কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, নেতাদের বাসায় হামলা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে বিএনপি নেতাদের তিন বাসায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

হামলা ও ভাঙচুর হওয়া বাসাগুলো হচ্ছে হাসনা মওদুদের অনুসারী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজনের শ্বশুরের বাসা, সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদল নেতা খালেদ সাইফুল্যাহ ইমনের বাসা, ফখরুলের অনুসারী বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন ফাহাদের বাসায়।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থেমে থেমে তিনটি বাসায় পাল্টাপাল্টি হামলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল চলাকালে সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দেয়া সাবেক জামায়াত নেতা ফখরুল ইসলাম মঞ্চে উঠলে তার অনুসারীরা সেøাগান দেয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য মরহুম ব্যারিস্ট্যার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী হাসনা মওদুদের অনুসারীরা বাধা দেয়।

এতে দুই গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে বাগবিত-া শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে একটি ককটেল বিস্ফোরণ, তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও একটি সিএনজি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে এ সংঘর্ষের জের ধরে বসুরহাট পৌরসভা ৮নম্বর ওয়ার্ডে হাসনা মওদুদের অনুসারী সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদলের নেতা খালেদ সাইফুল্যাহ ইমনের বাসায় এবং উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজনের শ্বশুরের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর ফখরুল অনুসারী বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন ফাহাদের বাসায়ও হামলা ও ভাঙচুর চালায় হাসনা মওদুদ অনুসারীরা।

উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, সাবেক জামায়াত নেতা ফখরুল ইসলাম উপজেলা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা শুরু করলে উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুরু হয়। বর্তমানে তাকে উপজেলা বিএনপির রাজনীতি একটি পক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠলে বিবদমান কোন্দল নতুন করে একটি মাত্রা পায়। তারা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে দ্রুত জাতীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সদস্য ফখরুল ইসলাম অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন ব্যারিস্ট্যার মওদুদ আহমদ জীবিত থাকা অবস্থায় উনার বাড়িতে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মতিন লিটনের অনুসারীদের সঙ্গে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এখানে মূলত রিপন, রাজন ও লিটন অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। একটি পক্ষ চাচ্ছে না কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সুসংগঠিত হোক। ইফতার মাহফিলে সংঘর্ষে ক্ষমতাসীন দলের ইন্ধন থাকতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল অনুসারী নুর উদ্দিন ফাহাদ অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল কবির ফয়সল, সদস্য সচিব রাজনের নেতৃত্বে তার বাসায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এ সময় তার বাসায় থাকা তার এক ভাতিজাও আহত হন বলেও জানান তিনি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজন অভিযোগ করে বলেন ফাহাদের নেতৃত্বে সাবেক ছাত্রদল নেতা খালেদও আমার শ্বশুরের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। আমার শ্বশুর একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী, মূলত তার বাসায় ডাকাতির উদ্দেশে তারা এ হামলা চালায়। ফাহাদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ফাহাদের বাসায় হামলার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেনি। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

শনিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২২ , ১০ বৈশাখ ১৪২৮ ২১ রমাদ্বান ১৪৪৩

কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, নেতাদের বাসায় হামলা

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে বিএনপি নেতাদের তিন বাসায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

হামলা ও ভাঙচুর হওয়া বাসাগুলো হচ্ছে হাসনা মওদুদের অনুসারী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজনের শ্বশুরের বাসা, সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদল নেতা খালেদ সাইফুল্যাহ ইমনের বাসা, ফখরুলের অনুসারী বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন ফাহাদের বাসায়।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থেমে থেমে তিনটি বাসায় পাল্টাপাল্টি হামলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল চলাকালে সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দেয়া সাবেক জামায়াত নেতা ফখরুল ইসলাম মঞ্চে উঠলে তার অনুসারীরা সেøাগান দেয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য মরহুম ব্যারিস্ট্যার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী হাসনা মওদুদের অনুসারীরা বাধা দেয়।

এতে দুই গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে বাগবিত-া শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে একটি ককটেল বিস্ফোরণ, তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও একটি সিএনজি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে এ সংঘর্ষের জের ধরে বসুরহাট পৌরসভা ৮নম্বর ওয়ার্ডে হাসনা মওদুদের অনুসারী সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদলের নেতা খালেদ সাইফুল্যাহ ইমনের বাসায় এবং উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজনের শ্বশুরের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর ফখরুল অনুসারী বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন ফাহাদের বাসায়ও হামলা ও ভাঙচুর চালায় হাসনা মওদুদ অনুসারীরা।

উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, সাবেক জামায়াত নেতা ফখরুল ইসলাম উপজেলা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা শুরু করলে উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুরু হয়। বর্তমানে তাকে উপজেলা বিএনপির রাজনীতি একটি পক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠলে বিবদমান কোন্দল নতুন করে একটি মাত্রা পায়। তারা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে দ্রুত জাতীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সদস্য ফখরুল ইসলাম অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন ব্যারিস্ট্যার মওদুদ আহমদ জীবিত থাকা অবস্থায় উনার বাড়িতে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মতিন লিটনের অনুসারীদের সঙ্গে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এখানে মূলত রিপন, রাজন ও লিটন অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। একটি পক্ষ চাচ্ছে না কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সুসংগঠিত হোক। ইফতার মাহফিলে সংঘর্ষে ক্ষমতাসীন দলের ইন্ধন থাকতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল অনুসারী নুর উদ্দিন ফাহাদ অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল কবির ফয়সল, সদস্য সচিব রাজনের নেতৃত্বে তার বাসায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এ সময় তার বাসায় থাকা তার এক ভাতিজাও আহত হন বলেও জানান তিনি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজন অভিযোগ করে বলেন ফাহাদের নেতৃত্বে সাবেক ছাত্রদল নেতা খালেদও আমার শ্বশুরের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। আমার শ্বশুর একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী, মূলত তার বাসায় ডাকাতির উদ্দেশে তারা এ হামলা চালায়। ফাহাদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ফাহাদের বাসায় হামলার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেনি। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।