হামলা-মামলায় দিশেহারা নিহত দিনমজুরের পরিবার : ৪ মাসেও মূল আসামী অধরা

মাদারীপুরের শিবচরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে এক পা কেটে নিয়ে দিনমজুর দাদন চোকদার হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের বিরুদ্ধে যেন মামলার জাল বিছিয়েছে আসামি পক্ষের লোকজন। নিহতের পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে পরপর ৪টি মামলা। মূলত হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেতেই নিহতের পরিবার ও স্বজনদের বিরুদ্ধে আসামি পক্ষের লোকজন মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে নিহতের স্বজনরা দাবি করেন। এদিকে হত্যাকান্ডের প্রায় ৪ মাস হলেও পুলিশ হত্যা মামলার মাত্র ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। মূল আসামি এখনও রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে পুলিশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি নিহত দাদনের কেটে নেয়া পা।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর শিবচর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব শ্যামাইল গ্রামের দাদন চোকদার শিবচর বাজার থেকে অটোতে বাড়ি ফিরছিল। একই গ্রামের সেলিম শেখের বাড়ির সামনে আসলে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে সেলিম শেখসহ ১০-১৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দাদন চোকদারের শরীর থেকে বাম পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে গুরুতর আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে শিবচর ও পরে ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরদিন ২৪ নভেম্বর নিহতের ভাই পান্নু চোকদার বাদী হয়ে ২৮ জনকে আসামি করে শিবচর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যাকান্ডের প্রায় দুই সপ্তাহ পর গত ৮ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার কাপ্তান বাজার থেকে এজাহারভুক্ত আসামি আরমান শেখকে শিবচর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলা হাজতে প্রেরণ করে। এর মধ্যে মামলা হস্তান্তর হয় সিআইডিতে। গত ২৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে দাদন হত্যা মামলার আরেক আসামি মিরাজুল শেখকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে। গত ৮ মার্চ হত্যা মামলার আসামি পটু ফকির ও কামাল সরদার মাদারীপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালতের নির্দেশে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। গত ৪ এপ্রিল এজাহারভুক্ত আসামি সূর্য্য শেখ, সেলিম শেখ, মোহসিন মুন্সি, রাকিব শেখ ও খোকন শেখসহ ৫ জন মাদারীপুর আদালতে আত্মসমর্থন করলে আদালতের নির্দেশে তাদেরও জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যা মামলার মোট ৯ আসামি জেলহাজতে থাকলেও মূল আসামি নজরুল শেখসহ বাকি আসামিরা এখনো রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদিকে হত্যার প্রায় ৫ মাস হলেও পুলিশ এখনো উদ্ধার করতেও পারেনি নিহত দাদনের কেটে নেয়া পা। এদিকে হত্যা মামলা থেকে নিজেদের বাঁচাতে হত্যা মামলার আসামিরা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। হত্যাকান্ডের প্রায় পনের দিন পর ৭ ডিসেম্বর দাদন হত্যা মামলার আসামি ফয়জল ফকির পটুর স্ত্রী হেনু বেগম বাদী হয়ে নিহত দাদনের ছোট ভাই হত্যা মামলার বাদী পান্নু চোকদার, সাক্ষী আবু তালেব আকন, মোহাম্মদ বেপারী, খালেক কাজীসহ নিকট আত্মীয় ৩৫ জনকে আসামি করে মাদারীপুর আদালতে ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের একটি মামলা দায়ের করে। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি দাদন হত্যা মামলার ১নং আসামি নজরুল শেখের চাচা মো. আবুল শেখ বাদী হয়ে দাদন হত্যা মামলার সাক্ষী আবু তালেব আকন, মোহাম্মদ বেপারীসহ নিকট আত্মীয় ১০ জনের নামে মাদারীপুর আদালতে ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের আরেকটি মামলা দায়ের করে। গত ১৯ জানুয়ারি দাদন হত্যা মামলার ১নং আসামি নজরুল শেখের চাচি রসনা বেগম বাদী হয়ে দাদন হত্যা মামলার বাদী নিহত দাদনের ছোট ভাই পান্নু চোকদার, বাদীর ছেলে বিপ্লব চোকদার, সাক্ষী আবু তালেব আকন, মোহাম্মদ বেপারী, খালেক কাজীসহ নিকট আত্মীয় ৩৫ জনকে আসামি করে মাদারীপুর আদালতে আরও একটি ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের মামলা দায়ের করে। এছাড়াও ২০ ফেব্রুয়ারি দাদন হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে আসামিপক্ষ। ফলে পরপর ৩টি ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের মামলাসহ ৪টি মামলা দায়েরের পর দাদন হত্যা মামলার বাদী, সাক্ষীসহ নিহত দাদনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা গ্রেপ্তারের ভয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

হত্যা মামলার আসামিরা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় নিহত দাদনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের মামলা তুলে নিতে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের হুমকি।

