন দিয়ে জানায়, তারা অনেক কিছু বন্ধ করেছেন। কিন্তু সাভারের এক সাংবাদিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, অনেকগুলো ইটভাটা চালু রয়েছে, যেগুলো জেলা প্রশাসকরা বলেছিলেন বন্ধ করেছেন।’

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি আমরা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ৫ জেলা প্রশাসককে হাইকোর্টে হাজির হয়ে ১৭ মে এ বিষয়ে ব্যখ্যা দিতে বলেছেন।

ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) রিট করে। ওই জনস্বার্থের রিট মামলায় গত ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি ৯ দফা নির্দেশনা জারি করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

ওইসব নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদক্ষেপ নেয়া শুরু হলে বায়ুদুষণ কিছুটা কমতে থাকে, কিন্তু বর্তমানে ঢাকা আবার সর্বোচ্চ বায়ুদূষণের শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে এইচআরপিবির পক্ষে এক সম্পূরক আবেদন দাখিল করে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নির্দেশনার আবেদন জানানো হয়।