রাজধানীতে কালবৈশাখী, সঙ্গে শিলাবৃষ্টি

দুদিন গরমে অতিষ্ঠ হওয়ার পর রাজধানীতে নেমেছে স্বস্তির বৃষ্টি। তবে বৃষ্টির সঙ্গে বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী কালবৈশাখীও বয়ে গেছে। সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টি। হঠাৎ বৃষ্টিতে রাজধানীর বায়ুদূষণ অনেকটাই কমে এসেছে। তবে, ছুটির দিনে ঈদের কেনাকাটা করতে বের হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেককেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল বেলা তিনটা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর বাতাসের গতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে বেলা ৩টা ১৮ মিনিটে, ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার গতিতে কালবৈশাখী বয়ে গেছে। আবহাওয়া অফিসের মাপকাঠিতে এর মাত্রা ছিল ‘তীব্র’। এছাড়া শ্যামলী, মিরপুর, উত্তরাসহ রাজধানীর অনেক এলাকায় শিলা পড়েছে।

কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) তথ্যানুযায়ী, গতকাল বৃষ্টির পর ঢাকার বায়ুর মানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকায় বায়ুর মান ছিল ১০৩। এতে ১২তম অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা, যা সুস্থ মানুষের জন্য সহনীয়।

বিকেল সাড়ে ৫টায় ১৫৬ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকায় প্রথমে ছিল ভারতের মুম্বাই। এর পরে আছে দিল্লি ও চীনের সাংহাই। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বাতাস নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। গ্রীষ্মকালে শহরটিতে বায়ুদূষণ শীর্ষে থাকলেও বর্ষায় অবস্থার উন্নতি দেখা যায়।

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমির স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কি.মি বেগে ঝড় হতে পারে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। তবে পথচলতি মানুষ, গণপরিবহনের যাত্রী আর ছুটির দিনে ঈদবাজার করতে বিপণিকেন্দ্রে যাওয়া ক্রেতারা ভোগান্তিতে পড়েন। বিপাকে পড়েন ইফতার সাজিয়ে বসার প্রস্তুতিতে থাকা বিক্রেতারা। এদিকে অল্প সময়ের বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

কেবল ঢাকায় নয়, গতকাল দুপুরের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী হয়েছে। অবশ্য ঝড় যে হতে পারে, সে পূর্বাভাস আগেই দিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া অফিস।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ঝড়ের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে এবং খিলগাঁও পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গাছ পড়ে গেছে। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, এখন ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম, এমন আবহাওয়াই স্বাভাবিক। দিনের বাকি সময়টা এবং রাতেও এমন আবহাওয়া থাকতে পারে কোথাও কোথাও।

শনিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২২ , ১০ বৈশাখ ১৪২৮ ২১ রমাদ্বান ১৪৪৩

রাজধানীতে কালবৈশাখী, সঙ্গে শিলাবৃষ্টি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

রাজধানীতে হঠাৎ কালবৈশাখীর ঝড়ে রমনাপার্কের পাশে সড়কে ভেঙে পড়ে বৃক্ষডাল -সংবাদ

দুদিন গরমে অতিষ্ঠ হওয়ার পর রাজধানীতে নেমেছে স্বস্তির বৃষ্টি। তবে বৃষ্টির সঙ্গে বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী কালবৈশাখীও বয়ে গেছে। সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টি। হঠাৎ বৃষ্টিতে রাজধানীর বায়ুদূষণ অনেকটাই কমে এসেছে। তবে, ছুটির দিনে ঈদের কেনাকাটা করতে বের হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেককেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল বেলা তিনটা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর বাতাসের গতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে বেলা ৩টা ১৮ মিনিটে, ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার গতিতে কালবৈশাখী বয়ে গেছে। আবহাওয়া অফিসের মাপকাঠিতে এর মাত্রা ছিল ‘তীব্র’। এছাড়া শ্যামলী, মিরপুর, উত্তরাসহ রাজধানীর অনেক এলাকায় শিলা পড়েছে।

কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) তথ্যানুযায়ী, গতকাল বৃষ্টির পর ঢাকার বায়ুর মানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকায় বায়ুর মান ছিল ১০৩। এতে ১২তম অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা, যা সুস্থ মানুষের জন্য সহনীয়।

বিকেল সাড়ে ৫টায় ১৫৬ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকায় প্রথমে ছিল ভারতের মুম্বাই। এর পরে আছে দিল্লি ও চীনের সাংহাই। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বাতাস নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। গ্রীষ্মকালে শহরটিতে বায়ুদূষণ শীর্ষে থাকলেও বর্ষায় অবস্থার উন্নতি দেখা যায়।

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমির স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কি.মি বেগে ঝড় হতে পারে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। তবে পথচলতি মানুষ, গণপরিবহনের যাত্রী আর ছুটির দিনে ঈদবাজার করতে বিপণিকেন্দ্রে যাওয়া ক্রেতারা ভোগান্তিতে পড়েন। বিপাকে পড়েন ইফতার সাজিয়ে বসার প্রস্তুতিতে থাকা বিক্রেতারা। এদিকে অল্প সময়ের বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

কেবল ঢাকায় নয়, গতকাল দুপুরের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী হয়েছে। অবশ্য ঝড় যে হতে পারে, সে পূর্বাভাস আগেই দিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া অফিস।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ঝড়ের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে এবং খিলগাঁও পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গাছ পড়ে গেছে। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, এখন ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম, এমন আবহাওয়াই স্বাভাবিক। দিনের বাকি সময়টা এবং রাতেও এমন আবহাওয়া থাকতে পারে কোথাও কোথাও।