দাদন হত্যা মামলার সাক্ষী মোহাম্মদ বেপারী বলেন, হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে আসামিরা আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। মামলা তুলে নিতে আমাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় আমরা খুব আতঙ্কে আছি। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করি তারা যেন দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে।

নিহত দাদনের ছোট ভাই হত্যা মামলার বাদী পান্নু চোকদার বলেন, আমার ভাইকে ওরা নৃশংসভাবে হত্যা করল। আবার আমাদের বিরুদ্ধেই একের পর এক মিথ্যা মামলা দিলো। এখন মামলা মাথায় নিয়ে আমরাই পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মামলা তুলে নিতে ওরা আমাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আর এতদিনেও পুলিশ আমার ভাইয়ের কেটে নেয়া পা উদ্ধার করতে পারেনি। আর আমার ভাইয়ের মূল হত্যাকারীরা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না।

নিহত দাদনের স্ত্রী বলেন, ওরা আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে। আমি আমার তিনটি মেয়ে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছি। আমার স্বামীর হত্যাকারীরা মামলা থেকে বাঁচতে আমার দেবরসহ আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে ৩-৪টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। মামলা তুলে নিতে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে। আমি সরকারের কাছে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তারকৃত আরমানের মা রশনা বেগম বলেন, ঘটনার দিন রাস্তায় হই হুল্লোরের আওয়াজ পেয়ে আমার ছেলে গোসল করে ভেজা কাপড়েই রাস্তায় গিয়েছিল। কোন মারামারিতে ছিল না। তবুও আমার ছেলেকে ওরা হত্যা মামলার আসামি করেছে। আবার ঘটনার পরে ওরা কয়েক দফায় আমাদের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট করেছে। তাই ওদের বিরুদ্ধে আমিও মামলা দিয়েছি।

মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মো. আনিসুর রহমান বলেন, দাদন চোকদার হত্যাকান্ড আমাদের কাছে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড মনে হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকজন আসামিকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে মামলাটি সিআইডির হাতে রয়েছে। এই হত্যাকান্ডের পরবর্তীতে আসামিদের বাড়িতে যেন কোন হামলার ঘটনা না ঘটে সেজন্য দীর্ঘদিন আমাদের পুলিশ বাহিনী এলাকায় পাহারায় ছিল। তারপরও হত্যা মামলার বাদীদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সেগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০২২ , ০৯ বৈশাখ ১৪২৮ ২০ রমাদ্বান ১৪৪৩

হামলা-মামলায় দিশেহারা নিহত দিনমজুরের পরিবার : ৪ মাসেও মূল আসামী অধরা

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)

