সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আজ শুরু

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা আজ শুরু হচ্ছে। তিন ধাপে ৬১ জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) এই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। ২২ এপ্রিল প্রথম ধাপে ২২ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৪ জেলার সব এবং ৮ জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

২০ মে দ্বিতীয় ধাপে ৩০ জেলায় পরীক্ষা নেয়া হবে। এর মধ্যে ৮ জেলার সব এবং ২২ জেলার আংশিক পরীক্ষা হবে। তৃতীয় ধাপে ৩১ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ জুন। এর মধ্যে ১৭ জেলার সব এবং ১৪টি জেলার আংশিক পরীক্ষা হবে। তিনটি ধাপের পরীক্ষাই শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০’ উপলক্ষে গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

নিয়োগ পরীক্ষা ‘শতভাগ স্বচ্ছ’ হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জুনের মধ্যে নিয়োগ দিয়ে দেব।’

সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা মহামাররি কারণে এই পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি।

ইতোমধ্যে অবসরজনিত কারণে ১০ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এতে বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্যপদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদনকারীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন। তিন ধাপে মোট এক হাজার ৮১১টি কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা হবে।

সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোতে অনুমোদিত শিক্ষকের পর চার লাখ ২৮ হাজার ৭০১টি।

নতুন নিয়োগ পেলে শিক্ষকরা প্রায় ৩৫ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণী পাঠদান পরিচালনায় নিয়োজিত থাকবে জানিয়ে জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। ইতোমধ্যে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা পরিচালনা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা অপর্যাপ্ত হলে বিভাগীয় কমিশনার/মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী, ৬০ শতাংশ মহিলা কোটা, ২০ পোষ্য কোটা এবং ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা (সাধারণ কোটা) আছে। সব কোটাতে বিজ্ঞান বিভাগ বিষয়ে ২০ শতাংশ কোটা রয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেক কোটা থেকে যারা নির্বাচিত হবে তাদের সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ড হতে হবে।

কোটা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ডিপিই মহাপরিচালক আলমগীর মো. মনসুরুল আলম বলেন, ‘এটি ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ অন্য চাকরির মতো নয়। এটি ট্রেডিশনালি হয়ে আসছে। সরকার যদি বিবেচনা করে, সরকার ইতোমধ্যে অন্যান্য চাকরির ক্ষেত্রে বিবেচনা করেছে। আমরা নিয়োগবিধি করার সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়েছিলাম, অন্য কোটা বাদ দেয়ার সময় আবার মতামত নিয়েছিলাম। তারা বলেছে নিয়োগবিধি অনুযায়ী করবেন। তবে সরকার যে কোটাগুলো তুলে দিয়েছে সেগুলো এখানে প্রযোজ্য হবে না।’

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০২২ , ০৯ বৈশাখ ১৪২৮ ২০ রমাদ্বান ১৪৪৩

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আজ শুরু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা আজ শুরু হচ্ছে। তিন ধাপে ৬১ জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) এই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। ২২ এপ্রিল প্রথম ধাপে ২২ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৪ জেলার সব এবং ৮ জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

২০ মে দ্বিতীয় ধাপে ৩০ জেলায় পরীক্ষা নেয়া হবে। এর মধ্যে ৮ জেলার সব এবং ২২ জেলার আংশিক পরীক্ষা হবে। তৃতীয় ধাপে ৩১ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ জুন। এর মধ্যে ১৭ জেলার সব এবং ১৪টি জেলার আংশিক পরীক্ষা হবে। তিনটি ধাপের পরীক্ষাই শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০’ উপলক্ষে গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

নিয়োগ পরীক্ষা ‘শতভাগ স্বচ্ছ’ হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জুনের মধ্যে নিয়োগ দিয়ে দেব।’

সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা মহামাররি কারণে এই পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি।

ইতোমধ্যে অবসরজনিত কারণে ১০ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এতে বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্যপদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদনকারীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন। তিন ধাপে মোট এক হাজার ৮১১টি কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা হবে।

সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোতে অনুমোদিত শিক্ষকের পর চার লাখ ২৮ হাজার ৭০১টি।

নতুন নিয়োগ পেলে শিক্ষকরা প্রায় ৩৫ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণী পাঠদান পরিচালনায় নিয়োজিত থাকবে জানিয়ে জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। ইতোমধ্যে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা পরিচালনা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা অপর্যাপ্ত হলে বিভাগীয় কমিশনার/মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী, ৬০ শতাংশ মহিলা কোটা, ২০ পোষ্য কোটা এবং ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা (সাধারণ কোটা) আছে। সব কোটাতে বিজ্ঞান বিভাগ বিষয়ে ২০ শতাংশ কোটা রয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেক কোটা থেকে যারা নির্বাচিত হবে তাদের সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ড হতে হবে।

কোটা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ডিপিই মহাপরিচালক আলমগীর মো. মনসুরুল আলম বলেন, ‘এটি ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ অন্য চাকরির মতো নয়। এটি ট্রেডিশনালি হয়ে আসছে। সরকার যদি বিবেচনা করে, সরকার ইতোমধ্যে অন্যান্য চাকরির ক্ষেত্রে বিবেচনা করেছে। আমরা নিয়োগবিধি করার সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়েছিলাম, অন্য কোটা বাদ দেয়ার সময় আবার মতামত নিয়েছিলাম। তারা বলেছে নিয়োগবিধি অনুযায়ী করবেন। তবে সরকার যে কোটাগুলো তুলে দিয়েছে সেগুলো এখানে প্রযোজ্য হবে না।’