আন্দোলন-প্রতিবাদের পরও তেঁতুলতলার মাঠে থামেনি থানার নির্মাণ কাজ

গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন, প্রতিবাদের পরও রাজধানীর তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্যরা মাঠে অবস্থান করছেন। নির্মাণ কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, ওপরের নির্দেশ অনুযায়ী তারা এখানে অবস্থান করছেন এবং তদারকি করছেন।

এদিকে, তেঁতুলতলা মাঠে থানা নির্মাণের বিরোধিতা করছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, এখানে থানা নির্মাণ হলে ছেলে-মেয়েরা খেলার জন্য কোন জায়গা পাবে না। আর আশপাশে কোন মাঠ নেই, যেখানে ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা করতে পারে। তেঁতুলতলা মাঠে থানা স্থাপন হলে ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা কিংবা দৌড়াদৌড়ি করা থেকে বঞ্চিত হবে।

গতকাল ওই মাঠে থানার ভবন নির্মাণ নিয়ে ব্যাখ্য দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার থেকে পাঠানে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনস্বার্থে কলাবাগান থানার জন্য ধানমন্ডি মৌজার ০.২০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইনের সব বিধি-বিধান অনুসরণ করা হয়েছে। কলাবাগান থানার জন্য অধিগ্রহণকৃত ০.২০ একর জমি জরিপ অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তি ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন।

মাঠ রক্ষার আন্দোলনে থাকা সৈয়দা রতœা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি আশাবাদী, এই মাঠটি রক্ষা পাবে। এই মাঠ রক্ষা পেলে আমার আন্দোলন সফল হবে’।

পুলিশ বলছে, তেঁতুলতলা মাঠ থেকে কিছু দূরে যে কলাবাগান মাঠ রয়েছে, সেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করার সুযোগ রয়েছে। বিকল্প খেলার মাঠ ব্যবস্থার বিষয়টি ডিএমপির এখতিয়ারভুক্ত নয়। তবে এলাকাবাসী, বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু এসব প্রতিবাদ, বিবৃতি উপেক্ষা করে যেকোন মূল্যে ওই মাঠে থানার ভবন নির্মাণ করতে চায় পুলিশ। কড়া নিরাপওার মধ্যে গতকালও ওই মাঠে ভবনের নির্মাণ কাজ করতে দেখা গেছে রাজমিস্ত্রীদের। তবে থানা নির্মাণের জন্য দেশের প্রচলিত সব আইন-কানুন মেনে সরকার জনস্বার্থে জায়গাটি বরাদ্দ দিয়েছে এবং কোন ব্যক্তির বা সংস্থার জমিতে বেআইনিভাবে থানা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে না মর্মে ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে।

জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলা হয়, কলাবাগান থানার জন্য ওই জমি অধিগ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে, সরকারি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে রাজউকের কোন আপত্তি নেই মর্মে ছাড়পত্র পাওয়া গেছে, জায়গাটির প্রস্তাবিত ভূমি ব্যবহার ‘আরবান রেসিডেন্টসিয়াল জোন’ হিসেবে চিহ্নিত আছে মর্মে নগর উন্নয়নের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে, সরকারের প্রচলিত আইন ও নীতি অনুসরণে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরেরও অনাপত্তি পত্র পাওয়া গেছে, স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য ওই জমিতে এলাকাবাসির নিরাপত্তার সুবিধার্থে স্থায়ীভাবে কলাবাগান থানা স্থাপনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর ডিও লেটার প্রদান করেছেন,

ঢাকা জেলা প্রশাসক সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে ওই জমি অধিগ্রহণের জন্য সুপারিশসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের মতামত প্রেরণ করেছেন, সরকারের কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটিতেও জায়গাটি অধিগ্রহণের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, জেলা প্রশাসক জমির ক্ষতিপূরণ মূল্য বাবদ ডিএমপি কমিশনার বরাবর ২৭ কোটি, ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১০ টাকার প্রাক্কলণ প্রেরণ করেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই টাকার ব্যয় মঞ্জুরি পাওয়া গেছে, জেলা প্রশাসক বরাবর প্রাক্কলিত টাকা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সরেজমিন ডিএমপিকে এই জমির দখলভার হস্তান্তর করেছে। গত ২৭ মার্চ ওই জমির নামজারি ও জমাভাগকরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে।

গতকাল ওই মাঠের পাশের এক দোকানি বলেন, ‘বাপ দাদার আমল থেকে দেখে আসছি এই তেঁতুলতলা মাঠ। এখানে ছেলে-মেয়েরা খেলে। ঈদের জামাত, জানাজা হয়। এখানে কেন থানা স্থাপন করতে হবে? অত্র এলাকায় কি জায়গার অভাব পড়েছে?’

