সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ঈদের আনন্দ নির্বিঘœ করাসহ ছুটিকালীন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ করতে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত করা জাতীয় ঈদগা মাঠসহ সারাদেশের ঈদগাগুলোতে নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে পুলিশ ও র‌্যাবের বিশেষ টিম। রাজধানীসহ সারাদেশে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ যেকোন ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে ইতোমধ্যে গোয়েন্দা নজদারি বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে থানা পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, আনসার, এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থপনায় নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিভাগীয় পুলিশ জেলা পুলিশ এবং মেট্রোপলিটন পুলিশকে নিরাপত্তা ছক সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে। চুরি, ডাকাতি ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতারোধে নজরদারির পাশাপাশি ঈদের ছুটে মানুষ যাতে নির্বিগ্নে যাতায়াত করতে পারে সে জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। বিশেষ কারণ ছাড়া পুলিশ বা র‌্যাবের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঈদ কাটবে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কার্যক্রমে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঈদে পর্যটন এলাকায় অনেকে ছুটি কাটাতে যান। এ জন্য পর্যটন এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা কাজ করবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। হাইওয়েতে ডাকাতি ছিনতাই, দুর্ঘটনা এড়াতে কাজ করবে হাইওয়ে পুলিশ। লঞ্চ দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত যাত্রীবহন ঠেকাতে কাজ করবে নৌ-পুলিশ। রেলপথে যাত্রা নির্বিগ্ন করতে, অজ্ঞান ও মলম পার্টির খপ্পর থেকে যাত্রীদের রক্ষায় কাজ করবে রেল পুলিশ। এছাড়া মেট্রোপলিটন শহরগুলো মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পর্যায়ে জেলা পুলিশ কাজ করবে। এর পাশাপাশি এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ পুলিশের সব গোয়েন্দা ইউনিটগুলোতে তৎপর থাকবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা বলছেন, ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ থাকে রাজধানী ঢাকাকে অপরাধমুক্ত রাখা। ঈদের ছুটিতে এক তৃতীয়াংশ পরিবার ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়িতে যায়। এ সময় রাজধানী হয়ে পড়ে ফাঁকা। ফাঁকা রাজধানীতে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির প্রবণতা বেড়ে যায়।

কূটনৈতিক জোনসহ বিআইপি এলাকায় সব ধরনের অপরাধ ঠেকাতে এবং যেকোন ধরনের নাশকতা ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখে ডিএমপি। ডিএমপির ৩১ হাজার ফোর্স ঈদ নিরাপত্তা রাজধানীতে সক্রিয় থাকবে। প্রতিটি ক্রাইম জোনে থানা পুলিশের পাশাপাশি থাকবে গোয়েন্দাদের নজরদারি।

অন্যদিকে সারাদেশে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিগ্ন করতে বাস ও ট্রেন স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাটে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নৌ-পুলিশ, রেল পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, র‌্যাব একযোগে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিগ্ন করতে নিরাপত্তা দিচ্ছে। সড়ক মহাসড়কে দুর্ঘটনা, ডাকাতি প্রতিরোধে মোতায়েন রয়েছেন হাইওয়ে পুলিশ। নদী পথে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল ঠেকাকে নৌ-পুলিশ কাজ করছে। অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টি, ছিনতাকারীদের তৎপরতা বন্ধে তল্লাশি, সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং এবং চেক পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।

সারাদেশে নিরাপত্তা পুলিশ সদর দপ্তর মনিটরিং রাখবে :

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঈদের আগ থেকে শুরু করে ঈটের ছুটি শেষ হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে নিরাপত্তা যাতে ঠিক থাকে এজন্য পুলিশ সদর দপ্তর মনিটরিং করবে। ঈদের জামাত যেসব ঈদগা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে জেলা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা :

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন র‌্যাব ঈদে আগে ও ঈদ পরবর্তী ছুটিকালীন সময়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড মোতায়েন থাকবে জাতীয় ঈদগাসহ দেশের সব ঈদগার ঈদের নামাজের নিরাপত্তায়। এছাড়া ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিগ্ন করতে র‌্যাবের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম স্থাপনের মাধ্যমে মনিটরিং ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সারাদেশে র‌্যাবের সদস্যরা আগামী ১০ দিনে টহলে থাকবেন সড়ক মহাসড়ক এবং পাড়া-মহল্লায়।

জাতীয় ঈদগা মাঠে এবার ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলেও জাতীয় ঈদগা মাঠে ঈদের জামাতে অংশ নিবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতিসহ দেশের বিশিষ্টজনরা। এজন্য জাতীয় ঈদগা মাঠে ঈদের জামাতকে ঘিরে ১০ হাজার র‌্যাব পুলিশ মোতায়েন থাকবে। থাকবে র‌্যাব ও পুলিশ ডগ স্কোয়াড। আকাশপথেও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

২০১৬ সালে ঈদগা মাঠে জঙ্গি হামলা চেষ্টার বিষয়টি মাথায় রেখে এবারও দেশের সবচেয় বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়া শোলাকিয়া ঈদগা মাঠের নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো হয়েছে। ঈদ মাঠের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। যেকোন ধরনের নাশকতা ঠেকাতে র‌্যাবও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে শোলাকিয়া ঈদগা মাঠের নিরাপত্তায়।

