দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের বিকল্প নেই: অর্থমন্ত্রী

দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের বিকল্প নেই বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হচ্ছে বলে জানান তিনি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জিটিসিএল ভবন মিলনায়তনে গতকাল মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি বা এম আর এ ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু দারিদ্র বিমোচন করছে তা নয়, পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কাজ করছে। আপনারা দেশের আইকনিক ব্যক্তি, জ্ঞানী মানুষ। সুন্দর কথা বলে মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারেন। তাই আমি অনুরোধ করছি, যাদের নিয়ে আপনারা কাজ করেন (ঋণগ্রহীতা) তাদেরকে স্বপ্ন দেখান, যাতে তারা ভালো কাজ করতে উৎসাহিত হয়। সুন্দর জীবন গড়তে পারে। সবাইকে আত্মপ্রত্যয়ী হতে হবে। মানুষের মাঝে যে শক্তি ঘুমিয়ে আছে তাকে জাগ্রত করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, এই জাগ্রত করার শক্তি আপনাদের আছে।’

এম আর এ ভবন করার জন্য ২০১৬ সালে প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এত বছর পরও প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় অবাক হন অর্থমন্ত্রী। এখন থেকে প্রকল্পটির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আক্তার। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ।

রাজধানীর আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি ভবন। ১৬তলা এই ভবনের নির্মাণে ব্যয় হবে ৫৮কোটি ২৩ লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব সলীম উল্লাহ বলেন, ‘প্রতিদিন শ্রম বাজারে নতুন নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। তাদের কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। সেজন্য উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণ একটি নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।’

মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি নির্বাহী পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘বর্তমানে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি প্রায় ২১ হাজার শাখার মাধ্যমে দেশের সাড়ে তিন কোটি মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণের আওতায় আনা হয়েছে। বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। ঋণ আদায়ের হার শতকরা ৯৮ ভাগ। ঋণগ্রহীতার ৯১ শতাংশ নারী।’

দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান ফসিউল্লাহ বলেন, ‘প্রতিদিন এ খাতে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। ঋণগ্রহীতাদের সঞ্চয়ের পরিমাণ মাসে ৫০ কোটি টাকা। ঋণ কার্যক্রম প্রতিদিন সম্প্রসারণ হচ্ছে। করোনার মধ্যেও আমরা অনেক মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের ছেলেমেয়েদের জন্য বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাবৃত্তি চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বছরে ৬ কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে।’

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০২২ , ০৯ বৈশাখ ১৪২৮ ২০ রমাদ্বান ১৪৪৩

দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের বিকল্প নেই: অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের বিকল্প নেই বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হচ্ছে বলে জানান তিনি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জিটিসিএল ভবন মিলনায়তনে গতকাল মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি বা এম আর এ ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু দারিদ্র বিমোচন করছে তা নয়, পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কাজ করছে। আপনারা দেশের আইকনিক ব্যক্তি, জ্ঞানী মানুষ। সুন্দর কথা বলে মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারেন। তাই আমি অনুরোধ করছি, যাদের নিয়ে আপনারা কাজ করেন (ঋণগ্রহীতা) তাদেরকে স্বপ্ন দেখান, যাতে তারা ভালো কাজ করতে উৎসাহিত হয়। সুন্দর জীবন গড়তে পারে। সবাইকে আত্মপ্রত্যয়ী হতে হবে। মানুষের মাঝে যে শক্তি ঘুমিয়ে আছে তাকে জাগ্রত করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, এই জাগ্রত করার শক্তি আপনাদের আছে।’

এম আর এ ভবন করার জন্য ২০১৬ সালে প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এত বছর পরও প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় অবাক হন অর্থমন্ত্রী। এখন থেকে প্রকল্পটির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আক্তার। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ।

রাজধানীর আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি ভবন। ১৬তলা এই ভবনের নির্মাণে ব্যয় হবে ৫৮কোটি ২৩ লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব সলীম উল্লাহ বলেন, ‘প্রতিদিন শ্রম বাজারে নতুন নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। তাদের কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। সেজন্য উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণ একটি নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।’

মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি নির্বাহী পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘বর্তমানে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি প্রায় ২১ হাজার শাখার মাধ্যমে দেশের সাড়ে তিন কোটি মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণের আওতায় আনা হয়েছে। বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। ঋণ আদায়ের হার শতকরা ৯৮ ভাগ। ঋণগ্রহীতার ৯১ শতাংশ নারী।’

দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান ফসিউল্লাহ বলেন, ‘প্রতিদিন এ খাতে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। ঋণগ্রহীতাদের সঞ্চয়ের পরিমাণ মাসে ৫০ কোটি টাকা। ঋণ কার্যক্রম প্রতিদিন সম্প্রসারণ হচ্ছে। করোনার মধ্যেও আমরা অনেক মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের ছেলেমেয়েদের জন্য বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাবৃত্তি চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বছরে ৬ কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে।’