ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অনিয়মের কারণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম উপজেলার খলাপাড়া, চানপুর, আজমপুর, মনিয়ন্দ, ঘাগুটিয়া ও কর্মমঠ এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ সরজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি কাজের ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় ৮৮ টি ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
একাধিক সূত্র জানায়, প্রকল্পের জায়গা নির্ধারণ থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই নানা অনিয়ম করা হয়েছে। ৩০-৪০ হাজার টাকা শতকের জায়গা এক থেকে দেড় লাখ টাকা শতক করে কিনেছেন। একটি টিলা কিনে টিলা কেটে কয়েক লাখ টাকার মাটি বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ঠিকাদার নুরুজ্জামান ভূঁইয়াকে দেয়া হয় ১৬৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরো কাজের তদারকি করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমানা আক্তার। তিনি যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে কাজ করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আপত্তি করলেও ইউএনও’র কারণে তিনি কোনোভাবেই কুলিয়ে উঠতে পারেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরে এরই মধ্যেই পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেন জেলা প্রশাসক। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম সরেজমিন উপজেলার খলাপাড়া, চানপুর, আজমপুর, মনিয়ন্দ, ঘাগুটিয়া ও কর্মমঠ এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ সরজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক রাজমিস্ত্রী ও রাজমিস্ত্রীর সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে যান। পরিদর্শনকালে তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজে অনিয়ম দেখতে পান। বেশি অনিয়ম দেখতে পান খলাপাড়া ও ঘাগুটিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে। অনিয়ম দেখে তিনি তার সঙ্গে থাকা রাজমিস্ত্রী ও রাজমিস্ত্রীর জোগালিকে কিছু কিছু ভবনের অংশ ভাঙতে বলেন। এ সময় ভবনগুলোতে নির্ধারিত রড না দেয়াসহ নানা অনিয়ম বেরিয়ে আসে। এ সময় জেলা প্রশাসক ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলার কর্মমঠ, খলাপাড়াসহ ছয়টি প্রকল্পের মোট ৮৮টি ঘর নির্মাণে অনিয়ম পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসক নিম্নমানের কাজ হওয়ায় তিনি উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) অফিসার রোমানা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তীকে ভর্ৎসনা করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোমানা আক্তার বলেন, কিছু কাজে অনিয়ম হওয়ায় জেলা প্রশাসক কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ঠিকাদার নুরুজ্জামান ভূইয়াকে ১৬৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম সাংবাদিকদের জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে কোনো কর্মকর্তার অনিয়ম গাফিলতি পাওয়া গেলে প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আখাউড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮৮টি ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২ , ১৭ বৈশাখ ১৪২৮ ২৮ রমাদ্বান ১৪৪৩
জেলা বার্তা পরিবেশক, ব্রাক্ষণবাড়িয়া
ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অনিয়মের কারণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম উপজেলার খলাপাড়া, চানপুর, আজমপুর, মনিয়ন্দ, ঘাগুটিয়া ও কর্মমঠ এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ সরজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি কাজের ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় ৮৮ টি ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
একাধিক সূত্র জানায়, প্রকল্পের জায়গা নির্ধারণ থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই নানা অনিয়ম করা হয়েছে। ৩০-৪০ হাজার টাকা শতকের জায়গা এক থেকে দেড় লাখ টাকা শতক করে কিনেছেন। একটি টিলা কিনে টিলা কেটে কয়েক লাখ টাকার মাটি বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ঠিকাদার নুরুজ্জামান ভূঁইয়াকে দেয়া হয় ১৬৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরো কাজের তদারকি করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমানা আক্তার। তিনি যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে কাজ করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আপত্তি করলেও ইউএনও’র কারণে তিনি কোনোভাবেই কুলিয়ে উঠতে পারেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরে এরই মধ্যেই পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেন জেলা প্রশাসক। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম সরেজমিন উপজেলার খলাপাড়া, চানপুর, আজমপুর, মনিয়ন্দ, ঘাগুটিয়া ও কর্মমঠ এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ সরজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক রাজমিস্ত্রী ও রাজমিস্ত্রীর সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে যান। পরিদর্শনকালে তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজে অনিয়ম দেখতে পান। বেশি অনিয়ম দেখতে পান খলাপাড়া ও ঘাগুটিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে। অনিয়ম দেখে তিনি তার সঙ্গে থাকা রাজমিস্ত্রী ও রাজমিস্ত্রীর জোগালিকে কিছু কিছু ভবনের অংশ ভাঙতে বলেন। এ সময় ভবনগুলোতে নির্ধারিত রড না দেয়াসহ নানা অনিয়ম বেরিয়ে আসে। এ সময় জেলা প্রশাসক ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলার কর্মমঠ, খলাপাড়াসহ ছয়টি প্রকল্পের মোট ৮৮টি ঘর নির্মাণে অনিয়ম পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসক নিম্নমানের কাজ হওয়ায় তিনি উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) অফিসার রোমানা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তীকে ভর্ৎসনা করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোমানা আক্তার বলেন, কিছু কাজে অনিয়ম হওয়ায় জেলা প্রশাসক কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ঠিকাদার নুরুজ্জামান ভূইয়াকে ১৬৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম সাংবাদিকদের জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে কোনো কর্মকর্তার অনিয়ম গাফিলতি পাওয়া গেলে প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আখাউড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮৮টি ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।