রবিবার, ০১ মে ২০২২ , ১৮ বৈশাখ ১৪২৮ ২৯ রমাদ্বান ১৪৪৩

ঈদের ছুটি

সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঈদের আনন্দ নির্বিঘœ করাসহ ছুটিকালীন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ করতে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত করা জাতীয় ঈদগা মাঠসহ সারাদেশের ঈদগাগুলোতে নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে পুলিশ ও র‌্যাবের বিশেষ টিম। রাজধানীসহ সারাদেশে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ যেকোন ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে ইতোমধ্যে গোয়েন্দা নজদারি বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে থানা পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, আনসার, এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থপনায় নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিভাগীয় পুলিশ জেলা পুলিশ এবং মেট্রোপলিটন পুলিশকে নিরাপত্তা ছক সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে। চুরি, ডাকাতি ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতারোধে নজরদারির পাশাপাশি ঈদের ছুটে মানুষ যাতে নির্বিগ্নে যাতায়াত করতে পারে সে জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। বিশেষ কারণ ছাড়া পুলিশ বা র‌্যাবের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঈদ কাটবে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কার্যক্রমে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঈদে পর্যটন এলাকায় অনেকে ছুটি কাটাতে যান। এ জন্য পর্যটন এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা কাজ করবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। হাইওয়েতে ডাকাতি ছিনতাই, দুর্ঘটনা এড়াতে কাজ করবে হাইওয়ে পুলিশ। লঞ্চ দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত যাত্রীবহন ঠেকাতে কাজ করবে নৌ-পুলিশ। রেলপথে যাত্রা নির্বিগ্ন করতে, অজ্ঞান ও মলম পার্টির খপ্পর থেকে যাত্রীদের রক্ষায় কাজ করবে রেল পুলিশ। এছাড়া মেট্রোপলিটন শহরগুলো মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পর্যায়ে জেলা পুলিশ কাজ করবে। এর পাশাপাশি এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ পুলিশের সব গোয়েন্দা ইউনিটগুলোতে তৎপর থাকবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা বলছেন, ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ থাকে রাজধানী ঢাকাকে অপরাধমুক্ত রাখা। ঈদের ছুটিতে এক তৃতীয়াংশ পরিবার ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়িতে যায়। এ সময় রাজধানী হয়ে পড়ে ফাঁকা। ফাঁকা রাজধানীতে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির প্রবণতা বেড়ে যায়।

কূটনৈতিক জোনসহ বিআইপি এলাকায় সব ধরনের অপরাধ ঠেকাতে এবং যেকোন ধরনের নাশকতা ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখে ডিএমপি। ডিএমপির ৩১ হাজার ফোর্স ঈদ নিরাপত্তা রাজধানীতে সক্রিয় থাকবে। প্রতিটি ক্রাইম জোনে থানা পুলিশের পাশাপাশি থাকবে গোয়েন্দাদের নজরদারি।

অন্যদিকে সারাদেশে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিগ্ন করতে বাস ও ট্রেন স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাটে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নৌ-পুলিশ, রেল পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, র‌্যাব একযোগে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিগ্ন করতে নিরাপত্তা দিচ্ছে। সড়ক মহাসড়কে দুর্ঘটনা, ডাকাতি প্রতিরোধে মোতায়েন রয়েছেন হাইওয়ে পুলিশ। নদী পথে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল ঠেকাকে নৌ-পুলিশ কাজ করছে। অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টি, ছিনতাকারীদের তৎপরতা বন্ধে তল্লাশি, সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং এবং চেক পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।

সারাদেশে নিরাপত্তা পুলিশ সদর দপ্তর মনিটরিং রাখবে :

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঈদের আগ থেকে শুরু করে ঈটের ছুটি শেষ হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে নিরাপত্তা যাতে ঠিক থাকে এজন্য পুলিশ সদর দপ্তর মনিটরিং করবে। ঈদের জামাত যেসব ঈদগা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে জেলা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা :

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন র‌্যাব ঈদে আগে ও ঈদ পরবর্তী ছুটিকালীন সময়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড মোতায়েন থাকবে জাতীয় ঈদগাসহ দেশের সব ঈদগার ঈদের নামাজের নিরাপত্তায়। এছাড়া ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিগ্ন করতে র‌্যাবের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম স্থাপনের মাধ্যমে মনিটরিং ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সারাদেশে র‌্যাবের সদস্যরা আগামী ১০ দিনে টহলে থাকবেন সড়ক মহাসড়ক এবং পাড়া-মহল্লায়।

জাতীয় ঈদগা মাঠে এবার ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলেও জাতীয় ঈদগা মাঠে ঈদের জামাতে অংশ নিবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতিসহ দেশের বিশিষ্টজনরা। এজন্য জাতীয় ঈদগা মাঠে ঈদের জামাতকে ঘিরে ১০ হাজার র‌্যাব পুলিশ মোতায়েন থাকবে। থাকবে র‌্যাব ও পুলিশ ডগ স্কোয়াড। আকাশপথেও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

২০১৬ সালে ঈদগা মাঠে জঙ্গি হামলা চেষ্টার বিষয়টি মাথায় রেখে এবারও দেশের সবচেয় বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়া শোলাকিয়া ঈদগা মাঠের নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো হয়েছে। ঈদ মাঠের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। যেকোন ধরনের নাশকতা ঠেকাতে র‌্যাবও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে শোলাকিয়া ঈদগা মাঠের নিরাপত্তায়।