ঈশ্বরদীতে ‘একদর’ ফাঁদে ঈদ কেনাকাটা : মানহীন পণ্যে লাগামহীন প্রতারণা

আর কয়েকদিন পরেই ঈদ-উল-ফিতর, মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঈদের সাথে কেনাকাটার ব্যপারটাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ সুযোগে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন মার্কেটে ফিক্সড প্রাইস” লেখা একদামের দোকান গুলোতে চলছে রকমারী প্রতারণা। ফিক্সড প্রাইজের আড়ালে “মিক্সড আইটেম” কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। নারী-পুরুষ-শিশুদের তৈরী পোশাক, জুতা-সেন্ডেল, টুপী, প্রসাধনী, পারফিউম ও শাড়ী-চুড়িসহ ঈদ কেনাকাটার আনুসাঙ্গিক সব পণ্য বিক্রিতে এ “ফিক্সড প্রাইস” প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা।

মানহীন বিভিন্ন পন্যে একদামের চড়ামূল্যের ষ্টীকার লাগিয়ে চলছে লাগামহীন প্রতারনা। সংশি�ষ্ট দোকানগুলোতে নজরকাড়া ডেকোরেশন, থাইগ�াস ফিটিং করা ও ক্ষেত্র বিশেষে এয়ারকন্ডিশন লাগিয়ে ক্রেতা আকৃষ্ট করে এ প্রতারনায় জাল বিস্তার করা হয়েছে। আর এতে প্রতিনিয়ত ঠকছেন ক্রেতারা। এসব দোকানে পণ্যের গুণগত মানের সঙ্গে দামের কোনো মিল নেই। তারা কাপড়ের গায়ে অতিরিক্ত মূল্য লাগিয়ে দেদারছে পণ্য বিক্রি করছেন। ঈশ্বরদী পৌর শহরের বাজার এলাকার বেশ কয়েকটি একদরের দোকান ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে নানা ধরনের চিত্র পাওয়া গেছে। রিমন হোসেন নামে একজন ক্রেতা জানান গতকাল তার এক বন্ধু সাধারন দোকান থেকে দামাদামি করে একই মানের পাঞ্জাবী কিনেছেন মাত্র এক হাজার নয়শত টাকায়। এরকম একদামের একটি শো-রুম পাঞ্জাবীর দাম পাঁচ হাজার ছয়শ টাকা।

এসব দোকানে মানহীন যেনতেন কোয়ালিটির তৈরী পোশাকে উচ্চমূল্য সম্বলিত একদামের ষ্টীকার লাগিয়ে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তথাকথিত “একদাম’র এসব দোকান এভাবে মহা প্রতারনায় নেমেছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। সরোজমিনে ঈশ্বরদী বাজারে মনির প�াজা, জাকের সুপার মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, গোপাল সুপার মার্কেট, বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট, রেলওয়ে মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে দেখা যায় নারী পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। চলছে জমজমাট বেচা কেনা। প্রতিটি মার্কেটে শোভা পাচ্ছে স্কার্ট, টপস, থ্রি-পিচ, জিন্স প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি, ছেলেদের নবাবীপাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, ফতুয়া, টি শার্ট পেন্ট এবং ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য বাহারি ডিজাইনের তৈরি পোশাক। তাছাড়া রয়েছে জামদানি বেনারশি, কাতান, সিল্ক শাড়িও।

তবে ঈশ্বরদী বাজারের কয়েকটি একদরের দোকানে অতিরিক্ত মূল্যে পোশাক তারা বিক্রি করছেন। যেখানে একদরের দোকান ছাড়া অন্য দোকানে একটি শার্ট ৬শ থেকে ৭শ টাকায় কেনা যায়। সেখানে একদরের দোকান থেকে ১২শ থেকে ১৫শ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। ছোট বড় সব ধরনের কাপড় একদরের দোকানে দুই থেকে তিনগুণ টাকা রাখছেন।

ভূক্তভোগীরা জানান, প্রতিবছর ঈদের সময় ঈশ্বরদী বাজারে “একদাম’র কয়েকটি দোকান নিম্নমানের তৈরী পোশাকে একদামের ষ্টীকার লাগিয়ে গ্রাহক ঠকাচ্ছে। একদাম তথা ফিক্সড প্রাইসে নিম্নমানের এসব মিক্সড আইটেম বিক্রি করে সংশ্লিষ্ট শো-রুম/কোম্পানী গুলোর ক্যাশবক্স প্রতিদিন ভারী হলেও মানহীন পণ্যের গলাকাটা দামে খালি হচ্ছে সহজ-সরল ক্রেতাদের পকেট। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এ প্রতারনা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন ক্রেতারা। তারা বলেন, ঈদ বাজার জমে উঠার সাথে সাথে এদের প্রতারনাও জমে উঠেছে।

বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২ , ১৪ বৈশাখ ১৪২৮ ২৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

ঈশ্বরদীতে ‘একদর’ ফাঁদে ঈদ কেনাকাটা : মানহীন পণ্যে লাগামহীন প্রতারণা

প্রতিনিধি, ঈশ্বরদী (পাবনা)

আর কয়েকদিন পরেই ঈদ-উল-ফিতর, মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঈদের সাথে কেনাকাটার ব্যপারটাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ সুযোগে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন মার্কেটে ফিক্সড প্রাইস” লেখা একদামের দোকান গুলোতে চলছে রকমারী প্রতারণা। ফিক্সড প্রাইজের আড়ালে “মিক্সড আইটেম” কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। নারী-পুরুষ-শিশুদের তৈরী পোশাক, জুতা-সেন্ডেল, টুপী, প্রসাধনী, পারফিউম ও শাড়ী-চুড়িসহ ঈদ কেনাকাটার আনুসাঙ্গিক সব পণ্য বিক্রিতে এ “ফিক্সড প্রাইস” প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা।

মানহীন বিভিন্ন পন্যে একদামের চড়ামূল্যের ষ্টীকার লাগিয়ে চলছে লাগামহীন প্রতারনা। সংশি�ষ্ট দোকানগুলোতে নজরকাড়া ডেকোরেশন, থাইগ�াস ফিটিং করা ও ক্ষেত্র বিশেষে এয়ারকন্ডিশন লাগিয়ে ক্রেতা আকৃষ্ট করে এ প্রতারনায় জাল বিস্তার করা হয়েছে। আর এতে প্রতিনিয়ত ঠকছেন ক্রেতারা। এসব দোকানে পণ্যের গুণগত মানের সঙ্গে দামের কোনো মিল নেই। তারা কাপড়ের গায়ে অতিরিক্ত মূল্য লাগিয়ে দেদারছে পণ্য বিক্রি করছেন। ঈশ্বরদী পৌর শহরের বাজার এলাকার বেশ কয়েকটি একদরের দোকান ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে নানা ধরনের চিত্র পাওয়া গেছে। রিমন হোসেন নামে একজন ক্রেতা জানান গতকাল তার এক বন্ধু সাধারন দোকান থেকে দামাদামি করে একই মানের পাঞ্জাবী কিনেছেন মাত্র এক হাজার নয়শত টাকায়। এরকম একদামের একটি শো-রুম পাঞ্জাবীর দাম পাঁচ হাজার ছয়শ টাকা।

এসব দোকানে মানহীন যেনতেন কোয়ালিটির তৈরী পোশাকে উচ্চমূল্য সম্বলিত একদামের ষ্টীকার লাগিয়ে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তথাকথিত “একদাম’র এসব দোকান এভাবে মহা প্রতারনায় নেমেছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। সরোজমিনে ঈশ্বরদী বাজারে মনির প�াজা, জাকের সুপার মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, গোপাল সুপার মার্কেট, বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট, রেলওয়ে মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে দেখা যায় নারী পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। চলছে জমজমাট বেচা কেনা। প্রতিটি মার্কেটে শোভা পাচ্ছে স্কার্ট, টপস, থ্রি-পিচ, জিন্স প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি, ছেলেদের নবাবীপাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, ফতুয়া, টি শার্ট পেন্ট এবং ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য বাহারি ডিজাইনের তৈরি পোশাক। তাছাড়া রয়েছে জামদানি বেনারশি, কাতান, সিল্ক শাড়িও।

তবে ঈশ্বরদী বাজারের কয়েকটি একদরের দোকানে অতিরিক্ত মূল্যে পোশাক তারা বিক্রি করছেন। যেখানে একদরের দোকান ছাড়া অন্য দোকানে একটি শার্ট ৬শ থেকে ৭শ টাকায় কেনা যায়। সেখানে একদরের দোকান থেকে ১২শ থেকে ১৫শ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। ছোট বড় সব ধরনের কাপড় একদরের দোকানে দুই থেকে তিনগুণ টাকা রাখছেন।

ভূক্তভোগীরা জানান, প্রতিবছর ঈদের সময় ঈশ্বরদী বাজারে “একদাম’র কয়েকটি দোকান নিম্নমানের তৈরী পোশাকে একদামের ষ্টীকার লাগিয়ে গ্রাহক ঠকাচ্ছে। একদাম তথা ফিক্সড প্রাইসে নিম্নমানের এসব মিক্সড আইটেম বিক্রি করে সংশ্লিষ্ট শো-রুম/কোম্পানী গুলোর ক্যাশবক্স প্রতিদিন ভারী হলেও মানহীন পণ্যের গলাকাটা দামে খালি হচ্ছে সহজ-সরল ক্রেতাদের পকেট। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এ প্রতারনা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন ক্রেতারা। তারা বলেন, ঈদ বাজার জমে উঠার সাথে সাথে এদের প্রতারনাও জমে উঠেছে।