মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তান বাহিনীর হামলা পাল্টা হামলা চলছে

একাত্তরের ৩০ এপ্রিল সারাদেশে পাকিস্তান বাহিনীর হামলা ও মুক্তিবাহিনীর পাল্টা হামলা অব্যাহত থাকে। অনেক স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে।

একাত্তরের এ দিনে মুক্তিবাহিনী প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম.এ.জি.ওসমানী রামগড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি পরিদর্শন করেন এবং চট্টগ্রামের খবরাখবর নেন। পরিদর্শন শেষে তিনি সেখানে মীর শওকত আলীকে যেকোনভাবে অন্তত আরও দু’দিন রামগড়কে মুক্ত রাখার নির্দেশ দেন, যাতে নিরীহ জনতাসহ সবাই নিরাপদে ভারতে আশ্রয় নিতে পারে।

অমরখানার কাছে মাগুরামারীতে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর ১০ জন যোদ্ধার একটি ছোট দলের ওপর পাকিস্তান বাহিনী আকস্মিক আক্রমণ চালায়। এতে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং অন্য ২ জন মুক্তিযোদ্ধা গুরুতরভাবে আহত হয়।

চট্টগ্রামের চিকনছড়া নামক স্থানে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনী ওপর পাকিস্তান বাহিনী অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে বাগানবাড়ি নামক স্থানে এসে অবস্থান নেয়।

এ দিকে এ দিনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী বি.পি কৈরালা কাঠমুন্ডুতে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনসাধারণের অবস্থার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামীরা জয়ী হবেনই।

ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, স্বাভাবিক কৃষিকাজে হস্তক্ষেপ করা হলে কঠোর শাস্তিদান করা হবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া খাজনা পরিশোধ করতে হবে।

এদিকে আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত সেন্টো সম্মেলনে পাকিস্তানি প্রতিনিধি ইফতেখার আলী মুক্তিযুদ্ধকে ভারতীয় চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেন।

লিবিয়ার নেতা কর্নেল গাদ্দাফী ত্রিপোলীতে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আবদুর রউফ খানকে জানান, পাকিস্তানের ঐক্য বজায় রাখার জন্য জন্যে ইয়াহিয়া খান সঠিক ব্যবস্থাই নিয়েছেন।

এদিকে এ দিনে সিলেট শান্তি কমিটির আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আবদুল জলিল সিলেট বেতারকেন্দ্র থেকে প্রদত্ত ভাষণে জনগণের প্রতি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করার আহ্বান জানান।

খুলনার দৌলতপুরের দিয়ানায় সবুর খানের সভাপতিত্বে শান্তি কমিটির সভা হয়। সভায় সবুর খান খুলনাবাসীকে দেশদ্রোহীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

এদিনে রংপুরে স্বাধীনতাবিরোধীরা একটি মিছিল বের করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জাতীয় পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আমিন।

শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২ , ১৭ বৈশাখ ১৪২৮ ২৮ রমাদ্বান ১৪৪৩

৩০ এপ্রিল ১৯৭১

মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তান বাহিনীর হামলা পাল্টা হামলা চলছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

একাত্তরের ৩০ এপ্রিল সারাদেশে পাকিস্তান বাহিনীর হামলা ও মুক্তিবাহিনীর পাল্টা হামলা অব্যাহত থাকে। অনেক স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে।

একাত্তরের এ দিনে মুক্তিবাহিনী প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম.এ.জি.ওসমানী রামগড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি পরিদর্শন করেন এবং চট্টগ্রামের খবরাখবর নেন। পরিদর্শন শেষে তিনি সেখানে মীর শওকত আলীকে যেকোনভাবে অন্তত আরও দু’দিন রামগড়কে মুক্ত রাখার নির্দেশ দেন, যাতে নিরীহ জনতাসহ সবাই নিরাপদে ভারতে আশ্রয় নিতে পারে।

অমরখানার কাছে মাগুরামারীতে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর ১০ জন যোদ্ধার একটি ছোট দলের ওপর পাকিস্তান বাহিনী আকস্মিক আক্রমণ চালায়। এতে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং অন্য ২ জন মুক্তিযোদ্ধা গুরুতরভাবে আহত হয়।

চট্টগ্রামের চিকনছড়া নামক স্থানে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনী ওপর পাকিস্তান বাহিনী অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে বাগানবাড়ি নামক স্থানে এসে অবস্থান নেয়।

এ দিকে এ দিনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী বি.পি কৈরালা কাঠমুন্ডুতে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনসাধারণের অবস্থার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামীরা জয়ী হবেনই।

ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, স্বাভাবিক কৃষিকাজে হস্তক্ষেপ করা হলে কঠোর শাস্তিদান করা হবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া খাজনা পরিশোধ করতে হবে।

এদিকে আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত সেন্টো সম্মেলনে পাকিস্তানি প্রতিনিধি ইফতেখার আলী মুক্তিযুদ্ধকে ভারতীয় চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেন।

লিবিয়ার নেতা কর্নেল গাদ্দাফী ত্রিপোলীতে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আবদুর রউফ খানকে জানান, পাকিস্তানের ঐক্য বজায় রাখার জন্য জন্যে ইয়াহিয়া খান সঠিক ব্যবস্থাই নিয়েছেন।

এদিকে এ দিনে সিলেট শান্তি কমিটির আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আবদুল জলিল সিলেট বেতারকেন্দ্র থেকে প্রদত্ত ভাষণে জনগণের প্রতি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করার আহ্বান জানান।

খুলনার দৌলতপুরের দিয়ানায় সবুর খানের সভাপতিত্বে শান্তি কমিটির সভা হয়। সভায় সবুর খান খুলনাবাসীকে দেশদ্রোহীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

এদিনে রংপুরে স্বাধীনতাবিরোধীরা একটি মিছিল বের করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জাতীয় পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আমিন।