মাদারীপুরের শিবচরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে এক পা কেটে নিয়ে দিনমজুর দাদন চোকদার হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের বিরুদ্ধে যেন মামলার জাল বিছিয়েছে আসামি পক্ষের লোকজন। নিহতের পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে পরপর ৪টি মামলা। মূলত হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেতেই নিহতের পরিবার ও স্বজনদের বিরুদ্ধে আসামি পক্ষের লোকজন মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে নিহতের স্বজনরা দাবি করেন। এদিকে হত্যাকান্ডের প্রায় ৪ মাস হলেও পুলিশ হত্যা মামলার মাত্র ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। মূল আসামি এখনও রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে পুলিশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি নিহত দাদনের কেটে নেয়া পা।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর শিবচর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব শ্যামাইল গ্রামের দাদন চোকদার শিবচর বাজার থেকে অটোতে বাড়ি ফিরছিল। একই গ্রামের সেলিম শেখের বাড়ির সামনে আসলে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে সেলিম শেখসহ ১০-১৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দাদন চোকদারের শরীর থেকে বাম পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে গুরুতর আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে শিবচর ও পরে ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরদিন ২৪ নভেম্বর নিহতের ভাই পান্নু চোকদার বাদী হয়ে ২৮ জনকে আসামি করে শিবচর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যাকান্ডের প্রায় দুই সপ্তাহ পর গত ৮ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার কাপ্তান বাজার থেকে এজাহারভুক্ত আসামি আরমান শেখকে শিবচর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলা হাজতে প্রেরণ করে। এর মধ্যে মামলা হস্তান্তর হয় সিআইডিতে। গত ২৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে দাদন হত্যা মামলার আরেক আসামি মিরাজুল শেখকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে। গত ৮ মার্চ হত্যা মামলার আসামি পটু ফকির ও কামাল সরদার মাদারীপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালতের নির্দেশে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। গত ৪ এপ্রিল এজাহারভুক্ত আসামি সূর্য্য শেখ, সেলিম শেখ, মোহসিন মুন্সি, রাকিব শেখ ও খোকন শেখসহ ৫ জন মাদারীপুর আদালতে আত্মসমর্থন করলে আদালতের নির্দেশে তাদেরও জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যা মামলার মোট ৯ আসামি জেলহাজতে থাকলেও মূল আসামি নজরুল শেখসহ বাকি আসামিরা এখনো রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদিকে হত্যার প্রায় ৫ মাস হলেও পুলিশ এখনো উদ্ধার করতেও পারেনি নিহত দাদনের কেটে নেয়া পা। এদিকে হত্যা মামলা থেকে নিজেদের বাঁচাতে হত্যা মামলার আসামিরা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। হত্যাকান্ডের প্রায় পনের দিন পর ৭ ডিসেম্বর দাদন হত্যা মামলার আসামি ফয়জল ফকির পটুর স্ত্রী হেনু বেগম বাদী হয়ে নিহত দাদনের ছোট ভাই হত্যা মামলার বাদী পান্নু চোকদার, সাক্ষী আবু তালেব আকন, মোহাম্মদ বেপারী, খালেক কাজীসহ নিকট আত্মীয় ৩৫ জনকে আসামি করে মাদারীপুর আদালতে ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের একটি মামলা দায়ের করে। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি দাদন হত্যা মামলার ১নং আসামি নজরুল শেখের চাচা মো. আবুল শেখ বাদী হয়ে দাদন হত্যা মামলার সাক্ষী আবু তালেব আকন, মোহাম্মদ বেপারীসহ নিকট আত্মীয় ১০ জনের নামে মাদারীপুর আদালতে ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের আরেকটি মামলা দায়ের করে। গত ১৯ জানুয়ারি দাদন হত্যা মামলার ১নং আসামি নজরুল শেখের চাচি রসনা বেগম বাদী হয়ে দাদন হত্যা মামলার বাদী নিহত দাদনের ছোট ভাই পান্নু চোকদার, বাদীর ছেলে বিপ্লব চোকদার, সাক্ষী আবু তালেব আকন, মোহাম্মদ বেপারী, খালেক কাজীসহ নিকট আত্মীয় ৩৫ জনকে আসামি করে মাদারীপুর আদালতে আরও একটি ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের মামলা দায়ের করে। এছাড়াও ২০ ফেব্রুয়ারি দাদন হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে আসামিপক্ষ। ফলে পরপর ৩টি ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের মামলাসহ ৪টি মামলা দায়েরের পর দাদন হত্যা মামলার বাদী, সাক্ষীসহ নিহত দাদনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা গ্রেপ্তারের ভয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

হত্যা মামলার আসামিরা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় নিহত দাদনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের মামলা তুলে নিতে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের হুমকি।

দাদন হত্যা মামলার সাক্ষী মোহাম্মদ বেপারী বলেন, হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে আসামিরা আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। মামলা তুলে নিতে আমাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় আমরা খুব আতঙ্কে আছি। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করি তারা যেন দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে।

নিহত দাদনের ছোট ভাই হত্যা মামলার বাদী পান্নু চোকদার বলেন, আমার ভাইকে ওরা নৃশংসভাবে হত্যা করল। আবার আমাদের বিরুদ্ধেই একের পর এক মিথ্যা মামলা দিলো। এখন মামলা মাথায় নিয়ে আমরাই পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মামলা তুলে নিতে ওরা আমাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আর এতদিনেও পুলিশ আমার ভাইয়ের কেটে নেয়া পা উদ্ধার করতে পারেনি। আর আমার ভাইয়ের মূল হত্যাকারীরা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না।

নিহত দাদনের স্ত্রী বলেন, ওরা আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে। আমি আমার তিনটি মেয়ে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছি। আমার স্বামীর হত্যাকারীরা মামলা থেকে বাঁচতে আমার দেবরসহ আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে ৩-৪টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। মামলা তুলে নিতে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে। আমি সরকারের কাছে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তারকৃত আরমানের মা রশনা বেগম বলেন, ঘটনার দিন রাস্তায় হই হুল্লোরের আওয়াজ পেয়ে আমার ছেলে গোসল করে ভেজা কাপড়েই রাস্তায় গিয়েছিল। কোন মারামারিতে ছিল না। তবুও আমার ছেলেকে ওরা হত্যা মামলার আসামি করেছে। আবার ঘটনার পরে ওরা কয়েক দফায় আমাদের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট করেছে। তাই ওদের বিরুদ্ধে আমিও মামলা দিয়েছি।

মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মো. আনিসুর রহমান বলেন, দাদন চোকদার হত্যাকান্ড আমাদের কাছে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড মনে হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকজন আসামিকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে মামলাটি সিআইডির হাতে রয়েছে। এই হত্যাকান্ডের পরবর্তীতে আসামিদের বাড়িতে যেন কোন হামলার ঘটনা না ঘটে সেজন্য দীর্ঘদিন আমাদের পুলিশ বাহিনী এলাকায় পাহারায় ছিল। তারপরও হত্যা মামলার বাদীদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সেগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।