তুচ্ছ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়েছে আ’লীগ নেতা

বরগুনায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। গত ২৩ এপ্রিল সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটলে গত ২৭ এপ্রিল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।।

এ ঘটনায় গত ২৭ এপ্রিল বুধবার ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বারের বড় ছেলে রিপন মিয়া বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করলে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বারের ছোট ছেলে জহিরুল ইসলামের ক্ষেতের মুগডাল ইচ্ছাকৃতভাবে গরুকে খাওয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল। জহিরুলের ছেলে ছোটন প্রতিবাদ করে আউয়ালকে গালিগালাজ করেন। এতে আউয়াল ক্ষিপ্ত হন। একই দিন বিকেলে আউয়াল বীর মুক্তিযোদ্ধা জব্বারকে তার বাড়িতে ডাকেন। এরপর উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে আউয়াল উত্তেজিত হয়ে জব্বারকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন এবং শরীরের অন্যান্য জায়গায় পেটাতে থাকেন।

এ সময় হারুন ও আউয়ালের স্ত্রী চম্পা এসে কোদাল নিয়ে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার পায়ে কোপ দেন। এরপর স্বজনরা এসে জব্বারকে উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর গত বুধবার জব্বারের ছেলে বাদী হয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের আয়লা পাতাকাটা গ্রামের বাসিন্দা। মামলার আসামিরা হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা গ্রামের মৃত সেকান্দার আলীর ছেলে আউয়াল হোসেন, সোহরাফ হাওলাদারের ছেলে হারুন ও আউয়ালের স্ত্রী চম্পা। অভিযুক্ত আউয়াল হোসেন পাতাকাটা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক কিসলু বলেন, আজ বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট তলব সাপেক্ষে আগামী ২২ মে আদেশের জন্য রেখেছেন বিজ্ঞ বিচারক মাহাবুব আলম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার বলেন, তিনি একাত্তর সালে সম্মুখযুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। আজ তার বয়স ৭৫ বছর । আউয়াল ও তার লোকজন তুচ্ছ ঘটনায় তাকে হত্যা করার জন্য কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছে। তিনি বরগুনা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি সাহেব বলেন আপসে যেতে। তাই পরে আদালতে মামলা করেছে তার ছেলে।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল হোসেন ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, সে তাকে (জব্বার) মারেনি। ছোট ছোট ছেলেদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। তারা আপস-মীমাংসায় যেতে চান।

বরগুনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, যে মামলা করতে এসেছিল সে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নাবালক। আমি বলেছিলাম আপস হলে ভালো হয়। পরে তাদের পক্ষ থেকে কেউ আর থানায় আসেনি।

বরগুনা : আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন—

শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল ২০২২ , ১৬ বৈশাখ ১৪২৮ ২৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

তুচ্ছ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়েছে আ’লীগ নেতা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরগুনা

বরগুনায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। গত ২৩ এপ্রিল সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটলে গত ২৭ এপ্রিল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।।

এ ঘটনায় গত ২৭ এপ্রিল বুধবার ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বারের বড় ছেলে রিপন মিয়া বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করলে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বারের ছোট ছেলে জহিরুল ইসলামের ক্ষেতের মুগডাল ইচ্ছাকৃতভাবে গরুকে খাওয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল। জহিরুলের ছেলে ছোটন প্রতিবাদ করে আউয়ালকে গালিগালাজ করেন। এতে আউয়াল ক্ষিপ্ত হন। একই দিন বিকেলে আউয়াল বীর মুক্তিযোদ্ধা জব্বারকে তার বাড়িতে ডাকেন। এরপর উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে আউয়াল উত্তেজিত হয়ে জব্বারকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন এবং শরীরের অন্যান্য জায়গায় পেটাতে থাকেন।

এ সময় হারুন ও আউয়ালের স্ত্রী চম্পা এসে কোদাল নিয়ে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার পায়ে কোপ দেন। এরপর স্বজনরা এসে জব্বারকে উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর গত বুধবার জব্বারের ছেলে বাদী হয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের আয়লা পাতাকাটা গ্রামের বাসিন্দা। মামলার আসামিরা হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা গ্রামের মৃত সেকান্দার আলীর ছেলে আউয়াল হোসেন, সোহরাফ হাওলাদারের ছেলে হারুন ও আউয়ালের স্ত্রী চম্পা। অভিযুক্ত আউয়াল হোসেন পাতাকাটা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক কিসলু বলেন, আজ বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট তলব সাপেক্ষে আগামী ২২ মে আদেশের জন্য রেখেছেন বিজ্ঞ বিচারক মাহাবুব আলম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার বলেন, তিনি একাত্তর সালে সম্মুখযুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। আজ তার বয়স ৭৫ বছর । আউয়াল ও তার লোকজন তুচ্ছ ঘটনায় তাকে হত্যা করার জন্য কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছে। তিনি বরগুনা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি সাহেব বলেন আপসে যেতে। তাই পরে আদালতে মামলা করেছে তার ছেলে।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল হোসেন ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, সে তাকে (জব্বার) মারেনি। ছোট ছোট ছেলেদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। তারা আপস-মীমাংসায় যেতে চান।

বরগুনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, যে মামলা করতে এসেছিল সে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নাবালক। আমি বলেছিলাম আপস হলে ভালো হয়। পরে তাদের পক্ষ থেকে কেউ আর থানায় আসেনি।

বরগুনা : আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন—