অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরা ভৈরব শহরে

দামী মোবাইল কিংবা নগদ টাকা দিতে সামান্য দেরি করলেই ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। ফলে হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন আইনজীবী, ব্যবসায়ী, পথচারী কিংবা অটোরিক্সা চালক। এমনকি রেহাই পায়নি পুলিশ ! তাই, হত্যাকা-সহ অপরাধ প্রবণতা কমাতে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের ৮ কিলোমিটার এবং দুর্জয় মোড় থেকে দু’পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ২ কিলোমিটারসহ প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৬০টি সিসি ক্যমেরা বসানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, ব্যস্ততম এক শহর কিশোরগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র বন্দরনগরী এই ভৈরব। ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় এ শহরে মানুষের চলাচল যেমন বেশি, তেমনি অপরাধীদের দৌঁরাত্ম্য অনেক। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন সড়কে ছিনতাইকারী বেপরোয়া হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, সুযোগ পেলে দিনে-দুপুরেও ছুরিকাঘাত করে বসে তারা। ফলে গেল কয়েক বছরে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে একের পর এক মানুষজন যেমন আহত হয়েছেন। তেমনি হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন পুলিশ, আইনজীবী ও ব্যবসায়ী। বাদ যায়নি চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ একাধিক অটোরিক্সা চালক। দামী মোবাইল কিংবা নগদ টাকা দিতে সামান্য দেরি করলেই ছুরিকাঘাত করে মুহূর্তের মধ্যেই পালিয়ে যায় অপরাধীরা। ফলে প্রতিনিয়তই শহরের রেল স্টেশন সড়ক ও ঢাকা-সিলেট মহা সড়কের নাটাল মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে ঘটতো হতাহতের মতো ঘটনা। ফলে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে সচেতন মহলকে। পুুলিশ জানায়, ভৈরবে অপরাধ প্রবণতা কমাতে এবং অপরাধীদের দ্রুত সনাক্ত করতে উপজেলা পরিষদ ও থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে ১৬০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ফলে এর সুফল পেতে শুরু করেছে শহরের বাসিন্দারা।

এদিকে মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট ভৈরব শহরে মাদকের বিস্তার এবং বেচাকেনা রোধ করতে পারলে অনেকাংশেই অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে বলে মনে করেন সমাজের বিশিষ্টজনরা। এছাড়াও সিসি ক্যামেরাগুলো নিয়মিত রক্ষণা-বেক্ষণ করা হলে শহরে যেমন কমবে অপরাধ, তেমনি বাড়বে মানুষের নিরাপত্তা।

এছাড়াও মাদকের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে। তাহলেই, কমবে অপরাধ, নিরাপদ হবে এই ভৈরব। এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যমেরা স্থাপনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, ভৈরব রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট শিশু সংগঠক শরীফ আহমেদ।

আর সিসি ক্যামেরা বসানোর পর থেকে সার্বিকভাবে কিছ্টুা হলে শহরে অপরাধ প্রবণতা কমেছে বলে মনে করেন, ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি এস এম বাকী বিল্লাহ। এছাড়াও তিনি এই শহরে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশকে আরও কঠোর হতে আহবান জানিয়েছেন। তাহলেই অনেকাংশেই কমবে অপরাধ প্রবণতা। বৃদ্ধি পাবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা।

এই শহরে সামান্য কারণেই ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে হতাহতের মতো ঘটনা ঘটে বলে স্বীকার করে ভৈরব থানার ওসি মো. গেলাম মোস্তফা বলেন, শহরের অপরাধ প্রবণতা কমাতে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতেই সিসি ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছে। ফলে অন্যান্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ছিনতাই প্রবণতা কমেছে বলে জানান তিনি। আর সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতে পারছে পুলিশ। ফলে অপরাধীদের আটক করতেও সক্ষম হচ্ছেন।

এছাড়াও পৌর মেয়র এবং চেম্বার অব কমার্সের সহযোগিতায় পৌরসভার বিভিন্ন অলিগলিতে আরও ১২০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ। সবগুলো ক্যামেরা বসানো হলে এই শহরে অনেকাংশেই অপরাধ কমে যাবে। একই সঙ্গে বাড়বে নিরাপত্তা।

বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২ , ১৪ বৈশাখ ১৪২৮ ২৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরা ভৈরব শহরে

প্রতিনিধি, ভৈরব

দামী মোবাইল কিংবা নগদ টাকা দিতে সামান্য দেরি করলেই ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। ফলে হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন আইনজীবী, ব্যবসায়ী, পথচারী কিংবা অটোরিক্সা চালক। এমনকি রেহাই পায়নি পুলিশ ! তাই, হত্যাকা-সহ অপরাধ প্রবণতা কমাতে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের ৮ কিলোমিটার এবং দুর্জয় মোড় থেকে দু’পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ২ কিলোমিটারসহ প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৬০টি সিসি ক্যমেরা বসানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, ব্যস্ততম এক শহর কিশোরগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র বন্দরনগরী এই ভৈরব। ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় এ শহরে মানুষের চলাচল যেমন বেশি, তেমনি অপরাধীদের দৌঁরাত্ম্য অনেক। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন সড়কে ছিনতাইকারী বেপরোয়া হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, সুযোগ পেলে দিনে-দুপুরেও ছুরিকাঘাত করে বসে তারা। ফলে গেল কয়েক বছরে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে একের পর এক মানুষজন যেমন আহত হয়েছেন। তেমনি হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন পুলিশ, আইনজীবী ও ব্যবসায়ী। বাদ যায়নি চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ একাধিক অটোরিক্সা চালক। দামী মোবাইল কিংবা নগদ টাকা দিতে সামান্য দেরি করলেই ছুরিকাঘাত করে মুহূর্তের মধ্যেই পালিয়ে যায় অপরাধীরা। ফলে প্রতিনিয়তই শহরের রেল স্টেশন সড়ক ও ঢাকা-সিলেট মহা সড়কের নাটাল মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে ঘটতো হতাহতের মতো ঘটনা। ফলে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে সচেতন মহলকে। পুুলিশ জানায়, ভৈরবে অপরাধ প্রবণতা কমাতে এবং অপরাধীদের দ্রুত সনাক্ত করতে উপজেলা পরিষদ ও থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে ১৬০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ফলে এর সুফল পেতে শুরু করেছে শহরের বাসিন্দারা।

এদিকে মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট ভৈরব শহরে মাদকের বিস্তার এবং বেচাকেনা রোধ করতে পারলে অনেকাংশেই অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে বলে মনে করেন সমাজের বিশিষ্টজনরা। এছাড়াও সিসি ক্যামেরাগুলো নিয়মিত রক্ষণা-বেক্ষণ করা হলে শহরে যেমন কমবে অপরাধ, তেমনি বাড়বে মানুষের নিরাপত্তা।

এছাড়াও মাদকের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে। তাহলেই, কমবে অপরাধ, নিরাপদ হবে এই ভৈরব। এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যমেরা স্থাপনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, ভৈরব রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট শিশু সংগঠক শরীফ আহমেদ।

আর সিসি ক্যামেরা বসানোর পর থেকে সার্বিকভাবে কিছ্টুা হলে শহরে অপরাধ প্রবণতা কমেছে বলে মনে করেন, ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি এস এম বাকী বিল্লাহ। এছাড়াও তিনি এই শহরে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশকে আরও কঠোর হতে আহবান জানিয়েছেন। তাহলেই অনেকাংশেই কমবে অপরাধ প্রবণতা। বৃদ্ধি পাবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা।

এই শহরে সামান্য কারণেই ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে হতাহতের মতো ঘটনা ঘটে বলে স্বীকার করে ভৈরব থানার ওসি মো. গেলাম মোস্তফা বলেন, শহরের অপরাধ প্রবণতা কমাতে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতেই সিসি ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছে। ফলে অন্যান্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ছিনতাই প্রবণতা কমেছে বলে জানান তিনি। আর সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতে পারছে পুলিশ। ফলে অপরাধীদের আটক করতেও সক্ষম হচ্ছেন।

এছাড়াও পৌর মেয়র এবং চেম্বার অব কমার্সের সহযোগিতায় পৌরসভার বিভিন্ন অলিগলিতে আরও ১২০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ। সবগুলো ক্যামেরা বসানো হলে এই শহরে অনেকাংশেই অপরাধ কমে যাবে। একই সঙ্গে বাড়বে নিরাপত্তা।