রংপুরের কামালকাছনা মাহিগঞ্জ সড়ক ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনঃনির্মাণ করা হয়েছিল। ৬ মাস না যেতেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল এবং গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক রেকটিফাই না করেই গোপনে জামানতের ৫০ লাখ টাকা ফেরত নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনা জানাজানি হলে তোলপাড় চলছে।
সড়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তাতে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা না হলে সড়কটিতে যান চলাচল ব্যাঘাত ঘটবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের অধীনে নগরীর ব্যস্ততম সড়ক কামালকাছনা ও মাহিগঞ্জ সাত মাথা সড়ক পুনঃনির্মাণ করার জন্য ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ভারত সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় এ কাজটির ঠিকাদারি দায়িত্ব পায় খায়রুল কবীর রানা নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রথম থেকেই নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করার এলাকাবাসীর অভিযোগ সত্ত্বেও সড়কটি পুনঃনির্মাণ ও কার্পেটিং করা হয়।
৬ মাস না যেতেই সড়কের বিভিন্ন এলাকায় ফাটল ধরেছে, অনেক এলাকায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়ায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কামালকাছনা এলাকার ব্যবসায়ী মমতাজ উদ্দিন ও সাহেব আলী জানান, সড়কটির নির্মাণ কাজে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে বিটুমিন ছিল নি¤œমানের। ফলে অল্প দিনেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। জরুরি ভিত্তিতে ফাটল মেরামত না হলে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরো বিষয়টি গোপন রেখে জামানত হিসেবে থাকা ৫০ লাখ টাকা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে উত্তোলন করে নিয়েছে বলে প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক প্রকৌশলী জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ফাইনাল বিল দেয়ার পরও শতকরা ১০ ভাগ অর্থ জামানত হিসেবে কেটে রাখা হয় যাতে নির্দিষ্ট সময়ে কাজে কোন ত্রুটি দেখা দিলে ঠিকাদার সেই ত্রুটি রেকটিফাই করে দেয়ার পরেই জামানতের অর্থ ফেরত দেয়া হয়। কিন্তু এ কাজে ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়ার পরও জামানত ফেরত দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার খায়রুল কবীর রানার সঙ্গে গত বুধবার দুপুরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন রাস্তার বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল করেছে। এর আগেও দুই বার ঠিক করা হয়েছে আবারও ফাটল ধরেছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তার জামানতের সময় হয়ে গিয়েছিল সে কারণে জামানতের টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আযম আলী জানান, কামালকাছনা সড়কে ফাটল ধরেছে এ ধরনের খবর তার জানা নেই। আর হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।
অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তালেব আলী সরকার বলেন, প্রয়োজনীয় মেরামত না করে জামানতের টাকা তুলে নেয়ার বিষয়টি সম্পর্কে তার জানা নেই। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
ছয় মাস পূর্বে নির্মিত সড়ক চিত্র - সংবাদ
আরও খবরশনিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২২ , ১০ বৈশাখ ১৪২৮ ২১ রমাদ্বান ১৪৪৩
লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর
ছয় মাস পূর্বে নির্মিত সড়ক চিত্র - সংবাদ
রংপুরের কামালকাছনা মাহিগঞ্জ সড়ক ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনঃনির্মাণ করা হয়েছিল। ৬ মাস না যেতেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল এবং গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক রেকটিফাই না করেই গোপনে জামানতের ৫০ লাখ টাকা ফেরত নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনা জানাজানি হলে তোলপাড় চলছে।
সড়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তাতে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা না হলে সড়কটিতে যান চলাচল ব্যাঘাত ঘটবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের অধীনে নগরীর ব্যস্ততম সড়ক কামালকাছনা ও মাহিগঞ্জ সাত মাথা সড়ক পুনঃনির্মাণ করার জন্য ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ভারত সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় এ কাজটির ঠিকাদারি দায়িত্ব পায় খায়রুল কবীর রানা নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রথম থেকেই নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করার এলাকাবাসীর অভিযোগ সত্ত্বেও সড়কটি পুনঃনির্মাণ ও কার্পেটিং করা হয়।
৬ মাস না যেতেই সড়কের বিভিন্ন এলাকায় ফাটল ধরেছে, অনেক এলাকায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়ায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কামালকাছনা এলাকার ব্যবসায়ী মমতাজ উদ্দিন ও সাহেব আলী জানান, সড়কটির নির্মাণ কাজে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে বিটুমিন ছিল নি¤œমানের। ফলে অল্প দিনেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। জরুরি ভিত্তিতে ফাটল মেরামত না হলে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরো বিষয়টি গোপন রেখে জামানত হিসেবে থাকা ৫০ লাখ টাকা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে উত্তোলন করে নিয়েছে বলে প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক প্রকৌশলী জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ফাইনাল বিল দেয়ার পরও শতকরা ১০ ভাগ অর্থ জামানত হিসেবে কেটে রাখা হয় যাতে নির্দিষ্ট সময়ে কাজে কোন ত্রুটি দেখা দিলে ঠিকাদার সেই ত্রুটি রেকটিফাই করে দেয়ার পরেই জামানতের অর্থ ফেরত দেয়া হয়। কিন্তু এ কাজে ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়ার পরও জামানত ফেরত দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার খায়রুল কবীর রানার সঙ্গে গত বুধবার দুপুরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন রাস্তার বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল করেছে। এর আগেও দুই বার ঠিক করা হয়েছে আবারও ফাটল ধরেছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তার জামানতের সময় হয়ে গিয়েছিল সে কারণে জামানতের টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আযম আলী জানান, কামালকাছনা সড়কে ফাটল ধরেছে এ ধরনের খবর তার জানা নেই। আর হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।
অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তালেব আলী সরকার বলেন, প্রয়োজনীয় মেরামত না করে জামানতের টাকা তুলে নেয়ার বিষয়টি সম্পর্কে তার জানা নেই। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।