জরাজীর্ণ ঘরে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস বৃদ্ধের

‘আসমানিরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।‘ কবি জসীমউদদীনের বিখ্যাত সেই কবিতার আসমানির বাস্তব প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার মোস্তাফিজুর রহমান (৬৩)। তিনি উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পেস্কারপাড়ার মৃত বদিউর রহমানের ছেলে। অভাবের সংসারে স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে তার বসবাস।

সরেজমিন দেখা গেছে, মোস্তাফিজুর রহমান ঘরের উঠোনে বসে আছেন। তবে ঘরটিকে ঘর বললে ভুলই হবে। বরং বলা চলে টুকরো টিনের স্তূপ। বিদ্যুৎহীন ঘরটির অবস্থা খুবই নাজুক। বর্ষায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ভেসে যায় বিছানা। বেড়ার টিনগুলো ভাঙা। খুঁটিগুলোও নড়বড়ে। যেকোনো সময় ঘরটি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে পারে। আর তাতে জীবননাশেরও আশঙ্কা রয়েছে। বাড়ির ছাউনির ফুটো ঢাকার জন্য পলিথিন দেওয়া হয়েছে। ভাঙা টিনের বেড়ার চারদিকেও রয়েছে পলিথিন। মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বড় মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। অন্য তিনজন যথাক্রমে ৫ম, ৪র্থ ও ৩য় শ্রেণিতে পড়ে। একসময় বিস্কুট কারখানায় কাজ করে সংসার চালিয়েছেন মোস্তাফিজ। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে এখন বেকার। আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীর সহযোগিতায় সংসার ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চলছে। আত্মসম্মানের কারণে কারো কাছে হাত পাততে পারেন না। ম মোস্তাফিজ বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের ভেতরে পানি গড়িয়ে পড়ে। টাকাপয়সা চাই না, থাকার জন্য শুধু একটা ঘর যদি পেতাম।

স্থানীয় মিছবাহ উদ্দিন রাজিব জানান, মোস্তাফিজুর রহমানের মতো অসহায় মানুষ সমাজে খুব কমই আছে। তার সহযোগিতায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব জিতু জানান, লোহাগাড়ায় ‘জমি আছে, ঘর নেই’ এই প্রকল্পটির মাধ্যমে বেশ কিছু অসহায় ও গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় ঘর করে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় উদ্যোগে মোস্তাফিজুর রহমানের ঘর সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০২২ , ০৯ বৈশাখ ১৪২৮ ২০ রমাদ্বান ১৪৪৩

জরাজীর্ণ ঘরে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস বৃদ্ধের

প্রতিনিধি, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

image

‘আসমানিরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।‘ কবি জসীমউদদীনের বিখ্যাত সেই কবিতার আসমানির বাস্তব প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার মোস্তাফিজুর রহমান (৬৩)। তিনি উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পেস্কারপাড়ার মৃত বদিউর রহমানের ছেলে। অভাবের সংসারে স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে তার বসবাস।

সরেজমিন দেখা গেছে, মোস্তাফিজুর রহমান ঘরের উঠোনে বসে আছেন। তবে ঘরটিকে ঘর বললে ভুলই হবে। বরং বলা চলে টুকরো টিনের স্তূপ। বিদ্যুৎহীন ঘরটির অবস্থা খুবই নাজুক। বর্ষায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ভেসে যায় বিছানা। বেড়ার টিনগুলো ভাঙা। খুঁটিগুলোও নড়বড়ে। যেকোনো সময় ঘরটি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে পারে। আর তাতে জীবননাশেরও আশঙ্কা রয়েছে। বাড়ির ছাউনির ফুটো ঢাকার জন্য পলিথিন দেওয়া হয়েছে। ভাঙা টিনের বেড়ার চারদিকেও রয়েছে পলিথিন। মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বড় মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। অন্য তিনজন যথাক্রমে ৫ম, ৪র্থ ও ৩য় শ্রেণিতে পড়ে। একসময় বিস্কুট কারখানায় কাজ করে সংসার চালিয়েছেন মোস্তাফিজ। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে এখন বেকার। আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীর সহযোগিতায় সংসার ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চলছে। আত্মসম্মানের কারণে কারো কাছে হাত পাততে পারেন না। ম মোস্তাফিজ বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের ভেতরে পানি গড়িয়ে পড়ে। টাকাপয়সা চাই না, থাকার জন্য শুধু একটা ঘর যদি পেতাম।

স্থানীয় মিছবাহ উদ্দিন রাজিব জানান, মোস্তাফিজুর রহমানের মতো অসহায় মানুষ সমাজে খুব কমই আছে। তার সহযোগিতায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব জিতু জানান, লোহাগাড়ায় ‘জমি আছে, ঘর নেই’ এই প্রকল্পটির মাধ্যমে বেশ কিছু অসহায় ও গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় ঘর করে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় উদ্যোগে মোস্তাফিজুর রহমানের ঘর সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।