২৪ এপ্রিল খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতা এবং মাঠে থানা নির্মাণে বাধা দেয়ার অভিযোগে ‘তেঁতুলতলা মাঠ সুরক্ষা’ আন্দোলনের সমন্বয়ক সৈয়দা রতœা এবং তার ছেলে পিয়াংসুকে আটক করে পুলিশ। ১৩ ঘণ্টা আটক থাকার পর মুচলেকা দিয়ে সৈয়দা রতœা ও তার ছেলেকে মধ্যরাতে ছেড়ে দেয়া হয়।

এলাকাবাসী বলছেন, পুলিশ জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র ঠেকিয়ে জনগণের অধিকার হরণ করতে চাচ্ছে। একপ্রকারে জোর করে তেঁতুলতলা মাঠে ভবন নির্মাণ করতে চাচ্ছে। সন্ত্রাসী কায়দায় ও জোরজবরদস্তি করে ভবন নির্মাণ করার অনুমতি রাষ্ট্র পুলিশকে নিশ্চয় দেয়নি। যে এলাকার বাসিন্দাদের আইনি সুরক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে থানা নির্মাণ করা হচ্ছে, সে এলাকার মানুষ যদি সেটি না চায় তাহলে এভাবে থানা নির্মাণ করা সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ঠিক হবে না। এটি এখন জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। কলাবাগানবাসীর যৌক্তিক দাবির পক্ষে সবাই একমত পোষণ করবেন বলেও তাদের দাবি।

স্থানীয় বাসিন্দা অনিক বলেন, গত সোমবার ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে এই মাঠে মানববন্ধন করা হয়েছে। সংগঠনের নেতারা মাঠে থানার ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে ও মালামাল নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তারা তা না করে ভবনের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজমিস্ত্রীরা কাজ করে যাচ্ছেন। অনিক বলেন, মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা আজকের (মঙ্গলবার) মধ্যে কাজ বন্ধ করা না হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা এলাকাবাসী তাদের দিকে তাকিয়ে আছি।

রাজমিস্ত্রী মো. বুলবুল বলেন, সকাল ৮টার দিকে তারা কাজে আসেন। ইতোমধ্যে তারা পিলারের রড দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। আজ (বুধবার) থেকে তারা পিলার ঢালাইয়ের কাজ শুরু করবেন। মাঠ রক্ষার আন্দোলনে থাকা সৈয়দা রতœা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি আশাবাদী, এই মাঠটি রক্ষা পাবে। এই মাঠ রক্ষা পেলে আমার আন্দোলন সফল হবে। মাঠটি খোলামেলা থাকুক, এখানে যেন কোন স্থাপনা নির্মাণ না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আমার কিছু চাওয়ার নেই। শিক্ষার্থী কিংবা ছোট বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলা করতে পারবে, এটাই চাই।

বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২ , ১৪ বৈশাখ ১৪২৮ ২৫ রমাদ্বান ১৪৪৩

আন্দোলন-প্রতিবাদের পরও তেঁতুলতলার মাঠে থামেনি থানার নির্মাণ কাজ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

কলাবাগান তেঁতুলতলার মাঠ, একদিকে চলছে থানার নির্মাণ কাজ, অন্যদিকে খেলছে শিশুরা -সংবাদ

গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন, প্রতিবাদের পরও রাজধানীর তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্যরা মাঠে অবস্থান করছেন। নির্মাণ কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, ওপরের নির্দেশ অনুযায়ী তারা এখানে অবস্থান করছেন এবং তদারকি করছেন।

এদিকে, তেঁতুলতলা মাঠে থানা নির্মাণের বিরোধিতা করছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, এখানে থানা নির্মাণ হলে ছেলে-মেয়েরা খেলার জন্য কোন জায়গা পাবে না। আর আশপাশে কোন মাঠ নেই, যেখানে ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা করতে পারে। তেঁতুলতলা মাঠে থানা স্থাপন হলে ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা কিংবা দৌড়াদৌড়ি করা থেকে বঞ্চিত হবে।

গতকাল ওই মাঠে থানার ভবন নির্মাণ নিয়ে ব্যাখ্য দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার থেকে পাঠানে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনস্বার্থে কলাবাগান থানার জন্য ধানমন্ডি মৌজার ০.২০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইনের সব বিধি-বিধান অনুসরণ করা হয়েছে। কলাবাগান থানার জন্য অধিগ্রহণকৃত ০.২০ একর জমি জরিপ অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তি ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন।

মাঠ রক্ষার আন্দোলনে থাকা সৈয়দা রতœা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি আশাবাদী, এই মাঠটি রক্ষা পাবে। এই মাঠ রক্ষা পেলে আমার আন্দোলন সফল হবে’।

পুলিশ বলছে, তেঁতুলতলা মাঠ থেকে কিছু দূরে যে কলাবাগান মাঠ রয়েছে, সেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করার সুযোগ রয়েছে। বিকল্প খেলার মাঠ ব্যবস্থার বিষয়টি ডিএমপির এখতিয়ারভুক্ত নয়। তবে এলাকাবাসী, বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু এসব প্রতিবাদ, বিবৃতি উপেক্ষা করে যেকোন মূল্যে ওই মাঠে থানার ভবন নির্মাণ করতে চায় পুলিশ। কড়া নিরাপওার মধ্যে গতকালও ওই মাঠে ভবনের নির্মাণ কাজ করতে দেখা গেছে রাজমিস্ত্রীদের। তবে থানা নির্মাণের জন্য দেশের প্রচলিত সব আইন-কানুন মেনে সরকার জনস্বার্থে জায়গাটি বরাদ্দ দিয়েছে এবং কোন ব্যক্তির বা সংস্থার জমিতে বেআইনিভাবে থানা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে না মর্মে ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে।

জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলা হয়, কলাবাগান থানার জন্য ওই জমি অধিগ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে, সরকারি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে রাজউকের কোন আপত্তি নেই মর্মে ছাড়পত্র পাওয়া গেছে, জায়গাটির প্রস্তাবিত ভূমি ব্যবহার ‘আরবান রেসিডেন্টসিয়াল জোন’ হিসেবে চিহ্নিত আছে মর্মে নগর উন্নয়নের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে, সরকারের প্রচলিত আইন ও নীতি অনুসরণে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরেরও অনাপত্তি পত্র পাওয়া গেছে, স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য ওই জমিতে এলাকাবাসির নিরাপত্তার সুবিধার্থে স্থায়ীভাবে কলাবাগান থানা স্থাপনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর ডিও লেটার প্রদান করেছেন,

ঢাকা জেলা প্রশাসক সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে ওই জমি অধিগ্রহণের জন্য সুপারিশসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের মতামত প্রেরণ করেছেন, সরকারের কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটিতেও জায়গাটি অধিগ্রহণের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, জেলা প্রশাসক জমির ক্ষতিপূরণ মূল্য বাবদ ডিএমপি কমিশনার বরাবর ২৭ কোটি, ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১০ টাকার প্রাক্কলণ প্রেরণ করেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই টাকার ব্যয় মঞ্জুরি পাওয়া গেছে, জেলা প্রশাসক বরাবর প্রাক্কলিত টাকা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সরেজমিন ডিএমপিকে এই জমির দখলভার হস্তান্তর করেছে। গত ২৭ মার্চ ওই জমির নামজারি ও জমাভাগকরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে।

গতকাল ওই মাঠের পাশের এক দোকানি বলেন, ‘বাপ দাদার আমল থেকে দেখে আসছি এই তেঁতুলতলা মাঠ। এখানে ছেলে-মেয়েরা খেলে। ঈদের জামাত, জানাজা হয়। এখানে কেন থানা স্থাপন করতে হবে? অত্র এলাকায় কি জায়গার অভাব পড়েছে?’

২৪ এপ্রিল খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতা এবং মাঠে থানা নির্মাণে বাধা দেয়ার অভিযোগে ‘তেঁতুলতলা মাঠ সুরক্ষা’ আন্দোলনের সমন্বয়ক সৈয়দা রতœা এবং তার ছেলে পিয়াংসুকে আটক করে পুলিশ। ১৩ ঘণ্টা আটক থাকার পর মুচলেকা দিয়ে সৈয়দা রতœা ও তার ছেলেকে মধ্যরাতে ছেড়ে দেয়া হয়।

এলাকাবাসী বলছেন, পুলিশ জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র ঠেকিয়ে জনগণের অধিকার হরণ করতে চাচ্ছে। একপ্রকারে জোর করে তেঁতুলতলা মাঠে ভবন নির্মাণ করতে চাচ্ছে। সন্ত্রাসী কায়দায় ও জোরজবরদস্তি করে ভবন নির্মাণ করার অনুমতি রাষ্ট্র পুলিশকে নিশ্চয় দেয়নি। যে এলাকার বাসিন্দাদের আইনি সুরক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে থানা নির্মাণ করা হচ্ছে, সে এলাকার মানুষ যদি সেটি না চায় তাহলে এভাবে থানা নির্মাণ করা সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ঠিক হবে না। এটি এখন জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। কলাবাগানবাসীর যৌক্তিক দাবির পক্ষে সবাই একমত পোষণ করবেন বলেও তাদের দাবি।

স্থানীয় বাসিন্দা অনিক বলেন, গত সোমবার ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে এই মাঠে মানববন্ধন করা হয়েছে। সংগঠনের নেতারা মাঠে থানার ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে ও মালামাল নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তারা তা না করে ভবনের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজমিস্ত্রীরা কাজ করে যাচ্ছেন। অনিক বলেন, মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা আজকের (মঙ্গলবার) মধ্যে কাজ বন্ধ করা না হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা এলাকাবাসী তাদের দিকে তাকিয়ে আছি।

রাজমিস্ত্রী মো. বুলবুল বলেন, সকাল ৮টার দিকে তারা কাজে আসেন। ইতোমধ্যে তারা পিলারের রড দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। আজ (বুধবার) থেকে তারা পিলার ঢালাইয়ের কাজ শুরু করবেন। মাঠ রক্ষার আন্দোলনে থাকা সৈয়দা রতœা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি আশাবাদী, এই মাঠটি রক্ষা পাবে। এই মাঠ রক্ষা পেলে আমার আন্দোলন সফল হবে। মাঠটি খোলামেলা থাকুক, এখানে যেন কোন স্থাপনা নির্মাণ না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আমার কিছু চাওয়ার নেই। শিক্ষার্থী কিংবা ছোট বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলা করতে পারবে, এটাই চাই।