খাগড়াছড়িতে ইটভাটায় চলছে অভিযান, বন্ধ ২টি

পার্বত্য খাগড়াছড়িতে হাইকোর্টের নির্দেশে প্রথমবারের মতো অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন। পাহাড়ে বায়ু দূষণরোধে হিউম্যান রাইটস এবং পিস ফর বাংলাদেশের দায়ের করা হাইকোর্ট বিভাগের রিট মামলা নং- ১২০৪/২০২২ এর আলোকে নির্দেশিত ইটভাটাসমূহের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গত শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশিত পার্বত্য খাগড়াছড়ির রামগড়ের প্রত্যন্ত দাতারাম পাড়া এলাকায় জনতা ব্রিকস ও মেঘনা-২ ইটভাটা এবং মাটিরাঙ্গার হাতিয়াপাড়া এলাকায় বিআরএস নামক অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে রামগড় ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সহযোগিতায় ইট প্রস্তুত কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের যন্ত্রপাতি অকেজো করে ভেঙে গুড়িয়ে দেন। একই সঙ্গে পানি দিয়ে ভাটা ধ্বংস করা হয়।

এ প্রসঙ্গে রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত বলেন, ‘হাইকোটের নির্দেশে রামগড়ের দাতারাম পাড়া এলাকায় জনতা ব্রিকস ও মেঘনা-২ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হলো। এ সময় তিনি ইটভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইটভাটা চালু করার চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, রামগড় উপজেলার অন্য ৭টি ইটের ভাটার ব্যাপারে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ থাকায় এগুলোর ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত কোন ব্যবস্থা নেননি।

অভিযান চলাকালে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মিজ তৃলা দেব বলেন, ‘হাইকোটের নির্দেশে মাটিরাঙ্গার হাতিয়া পাড়া এলাকায় বিআরএস ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হলো। এর আগে আরেকটি ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি ইটভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইটভাটা চালু করার চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে মহালছড়ি ও গুইমারায় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম অবৈধভাবে পরিচালিত এসএইচএস ব্রিকস ও গুইমারার মদিনা ব্রিকসে অভিযান চালিয়ে চিমনি ভেঙে দেয়া হয়। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভাটার চুলার আগুন নিভিয়ে দেয়। গত বৃহস্পতিবার মহালছড়ি ও গুইমারা উপজেলায় অবৈধ এসএইচএস ব্রিকস ভাটায় অভিযান চালিয়ে ভাটার চিমনি ভেঙে দেয়া হয়। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভাটার চুল্লির আগুন নিভিয়ে দেয়। পরে সেটি গুড়িয়ে দেয়া হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, হাইকোর্ট তিন পার্বত্য জেলায় সব ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক অবৈধ ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় হাইকোটের নির্দেশিত অনুযায়ী তিনি ইটভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইটভাটা চালু করার চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় সব অবৈধ ইটভাটা ছয় সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংস করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। হাইকোটের নির্দেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

আরও খবর
আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ব্যবস্থাপনার ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর লড়াই অব্যাহত
বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুই বছরে দুই শতাধিক মামলা
স্ত্রীর ওপর জেদ করে প্রতিবন্ধী শ্যালককে অপহরণ, মুক্তিপণ চেয়ে ফোন
আ’লীগের বর্ধিত সভায় ২ নেতাকে পিটিয়ে ফের আলোচনায় বদি
ঈদের আগে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পাচ্ছেন ৩২ হাজার ৯০৪ গৃহহীন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানির নিচে
পৌরসভার ‘সচিব’ পদ এখন ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’
ফরিদপুরের আলোচিত জোড়া খুনের প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইল তাঁতপল্লী ও শাড়ির বাজার

রবিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২২ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ২২ রমাদ্বান ১৪৪৩

খাগড়াছড়িতে ইটভাটায় চলছে অভিযান, বন্ধ ২টি

প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি

পার্বত্য খাগড়াছড়িতে হাইকোর্টের নির্দেশে প্রথমবারের মতো অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন। পাহাড়ে বায়ু দূষণরোধে হিউম্যান রাইটস এবং পিস ফর বাংলাদেশের দায়ের করা হাইকোর্ট বিভাগের রিট মামলা নং- ১২০৪/২০২২ এর আলোকে নির্দেশিত ইটভাটাসমূহের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গত শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশিত পার্বত্য খাগড়াছড়ির রামগড়ের প্রত্যন্ত দাতারাম পাড়া এলাকায় জনতা ব্রিকস ও মেঘনা-২ ইটভাটা এবং মাটিরাঙ্গার হাতিয়াপাড়া এলাকায় বিআরএস নামক অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে রামগড় ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সহযোগিতায় ইট প্রস্তুত কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের যন্ত্রপাতি অকেজো করে ভেঙে গুড়িয়ে দেন। একই সঙ্গে পানি দিয়ে ভাটা ধ্বংস করা হয়।

এ প্রসঙ্গে রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত বলেন, ‘হাইকোটের নির্দেশে রামগড়ের দাতারাম পাড়া এলাকায় জনতা ব্রিকস ও মেঘনা-২ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হলো। এ সময় তিনি ইটভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইটভাটা চালু করার চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, রামগড় উপজেলার অন্য ৭টি ইটের ভাটার ব্যাপারে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ থাকায় এগুলোর ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত কোন ব্যবস্থা নেননি।

অভিযান চলাকালে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মিজ তৃলা দেব বলেন, ‘হাইকোটের নির্দেশে মাটিরাঙ্গার হাতিয়া পাড়া এলাকায় বিআরএস ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হলো। এর আগে আরেকটি ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি ইটভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইটভাটা চালু করার চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে মহালছড়ি ও গুইমারায় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম অবৈধভাবে পরিচালিত এসএইচএস ব্রিকস ও গুইমারার মদিনা ব্রিকসে অভিযান চালিয়ে চিমনি ভেঙে দেয়া হয়। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভাটার চুলার আগুন নিভিয়ে দেয়। গত বৃহস্পতিবার মহালছড়ি ও গুইমারা উপজেলায় অবৈধ এসএইচএস ব্রিকস ভাটায় অভিযান চালিয়ে ভাটার চিমনি ভেঙে দেয়া হয়। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভাটার চুল্লির আগুন নিভিয়ে দেয়। পরে সেটি গুড়িয়ে দেয়া হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, হাইকোর্ট তিন পার্বত্য জেলায় সব ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক অবৈধ ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় হাইকোটের নির্দেশিত অনুযায়ী তিনি ইটভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইটভাটা চালু করার চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় সব অবৈধ ইটভাটা ছয় সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংস করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। হাইকোটের নির্দেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।