ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা লুট

গ্রেপ্তারকৃত দু’জনের স্বীকারোক্তি

অভিনব কৌশলে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে নিজেদের জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

চক্রের গ্রেপ্তারকৃত দুই সদস্য হলোÑ তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আবদুর রহমান বিশ্বাস।

রাজধানীর সেনপাড়া পর্বস্থ ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড ২৮৫২ নম্বর এটিএম বুথসহ মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ২৩১টি বুথ থেকে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের দায়িত্বে থাকা এজাহার নামীয় দুই আসামিসহ প্রতিষ্ঠানের ৯ জন কর্মচারী মিলে প্রতিষ্ঠানে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অভিযুক্ত আসামি তাহমিদ উদ্দিন ও আবদুর রহমান বিশ্বাস গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স হিসেবে চাকরি করত। ডাচ বাংলা ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার এটিএম বুথে টাকা লোডের জন্য গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে বুথের তালিকা ও টাকা লোডের পরিমাণসহ রিকুইজিশন আসত।

অভিযুক্ত ১১ আসামি পর্যায়ক্রমে ২ জন করে একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে এটিএম বুথে তালিকা ও টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেইন্যান্সের ডিউটি করত। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস্ টানজেক্শন করত।

এভাবে ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে এ চক্র মোট দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে কর্তৃপক্ষ গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোস্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।

গার্ডা শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়টি যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আবদুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কর্মচারী কর্তৃক টাকা আতœসাতের সত্যতা পায়। গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আবদুর আলম বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত দুজনের বিরুদ্ধে গত ৬ মাচ-২০২২ রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

কাফরুল থানা পুলিশ মামলাটি প্রথমে এক মাস তদন্ত করেন। তারা এজাহারভুক্ত আসামিসহ আরও ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। তাদের তদন্ত পর্যায়ে পুলিশ হেডকোাটার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে পিবিআইকে দেয়া হয়।

পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলমের তদারকিতে গ্রেপ্তারকৃত আসামি তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আবদুর রহমান বিশ্বাসকে আদালত থেকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে।

আসামিরাসহ একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, মিস্টার আলী, রবিউল হাসান, আবদুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম, শিশির কুমার একই উদ্দেশে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ডাচ-বাংলা লিমিটেডের এটিএম বুথসমূহে টাকা লোড দিয়ে নিজেও আত্মীয়-স্বজনদের নামে ইস্যুকৃত এটিএম কার্ড দিয়ে ফলস্ ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেয়াসহ বুথের পার্চবিনে (রিজেক্ট বক্স) পাওয়া টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিত।

গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময় দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটি এখনও তদন্ত পর্যায়ে আছে।

বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২ , ১৫ বৈশাখ ১৪২৮ ২৬ রমাদ্বান ১৪৪৩

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা লুট

গ্রেপ্তারকৃত দু’জনের স্বীকারোক্তি

অভিনব কৌশলে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে নিজেদের জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

চক্রের গ্রেপ্তারকৃত দুই সদস্য হলোÑ তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আবদুর রহমান বিশ্বাস।

রাজধানীর সেনপাড়া পর্বস্থ ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড ২৮৫২ নম্বর এটিএম বুথসহ মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ২৩১টি বুথ থেকে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের দায়িত্বে থাকা এজাহার নামীয় দুই আসামিসহ প্রতিষ্ঠানের ৯ জন কর্মচারী মিলে প্রতিষ্ঠানে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অভিযুক্ত আসামি তাহমিদ উদ্দিন ও আবদুর রহমান বিশ্বাস গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স হিসেবে চাকরি করত। ডাচ বাংলা ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার এটিএম বুথে টাকা লোডের জন্য গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে বুথের তালিকা ও টাকা লোডের পরিমাণসহ রিকুইজিশন আসত।

অভিযুক্ত ১১ আসামি পর্যায়ক্রমে ২ জন করে একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে এটিএম বুথে তালিকা ও টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেইন্যান্সের ডিউটি করত। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস্ টানজেক্শন করত।

এভাবে ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে এ চক্র মোট দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে কর্তৃপক্ষ গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোস্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।

গার্ডা শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়টি যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আবদুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কর্মচারী কর্তৃক টাকা আতœসাতের সত্যতা পায়। গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আবদুর আলম বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত দুজনের বিরুদ্ধে গত ৬ মাচ-২০২২ রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

কাফরুল থানা পুলিশ মামলাটি প্রথমে এক মাস তদন্ত করেন। তারা এজাহারভুক্ত আসামিসহ আরও ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। তাদের তদন্ত পর্যায়ে পুলিশ হেডকোাটার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকে পিবিআইকে দেয়া হয়।

পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলমের তদারকিতে গ্রেপ্তারকৃত আসামি তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আবদুর রহমান বিশ্বাসকে আদালত থেকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে।

আসামিরাসহ একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, মিস্টার আলী, রবিউল হাসান, আবদুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম, শিশির কুমার একই উদ্দেশে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ডাচ-বাংলা লিমিটেডের এটিএম বুথসমূহে টাকা লোড দিয়ে নিজেও আত্মীয়-স্বজনদের নামে ইস্যুকৃত এটিএম কার্ড দিয়ে ফলস্ ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেয়াসহ বুথের পার্চবিনে (রিজেক্ট বক্স) পাওয়া টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিত।

গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময় দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটি এখনও তদন্ত পর্যায়ে আছে।