চীনের ঋণের ফাঁদ অলীক কল্পনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভূ-রাজনৈতিক কারণে চীনের কাছ থেকে নেয়া ঋণের বিষয়ে অনেকের বিরূপ মন্তব্য থাকলেও এ বিষয়ে বাংলাদেশ একদম বিচলিত নয়। চীনের কাছ থেকে নেয়া ঋণ নিয়ে কোন ধরনের দুশ্চিন্তা নেই বাংলাদেশের বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। গতকাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আসন্ন ঢাকা সফর উপলক্ষে নিজ দপ্তরে অনানুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমরা দেখি আপনাদের লেখায় যে বাংলাদেশ চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে গেছে এবং এটি একটি সম্পূর্ণ অলীক কল্পনা মাত্র।’

বাংলাদেশ ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক এবং যাচাই-বাছাই করে দেখে লাভ হবে কি-না, জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সর্বমোট ঋণ অত্যন্ত অল্প এবং এর বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থাগুলোর কাছ থেকে নেয়া। বাকি যে দেশ সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে, সেটি হচ্ছে জাপান। চীন থেকে অল্প পরিমাণ ঋণ নেয়া হয়েছে এবং সেটি পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ। সেটি নিয়ে সবার মাথা ব্যথা। কিন্তু জাপানের কথা কেউ বলে না।’

চীনের ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের নেতিবাচক মন্তব্যের বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘হয়ত বিশেষ অভিসন্ধি আছে। হয়ত তারা যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চায়।’

২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন ঢাকা সফর করেন, তখন আমরা অনেক অর্থের চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু কয়টা হয়েছে, কারণ যখন আসলে হয়, তখন আমরা খুবই হিসাব-নিকাশ করে ঋণ নিয়ে থাকি, বলেন মন্ত্রী।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং বৈশ্বিকভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ভূ-রাজনীতি নিয়ে আলোচনার সুযোগ আছে বলে জানান আবদুল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘ভূ-রাজনীতি নিয়ে আলোচনার সুযোগ হয়তো আছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি রয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় চারপাশে কী হচ্ছে, সেটি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকি। এগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল কমিশনের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বৈশ্বিক রিপোর্টে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে। এটির সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমার দেশে ধর্ম নিয়ে কোন ঝামেলা নেই। এখানে আমাদের সম্প্রীতি আছে। ব্রিটিশরা আমাদের ধর্মীয় সম্প্রীতির ক্ষতি করেছে। আমাদের দেশে ধর্ম নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না। এটি আপনারা তৈরি করেছেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা যথেষ্ট বাধাগ্রস্ত। আমাদের দেশে বাধাগ্রস্ত নয়। তবে দুর্ঘটনা যদি হয়, তবে সরকার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২ , ১৪ বৈশাখ ১৪২৮ ২৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

চীনের ঋণের ফাঁদ অলীক কল্পনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ভূ-রাজনৈতিক কারণে চীনের কাছ থেকে নেয়া ঋণের বিষয়ে অনেকের বিরূপ মন্তব্য থাকলেও এ বিষয়ে বাংলাদেশ একদম বিচলিত নয়। চীনের কাছ থেকে নেয়া ঋণ নিয়ে কোন ধরনের দুশ্চিন্তা নেই বাংলাদেশের বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। গতকাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আসন্ন ঢাকা সফর উপলক্ষে নিজ দপ্তরে অনানুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমরা দেখি আপনাদের লেখায় যে বাংলাদেশ চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ে গেছে এবং এটি একটি সম্পূর্ণ অলীক কল্পনা মাত্র।’

বাংলাদেশ ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক এবং যাচাই-বাছাই করে দেখে লাভ হবে কি-না, জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সর্বমোট ঋণ অত্যন্ত অল্প এবং এর বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থাগুলোর কাছ থেকে নেয়া। বাকি যে দেশ সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে, সেটি হচ্ছে জাপান। চীন থেকে অল্প পরিমাণ ঋণ নেয়া হয়েছে এবং সেটি পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ। সেটি নিয়ে সবার মাথা ব্যথা। কিন্তু জাপানের কথা কেউ বলে না।’

চীনের ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের নেতিবাচক মন্তব্যের বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘হয়ত বিশেষ অভিসন্ধি আছে। হয়ত তারা যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চায়।’

২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন ঢাকা সফর করেন, তখন আমরা অনেক অর্থের চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু কয়টা হয়েছে, কারণ যখন আসলে হয়, তখন আমরা খুবই হিসাব-নিকাশ করে ঋণ নিয়ে থাকি, বলেন মন্ত্রী।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং বৈশ্বিকভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ভূ-রাজনীতি নিয়ে আলোচনার সুযোগ আছে বলে জানান আবদুল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘ভূ-রাজনীতি নিয়ে আলোচনার সুযোগ হয়তো আছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি রয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় চারপাশে কী হচ্ছে, সেটি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকি। এগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল কমিশনের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বৈশ্বিক রিপোর্টে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে। এটির সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমার দেশে ধর্ম নিয়ে কোন ঝামেলা নেই। এখানে আমাদের সম্প্রীতি আছে। ব্রিটিশরা আমাদের ধর্মীয় সম্প্রীতির ক্ষতি করেছে। আমাদের দেশে ধর্ম নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না। এটি আপনারা তৈরি করেছেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা যথেষ্ট বাধাগ্রস্ত। আমাদের দেশে বাধাগ্রস্ত নয়। তবে দুর্ঘটনা যদি হয়, তবে সরকার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’