পোশাকের দাম বেশি : কাক্সিক্ষত বিকিকিনি কমে হতাশ ব্যবসায়ী

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় বন্দর পাটগাতী বাজার। করোনা ভাইরাসের কারণে গত দু’বছর ঈদে বিধি নিষেধ ভঙ্গ করে বেচা বিক্রি করেছেন এ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এবছর করোনা মহামারি কমেছে। তাই সরকারি কোন বিধি নিষেধ নেই। তাই লাভের আশায় দোকানে বেশি বেশি পণ্য তুলেছেন। ২৭ রমজান পার হলেও কাক্সিক্ষত বেচাকেনা নেই পাটগাতি বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ব্যবসায়ীদের দাবি ক্রেতা থাকলেও বেচাকেনা নেই।

সরজমিনে পাটগাতি বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের বেশ ভিড় থাকলেও বেচাবিক্রি কম। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে বিক্রেতারা নতুন নতুন ডিজাইনের থ্রিপিচ, সাড়ারা, গাড়ারা, ল্যাহেঙ্গা, শাড়ি, পাঞ্জাবি, সাজিয়ে রেখেছেন। ক্রেতাদের নতুন ডিজাইনের পোশাক দেখাতে ব্যস্ত বিক্রেতারা। শাড়ির দোকানের কর্মচারীরা ক্রেতাদের আকর্ষিত করতে নিজেরা শাড়ি পড়ে দেখাচ্ছেন। তবে অনেক ক্রেতা দামাদামি করে না কিনেই চলে যাচ্ছেন। এতে বেশ হতাশ ব্যবসায়ীরা। কাপড়ের দাম বাড়ায় কাঙ্খিত বেচাকেনা হচ্ছে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

মোল্লা মার্কেটের ব্যবসায়ী রিপন মুন্সী বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ঈদে ভালো ব্যবসা করতে পারিনি। তাই এ ঈদে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে দোকানে অনেক নতুন ডিজাইনের অনেক পোষাক রাখা হয়েছে। ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি। তারপরও কাঙ্খিত বেচাকেনা নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে ৬০ ভাগ পণ্য অবিক্রিত থেকে যাবে।

ব্যবসায়ী কামাল শেখ, সৈকত শেখ, শিবু সাহা, উজ্জল মন্ডল সহ অনেকে জানান, জামা কাপড় কিনতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়ায় অনেকে দামাদামি করে না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। প্রতিটি দোকানেই লাখ লাখ টাকার নতুন নতুন পণ্য আনা হয়েছে। কিন্তু বেচাকেনা খুবই কম। এ বছরের চেয়ে গত দুই বছর ঈদে আরো ভালো বেচা বিক্রি করেছি। আশা করি চাঁদ রাতে ভালো বেচাকেনা হবে।

পাটগাতী বাজারের দোকানি লাবনী আক্তার বলেন, ঈদ উপলক্ষে এবার ২৫-৩০ লাখ টাকার নতুন শাড়ি কাপড় এনেছি। কিন্তু বেচাকেনা খুবই কম। মূলত যারা গ্রামের বাজার থেকে ঈদের কেনাকাটা করত তারা এখন গোপালগঞ্জ ও খুলনা থেকে কেনাকাটা করছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে ব্যবসায়ীরা এবার লাভের মুখ তো দেখবেই না উল্টো লোকসানে পরবে।

কেনাকাটা করতে আসা মিতা খানম জানান, প্রতিটি দোকানেই আকর্ষণীয় শাড়ি কাপড় রয়েছে। কিন্তু দাম খুবই বাড়তি। এসব শাড়ি কাপড় পছন্দ হলেও আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই না কিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে।

পাটগাতী বাজারে বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম অপু বলেন, বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জেনেছি পর্যাপ্ত ক্রেতা থাকলেও বেচাকেনা নেই। টুঙ্গিপাড়ার পার্শ্ববর্তী চিতলমারী, নাজিরপুর, মোল্লাহাট থেকে ব্যাপক সংখ্যক ক্রেতারা পাটগাতী বাজারে কেনাকাটা করতে আসতো। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় তারা এখন বাগেরহাট-পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ ও খুলনা থেকে কেনাকাটা করছে। এ কারণেই বিক্রেতারা কাক্সিক্ষত বেচাকেনা করতে পারছে না।

শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২ , ১৭ বৈশাখ ১৪২৮ ২৮ রমাদ্বান ১৪৪৩

