পটাশিয়াম রপ্তানি অব্যাহত রাখতে কানাডাকে অনুরোধ

পটাশিয়াম রপ্তানি অব্যাহত রাখতে কানাডাকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাসের সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক এ তথ্য জানান। রাষ্ট্রদূত এ সময় মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন, খাদ্যসংকট দেখা দিলে কানাডা বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাদ্যশস্য সরবরাহ করবে।

সাক্ষাৎ শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কানাডা থেকে আমরা অনেক কৃষিপণ্য আমদানি করে থাকি। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, গম ও মসুর ডাল আমদানি করা হয়। করোনা এবং সম্প্রতি সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে একটা বিরাট সংকটের আশঙ্কা করছে সবাই। বিশ্বব্যাংক এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়েছে যে একটা ভয়াবহ খাদ্যসংকট হতে পারে। ইউরোপীয় দেশগুলোয় আমরা খাদ্য নিয়ে নানা জটিলতার কথা শুনছি। কৃষিক্ষেত্রে কানাডা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার। তারা আমাদের এখানে খাদ্যশস্য সরবরাহ করে থাকে। যদি কোন সংকট হয়, তবে সেই সংকটের ক্ষেত্রে কানাডা যাতে আমাদের বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে খাদ্যশস্য সরবরাহ করে সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। তারা বলেছে যে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় খাদ্যশস্য পাবে।’

দেশের কৃষির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পটাশিয়াম সার আমদানি যাতে অব্যাহত থাকে, এ জন্য দেশটিকে অনুরোধ জানানোর কথাও জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পটাশিয়াম মূলত তিনটি দেশ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরবরাহ হয়। দেশ তিনটি হলো বেলারুশ, রাশিয়া ও কানাডা। আমরা কানাডা থেকেও আনি। তাদের সঙ্গে জিটুজি ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি বছরই তারা একটা ভালো অ্যামাউন্ট আমাদের সরবরাহ করে। ইতোমধ্যে বেলারুশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ জন্য তাদের কাছ থেকে আমরা পটাশিয়াম আনতে পারছি না। একই কারণে রাশিয়া থেকেও আমদানি বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সবাই কানাডার ওপর নির্ভর করছে। এর ওপর চীনসহ বিভিন্ন দেশ প্যানিক বাইং (আতঙ্কিত হয়ে কেনা) শুরু করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চীন তাদের ব্যবস্থায় হয়তো নিতে পারবে। কিন্তু এটা আমাদের জন্য বড় সমস্যা। তাই আজকের আলোচনাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি অনুরোধ করেছি, যতটা সম্ভব আমাদের প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম যাতে কানাডা থেকে দেয়া হয়। আলু উৎপাদনে পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আগামী মৌসুম অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে আমাদের পটাশিয়াম দরকার হবে। আমরা এই মুহূর্তে টেন্ডার দিয়ে পটাশিয়াম কেনার চেষ্টা করছি। আমরা কিছুটা অনিশ্চয়তাও দেখছি। তারা যদি পরোক্ষভাবে অন্য কোন দেশ থেকে এনে আমাদের সরবরাহ করে, তাহলে হয়তো আমরা পাব। তা না হলে একটা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।’

কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্রে কানাডার কারিগরি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে এগ্রো-প্রসেসিংয়ে তাদের বিনিয়োগ চাচ্ছি। তারা বলেছে, আগামী নভেম্বরে তাদের এক্সিবিশন ফেয়ার ও সেমিনার হবে। তারা সেখানে আমাদের আমন্ত্রণ জানাবে। আমরা একটা বাণিজ্য প্রতিনিধি দল কানাডায় পাঠাব।’

শনিবার, ০৭ মে ২০২২ , ২৩ বৈশাখ ১৪২৮ ০৪ শাওয়াল ১৪৪৩

পটাশিয়াম রপ্তানি অব্যাহত রাখতে কানাডাকে অনুরোধ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

পটাশিয়াম রপ্তানি অব্যাহত রাখতে কানাডাকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাসের সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক এ তথ্য জানান। রাষ্ট্রদূত এ সময় মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন, খাদ্যসংকট দেখা দিলে কানাডা বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাদ্যশস্য সরবরাহ করবে।

সাক্ষাৎ শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কানাডা থেকে আমরা অনেক কৃষিপণ্য আমদানি করে থাকি। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, গম ও মসুর ডাল আমদানি করা হয়। করোনা এবং সম্প্রতি সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে একটা বিরাট সংকটের আশঙ্কা করছে সবাই। বিশ্বব্যাংক এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়েছে যে একটা ভয়াবহ খাদ্যসংকট হতে পারে। ইউরোপীয় দেশগুলোয় আমরা খাদ্য নিয়ে নানা জটিলতার কথা শুনছি। কৃষিক্ষেত্রে কানাডা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার। তারা আমাদের এখানে খাদ্যশস্য সরবরাহ করে থাকে। যদি কোন সংকট হয়, তবে সেই সংকটের ক্ষেত্রে কানাডা যাতে আমাদের বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে খাদ্যশস্য সরবরাহ করে সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। তারা বলেছে যে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় খাদ্যশস্য পাবে।’

দেশের কৃষির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পটাশিয়াম সার আমদানি যাতে অব্যাহত থাকে, এ জন্য দেশটিকে অনুরোধ জানানোর কথাও জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পটাশিয়াম মূলত তিনটি দেশ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরবরাহ হয়। দেশ তিনটি হলো বেলারুশ, রাশিয়া ও কানাডা। আমরা কানাডা থেকেও আনি। তাদের সঙ্গে জিটুজি ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি বছরই তারা একটা ভালো অ্যামাউন্ট আমাদের সরবরাহ করে। ইতোমধ্যে বেলারুশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ জন্য তাদের কাছ থেকে আমরা পটাশিয়াম আনতে পারছি না। একই কারণে রাশিয়া থেকেও আমদানি বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সবাই কানাডার ওপর নির্ভর করছে। এর ওপর চীনসহ বিভিন্ন দেশ প্যানিক বাইং (আতঙ্কিত হয়ে কেনা) শুরু করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চীন তাদের ব্যবস্থায় হয়তো নিতে পারবে। কিন্তু এটা আমাদের জন্য বড় সমস্যা। তাই আজকের আলোচনাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি অনুরোধ করেছি, যতটা সম্ভব আমাদের প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম যাতে কানাডা থেকে দেয়া হয়। আলু উৎপাদনে পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আগামী মৌসুম অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে আমাদের পটাশিয়াম দরকার হবে। আমরা এই মুহূর্তে টেন্ডার দিয়ে পটাশিয়াম কেনার চেষ্টা করছি। আমরা কিছুটা অনিশ্চয়তাও দেখছি। তারা যদি পরোক্ষভাবে অন্য কোন দেশ থেকে এনে আমাদের সরবরাহ করে, তাহলে হয়তো আমরা পাব। তা না হলে একটা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।’

কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্রে কানাডার কারিগরি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে এগ্রো-প্রসেসিংয়ে তাদের বিনিয়োগ চাচ্ছি। তারা বলেছে, আগামী নভেম্বরে তাদের এক্সিবিশন ফেয়ার ও সেমিনার হবে। তারা সেখানে আমাদের আমন্ত্রণ জানাবে। আমরা একটা বাণিজ্য প্রতিনিধি দল কানাডায় পাঠাব।’