ঈদে টাকা না দিলে জীবননাশের হুমকি

ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে পৃথক অভিযান চালিয়ে চক্রের ৪১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব বলছে, চাঁদাবাজ চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনা স্ট্যান্ড ও মালবাহী গাড়ি থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছে। কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে তারা জীবননাশের হুমকি দিত। এছাড়া ঈদের কেনাকাটার জন্য বের হওয়া সাধারণ মানুষের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিত চক্রের সদস্যরা।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, রাজধানীর সবুজবাগ, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, তেজগাঁও, মুগদা, শাহবাগ, মতিঝিল, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর ও পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতাসহ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের মধ্যে ৩৩ জন চাঁদাবাজ ও ৮ জন ছিনতাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায় করা নগদ ১ লাখ দুই হাজার ৫৩৩ টাকা, মোবাইল ৫৩টি, ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ৯টি সুইচ গিয়ার, ১০টি এন্টিকাটার, ১০টি ক্ষুর, ৭টি চাকু, ২টি চাইনিজ কুড়াল ও ৪টি রামদা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো সোলাইমান (২৫), নুর হোসেন (৩০), মো. শাহজালাল (২২), আলী হোসেন (৪০), আরিফ হোসেন (১৭), সাইফুল ইসলাম (৫৭), মাসুম (২৭), মো. শিবলু (২৫), মোক্তার হোসেন (৩০), মো. মুন্না (২০), মো. সাইমন (৩২), মো. রনি (২৫), মো. আবদুল মান্নান (৪৪), মো. বাবুল হাওলাদার (৫০), মো. আবুল কাশেম (৪৫), নুরুল হক (৪০), মো. রাকিব খান (২০), মো. মাসুদ (৪০), মো. জনি (৩২), মো. আকাশ (২০), মো. নাইম (১৯), মাজাহারুল ইসলাম ওরফে তামিম (১৮), মো. রাকিব (১৯), মো. নাইম বেপারী (১৯), মো. সজীব (২৫), বাবুল হোসেন (৩২), ইসমাঈল (৩৫), মো. রবিন (২৮), মো. সেলিম (৪০), মো. ইয়াসিন আরাফাত (২২), মো. নুর হোসেন (৬৫), মহব্বত হোসেন (৪০), মো. লিটন (৪২), মো. আরিফ (২৫), সাব্বির হোসেন জুবায়ের (২০), হেমায়েত হোসেন মামুন (৩৮), মো. ফারুক (৫০), শাহ পরান (২৬), কামরুল হাসান (২৫), মো. মিজান (২৪) ও মো. সেলিম (৩৬)।

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে আরিফ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনাস্ট্যান্ড ও পণ্যবাহী গাড়ি থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছে। ফুটপাতের দোকানদারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে। এই কাজে ৪ থেকে ৫ জনের একটি গ্রুপ জড়িত।

এছাড়া ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় ছিনতাই চক্রের সদস্যরা। সুযোগ পাওয়া পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। ইফতারের সময় ও সেহেরির পর তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না।

খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, লেবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আবদুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে তোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি দেখা যায়।

রবিবার, ০১ মে ২০২২ , ১৮ বৈশাখ ১৪২৮ ২৯ রমাদ্বান ১৪৪৩

ঈদে টাকা না দিলে জীবননাশের হুমকি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে পৃথক অভিযান চালিয়ে চক্রের ৪১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব বলছে, চাঁদাবাজ চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনা স্ট্যান্ড ও মালবাহী গাড়ি থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছে। কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে তারা জীবননাশের হুমকি দিত। এছাড়া ঈদের কেনাকাটার জন্য বের হওয়া সাধারণ মানুষের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিত চক্রের সদস্যরা।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, রাজধানীর সবুজবাগ, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, তেজগাঁও, মুগদা, শাহবাগ, মতিঝিল, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর ও পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতাসহ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের মধ্যে ৩৩ জন চাঁদাবাজ ও ৮ জন ছিনতাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায় করা নগদ ১ লাখ দুই হাজার ৫৩৩ টাকা, মোবাইল ৫৩টি, ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ৯টি সুইচ গিয়ার, ১০টি এন্টিকাটার, ১০টি ক্ষুর, ৭টি চাকু, ২টি চাইনিজ কুড়াল ও ৪টি রামদা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো সোলাইমান (২৫), নুর হোসেন (৩০), মো. শাহজালাল (২২), আলী হোসেন (৪০), আরিফ হোসেন (১৭), সাইফুল ইসলাম (৫৭), মাসুম (২৭), মো. শিবলু (২৫), মোক্তার হোসেন (৩০), মো. মুন্না (২০), মো. সাইমন (৩২), মো. রনি (২৫), মো. আবদুল মান্নান (৪৪), মো. বাবুল হাওলাদার (৫০), মো. আবুল কাশেম (৪৫), নুরুল হক (৪০), মো. রাকিব খান (২০), মো. মাসুদ (৪০), মো. জনি (৩২), মো. আকাশ (২০), মো. নাইম (১৯), মাজাহারুল ইসলাম ওরফে তামিম (১৮), মো. রাকিব (১৯), মো. নাইম বেপারী (১৯), মো. সজীব (২৫), বাবুল হোসেন (৩২), ইসমাঈল (৩৫), মো. রবিন (২৮), মো. সেলিম (৪০), মো. ইয়াসিন আরাফাত (২২), মো. নুর হোসেন (৬৫), মহব্বত হোসেন (৪০), মো. লিটন (৪২), মো. আরিফ (২৫), সাব্বির হোসেন জুবায়ের (২০), হেমায়েত হোসেন মামুন (৩৮), মো. ফারুক (৫০), শাহ পরান (২৬), কামরুল হাসান (২৫), মো. মিজান (২৪) ও মো. সেলিম (৩৬)।

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে আরিফ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনাস্ট্যান্ড ও পণ্যবাহী গাড়ি থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছে। ফুটপাতের দোকানদারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে। এই কাজে ৪ থেকে ৫ জনের একটি গ্রুপ জড়িত।

এছাড়া ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় ছিনতাই চক্রের সদস্যরা। সুযোগ পাওয়া পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। ইফতারের সময় ও সেহেরির পর তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না।

খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, লেবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আবদুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে তোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি দেখা যায়।