সৈয়দপুরে সরকারি ভূসম্পদ দখলের অভিযোগ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

নীলফামারীর সৈয়দপুরে কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি ভূ-সম্পদ দখলের অভিযোগ উঠেছে এক ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এটি ঘটেছে শহরের হার্ট অব সিটি বলে পরিচিত আলম প্রেস লেনে। ওই ভূমি সহকারী কর্মকর্তার নাম এসএম আমজাদ হোসেন। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসাবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সৈয়দপুর পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমিন হোসেন। লিখিত ওই অভিযোগে জানা যায়, এসএম আমজাদ হোসেন প্রায় ২৯ বছর আগে সৈয়দপুর পৌর ভূমি অফিসে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনের সুযোগে কয়া মৌজার খাস খতিয়ানভুক্ত এসএ দাগ ৭৭৬৭, ৭৭৬৮ ও বিএস ২৫৫০৭, ২৫৫০৮, ২৫৫০৯ ও ২৫৫১০ নং দাগের ৩২ শতক জমির মধ্যে সাড়ে ২৩ শতক জমি অত্যন্ত সুকৌশলে দখলে নেয়। দখলকৃত ওই জমির ওপর দুটি একতলা, একটি দোতলা, ছয়টি দোকানঘর ও একটি বিশাল আকৃতির গোডাউন ঘর রয়েছে। এর মধ্যে একটি বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। অবশিষ্ট দোকান, বাড়ি ও গোডাউন ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই হিসাবে দীর্ঘ ২৮ বছরে ওই ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শুধু ভাড়া বাবদ সরকারি ভূ-সম্পদ থেকে তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকা পকেটস্থ করেছেন। বর্তমান বাজার মূল্যে ওই ভূ-সম্পদের দাম কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা বলে শহরের একাধিক বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

অভিযোগ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এসএম আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আমি শুধু না আরো অনেকে দখলে আছেন। সম্প্রতি সরকারি খাস সম্পত্তি দখলের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে গেলে তা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।

এই ভূ-সম্পদের প্রকৃত মালিক ছিলেন অনুপমা দেবী। এ মালিকের নামে এসএ রেকর্ডও প্রচারিত রয়েছে বলে পৌর ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে। সরকারি খাস সম্পত্তি ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তৃক অবৈধ দখল বিষয়ে মন্তব্য জানতে কথা হয় অধ্যক্ষ ক্ষিতিশ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে। তিনি দ্রুত ওই ভূ-সম্পদ দখলমুক্ত ও পকেটস্থ করা ভাড়ার টাকা উদ্ধারে জেলা প্রশাসকের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমিন হোসেন জানান, সরকারের ওই ভূ-সম্পদ দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। জানতে চাইলে সৈয়দপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান মুঠোফোনে জানান, আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত দখলমুক্ত করা হবে।

রবিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২২ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ২২ রমাদ্বান ১৪৪৩

সৈয়দপুরে সরকারি ভূসম্পদ দখলের অভিযোগ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

নীলফামারীর সৈয়দপুরে কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি ভূ-সম্পদ দখলের অভিযোগ উঠেছে এক ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এটি ঘটেছে শহরের হার্ট অব সিটি বলে পরিচিত আলম প্রেস লেনে। ওই ভূমি সহকারী কর্মকর্তার নাম এসএম আমজাদ হোসেন। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসাবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সৈয়দপুর পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমিন হোসেন। লিখিত ওই অভিযোগে জানা যায়, এসএম আমজাদ হোসেন প্রায় ২৯ বছর আগে সৈয়দপুর পৌর ভূমি অফিসে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনের সুযোগে কয়া মৌজার খাস খতিয়ানভুক্ত এসএ দাগ ৭৭৬৭, ৭৭৬৮ ও বিএস ২৫৫০৭, ২৫৫০৮, ২৫৫০৯ ও ২৫৫১০ নং দাগের ৩২ শতক জমির মধ্যে সাড়ে ২৩ শতক জমি অত্যন্ত সুকৌশলে দখলে নেয়। দখলকৃত ওই জমির ওপর দুটি একতলা, একটি দোতলা, ছয়টি দোকানঘর ও একটি বিশাল আকৃতির গোডাউন ঘর রয়েছে। এর মধ্যে একটি বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। অবশিষ্ট দোকান, বাড়ি ও গোডাউন ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই হিসাবে দীর্ঘ ২৮ বছরে ওই ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শুধু ভাড়া বাবদ সরকারি ভূ-সম্পদ থেকে তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকা পকেটস্থ করেছেন। বর্তমান বাজার মূল্যে ওই ভূ-সম্পদের দাম কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা বলে শহরের একাধিক বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

অভিযোগ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এসএম আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আমি শুধু না আরো অনেকে দখলে আছেন। সম্প্রতি সরকারি খাস সম্পত্তি দখলের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে গেলে তা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।

এই ভূ-সম্পদের প্রকৃত মালিক ছিলেন অনুপমা দেবী। এ মালিকের নামে এসএ রেকর্ডও প্রচারিত রয়েছে বলে পৌর ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে। সরকারি খাস সম্পত্তি ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তৃক অবৈধ দখল বিষয়ে মন্তব্য জানতে কথা হয় অধ্যক্ষ ক্ষিতিশ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে। তিনি দ্রুত ওই ভূ-সম্পদ দখলমুক্ত ও পকেটস্থ করা ভাড়ার টাকা উদ্ধারে জেলা প্রশাসকের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমিন হোসেন জানান, সরকারের ওই ভূ-সম্পদ দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। জানতে চাইলে সৈয়দপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান মুঠোফোনে জানান, আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত দখলমুক্ত করা হবে।