পোশাকের দাম বেশি : কাক্সিক্ষত বিকিকিনি কমে হতাশ ব্যবসায়ী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ

image

গোপালগঞ্জ : টুঙ্গিপাড়ায় কাপড়ের দোকানে ক্রেতার ভিড় থাকলেও বেচাকেনা কম। হতাশ ব্যবসায়ীরা -সংবাদ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় বন্দর পাটগাতী বাজার। করোনা ভাইরাসের কারণে গত দু’বছর ঈদে বিধি নিষেধ ভঙ্গ করে বেচা বিক্রি করেছেন এ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এবছর করোনা মহামারি কমেছে। তাই সরকারি কোন বিধি নিষেধ নেই। তাই লাভের আশায় দোকানে বেশি বেশি পণ্য তুলেছেন। ২৭ রমজান পার হলেও কাক্সিক্ষত বেচাকেনা নেই পাটগাতি বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ব্যবসায়ীদের দাবি ক্রেতা থাকলেও বেচাকেনা নেই।

সরজমিনে পাটগাতি বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের বেশ ভিড় থাকলেও বেচাবিক্রি কম। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে বিক্রেতারা নতুন নতুন ডিজাইনের থ্রিপিচ, সাড়ারা, গাড়ারা, ল্যাহেঙ্গা, শাড়ি, পাঞ্জাবি, সাজিয়ে রেখেছেন। ক্রেতাদের নতুন ডিজাইনের পোশাক দেখাতে ব্যস্ত বিক্রেতারা। শাড়ির দোকানের কর্মচারীরা ক্রেতাদের আকর্ষিত করতে নিজেরা শাড়ি পড়ে দেখাচ্ছেন। তবে অনেক ক্রেতা দামাদামি করে না কিনেই চলে যাচ্ছেন। এতে বেশ হতাশ ব্যবসায়ীরা। কাপড়ের দাম বাড়ায় কাঙ্খিত বেচাকেনা হচ্ছে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

মোল্লা মার্কেটের ব্যবসায়ী রিপন মুন্সী বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ঈদে ভালো ব্যবসা করতে পারিনি। তাই এ ঈদে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে দোকানে অনেক নতুন ডিজাইনের অনেক পোষাক রাখা হয়েছে। ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি। তারপরও কাঙ্খিত বেচাকেনা নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে ৬০ ভাগ পণ্য অবিক্রিত থেকে যাবে।

ব্যবসায়ী কামাল শেখ, সৈকত শেখ, শিবু সাহা, উজ্জল মন্ডল সহ অনেকে জানান, জামা কাপড় কিনতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়ায় অনেকে দামাদামি করে না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। প্রতিটি দোকানেই লাখ লাখ টাকার নতুন নতুন পণ্য আনা হয়েছে। কিন্তু বেচাকেনা খুবই কম। এ বছরের চেয়ে গত দুই বছর ঈদে আরো ভালো বেচা বিক্রি করেছি। আশা করি চাঁদ রাতে ভালো বেচাকেনা হবে।

পাটগাতী বাজারের দোকানি লাবনী আক্তার বলেন, ঈদ উপলক্ষে এবার ২৫-৩০ লাখ টাকার নতুন শাড়ি কাপড় এনেছি। কিন্তু বেচাকেনা খুবই কম। মূলত যারা গ্রামের বাজার থেকে ঈদের কেনাকাটা করত তারা এখন গোপালগঞ্জ ও খুলনা থেকে কেনাকাটা করছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে ব্যবসায়ীরা এবার লাভের মুখ তো দেখবেই না উল্টো লোকসানে পরবে।

কেনাকাটা করতে আসা মিতা খানম জানান, প্রতিটি দোকানেই আকর্ষণীয় শাড়ি কাপড় রয়েছে। কিন্তু দাম খুবই বাড়তি। এসব শাড়ি কাপড় পছন্দ হলেও আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই না কিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে।

পাটগাতী বাজারে বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম অপু বলেন, বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জেনেছি পর্যাপ্ত ক্রেতা থাকলেও বেচাকেনা নেই। টুঙ্গিপাড়ার পার্শ্ববর্তী চিতলমারী, নাজিরপুর, মোল্লাহাট থেকে ব্যাপক সংখ্যক ক্রেতারা পাটগাতী বাজারে কেনাকাটা করতে আসতো। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় তারা এখন বাগেরহাট-পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ ও খুলনা থেকে কেনাকাটা করছে। এ কারণেই বিক্রেতারা কাক্সিক্ষত বেচাকেনা করতে পারছে না।