কমবে না, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশই হবে : অর্থমন্ত্রী

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ যা-ই বলুক না কেন, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দেয়া হয়েছে। আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৬.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে যা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হবে। এর আগে, বিশ্বব্যাংকও চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির অনুমান কমিয়ে ৬ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল, যেখানে এডিবি সামান্য বাড়িয়ে করেছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশে।

বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনায় কোন কাটছাঁট হতে পারে কি-না এমন প্রশ্নও ছিল অর্থমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। চলতি অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি বহাল থাকবে এবং আমি মনে করি, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী না হয় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে তাহলে প্রাক্কলিত জিডিপি অর্জন সম্ভব হবে।’

দেশে মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে কী করা যায়, তা নিয়ে ভাবছেন অর্থমন্ত্রী তিনি বলেছেন, ‘অর্থনীতি এখন শক্তিশালী অবস্থানে আছে। ইউক্রেন-রুশ যুদ্ধ থেমে গেছে আরও ভালো হবে পরিস্থিতি।’

পণ্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে কোন পদক্ষেপ নেবেন কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘দাম কেন বাড়ছে- তার ব্যাখ্যা আমি আগে দিয়েছি। আমরা সারাবিশ্বের সঙ্গে একীভূত। অনেক দেশের সঙ্গে লেনদেন করতে হয়। কাজেই জিনিসপত্রের দাম একটু তো বাড়বেই। যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্ব এখন অস্থির। আশা করছি, যুদ্ধ থেমে যাবে, বিশ্ব স্থিতিশীল হবে এবং বাংলাদেশে জিনিসপত্রের দাম কমে আসবে।’

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে- এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, যুদ্ধ থেমে যাবে এবং বিশ্ব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এতে দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে।’

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় কোন পরিবর্তন আনা হবে না বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাজেটে ভর্তুকির ওপর কোন চাপ নেই। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি যা ধরা হয়েছে, আমি মনে করি সেটি সহনীয় অবস্থানে থাকবে। যুদ্ধ প্রলম্বিত না হলে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে আশা করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে পণ্যের দাম বেড়েছে এবং তার প্রভাব বাংলাদেশও পড়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যদি কোন বিঘ্ন ঘটে সেটা আমরা এড়াতে পারি না। আমাদের ভাগ করে নিতে হবে। এখন পর্যন্ত রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কোন লক্ষণ নেই। এই মুহূর্তে বিশ্বের জন্য বড় বাধা হচ্ছে এই যুদ্ধ।’

আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনে বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি আর্থিক লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই থাকবে। বাংলাদেশ বৈশ্বিক ব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত হলেও মহান আল্লাহর রহমতে দেশটি এখনো ভালো অবস্থায় রয়েছে। আশা করি, যুদ্ধের অবসান ঘটবে। আমরা এমন আশা নিয়ে এগিয়ে যাব এবং এইভাবে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করব।’

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর দেশের মানুষের জন্য অনাবিল আনন্দ বয়ে আনবে বলেও আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২ , ১৫ বৈশাখ ১৪২৮ ২৬ রমাদ্বান ১৪৪৩

কমবে না, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশই হবে : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ যা-ই বলুক না কেন, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দেয়া হয়েছে। আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৬.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে যা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হবে। এর আগে, বিশ্বব্যাংকও চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির অনুমান কমিয়ে ৬ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল, যেখানে এডিবি সামান্য বাড়িয়ে করেছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশে।

বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনায় কোন কাটছাঁট হতে পারে কি-না এমন প্রশ্নও ছিল অর্থমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। চলতি অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি বহাল থাকবে এবং আমি মনে করি, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী না হয় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে তাহলে প্রাক্কলিত জিডিপি অর্জন সম্ভব হবে।’

দেশে মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে কী করা যায়, তা নিয়ে ভাবছেন অর্থমন্ত্রী তিনি বলেছেন, ‘অর্থনীতি এখন শক্তিশালী অবস্থানে আছে। ইউক্রেন-রুশ যুদ্ধ থেমে গেছে আরও ভালো হবে পরিস্থিতি।’

পণ্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে কোন পদক্ষেপ নেবেন কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘দাম কেন বাড়ছে- তার ব্যাখ্যা আমি আগে দিয়েছি। আমরা সারাবিশ্বের সঙ্গে একীভূত। অনেক দেশের সঙ্গে লেনদেন করতে হয়। কাজেই জিনিসপত্রের দাম একটু তো বাড়বেই। যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্ব এখন অস্থির। আশা করছি, যুদ্ধ থেমে যাবে, বিশ্ব স্থিতিশীল হবে এবং বাংলাদেশে জিনিসপত্রের দাম কমে আসবে।’

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে- এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, যুদ্ধ থেমে যাবে এবং বিশ্ব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এতে দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে।’

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় কোন পরিবর্তন আনা হবে না বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাজেটে ভর্তুকির ওপর কোন চাপ নেই। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি যা ধরা হয়েছে, আমি মনে করি সেটি সহনীয় অবস্থানে থাকবে। যুদ্ধ প্রলম্বিত না হলে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে আশা করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে পণ্যের দাম বেড়েছে এবং তার প্রভাব বাংলাদেশও পড়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যদি কোন বিঘ্ন ঘটে সেটা আমরা এড়াতে পারি না। আমাদের ভাগ করে নিতে হবে। এখন পর্যন্ত রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কোন লক্ষণ নেই। এই মুহূর্তে বিশ্বের জন্য বড় বাধা হচ্ছে এই যুদ্ধ।’

আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনে বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি আর্থিক লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই থাকবে। বাংলাদেশ বৈশ্বিক ব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত হলেও মহান আল্লাহর রহমতে দেশটি এখনো ভালো অবস্থায় রয়েছে। আশা করি, যুদ্ধের অবসান ঘটবে। আমরা এমন আশা নিয়ে এগিয়ে যাব এবং এইভাবে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করব।’

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর দেশের মানুষের জন্য অনাবিল আনন্দ বয়ে আনবে বলেও আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।