বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি, কয়লা উত্তোলন বন্ধ

দুই দফা দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো গতকালও দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে খনি গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে খনিতে কর্মরত পাঁচ শতাধিক শ্রমিকও সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে। এতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম পুরোপরি বন্ধ রয়েছে।

গতকালও শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে খনির কোল ইয়ার্ড, আবাসিক ভবন এবং প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিক নেতা এহসানুল হক সোহাগ, এরশাদ আলী, আবু তাহের প্রমুখ।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম বলেন, পূর্ব ঘোষণানুযায়ী গত বুধবার সকাল ১১টা থেকে খনি গেটে শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দুইদফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। যা অব্যাহত রয়েছে। বেকার শ্রমিকদের কাজে যোগদানসহ তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এই দুইদফা দাবির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কথা বলেননি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খনি গেটে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে পবিত্র ঈদ উল ফিতরও খনি গেটেই পালন করবে শ্রমিকরা। দুইদফা দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন এখন খনির বাইরে থেকে ভেতরে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে। যা যেকোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার রূপ দিতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছে।

তবে খনি কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের মোবাইলে মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছেন। এতে শ্রমিকদেরকে ৫৫ লাখ টাকা দিতে হয়েছে খনি কর্তৃপক্ষকে।

ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হওয়ার কথা স্বীকার করে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধিনে কর্মরত বর্তমানে খনির অভ্যন্তরে অবস্থানরত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক খনি গেটের বাইরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ভেতরে আন্দোলন শুরু করায় গত বৃহস্পতিবার থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দু-চারদিন পরই ওই কোল ফেইসের কয়লা উত্তোলন এমনিতেই বন্ধ হয়ে যেতো। আন্দোলনকারিদের কারণে দুইদিন আগেই বন্ধ করতে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানবিক কারণে পবিত্র ঈদের অর্থ সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে ৫৫ লাখ টাকা গত বৃহস্পতিবার প্রদান করা হয়েছে।

কয়লাখনির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল থেকেই কয়লাখনি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রবিবার, ০১ মে ২০২২ , ১৮ বৈশাখ ১৪২৮ ২৯ রমাদ্বান ১৪৪৩

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি, কয়লা উত্তোলন বন্ধ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর

দুই দফা দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো গতকালও দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে খনি গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে খনিতে কর্মরত পাঁচ শতাধিক শ্রমিকও সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে। এতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম পুরোপরি বন্ধ রয়েছে।

গতকালও শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে খনির কোল ইয়ার্ড, আবাসিক ভবন এবং প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিক নেতা এহসানুল হক সোহাগ, এরশাদ আলী, আবু তাহের প্রমুখ।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম বলেন, পূর্ব ঘোষণানুযায়ী গত বুধবার সকাল ১১টা থেকে খনি গেটে শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দুইদফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। যা অব্যাহত রয়েছে। বেকার শ্রমিকদের কাজে যোগদানসহ তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এই দুইদফা দাবির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কথা বলেননি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খনি গেটে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে পবিত্র ঈদ উল ফিতরও খনি গেটেই পালন করবে শ্রমিকরা। দুইদফা দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন এখন খনির বাইরে থেকে ভেতরে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে। যা যেকোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার রূপ দিতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছে।

তবে খনি কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের মোবাইলে মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছেন। এতে শ্রমিকদেরকে ৫৫ লাখ টাকা দিতে হয়েছে খনি কর্তৃপক্ষকে।

ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হওয়ার কথা স্বীকার করে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধিনে কর্মরত বর্তমানে খনির অভ্যন্তরে অবস্থানরত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক খনি গেটের বাইরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ভেতরে আন্দোলন শুরু করায় গত বৃহস্পতিবার থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দু-চারদিন পরই ওই কোল ফেইসের কয়লা উত্তোলন এমনিতেই বন্ধ হয়ে যেতো। আন্দোলনকারিদের কারণে দুইদিন আগেই বন্ধ করতে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানবিক কারণে পবিত্র ঈদের অর্থ সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে ৫৫ লাখ টাকা গত বৃহস্পতিবার প্রদান করা হয়েছে।

কয়লাখনির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল থেকেই কয়লাখনি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।