সৌরবিদ্যুতে আলোকিত কালীগঞ্জের একটি গ্রাম

বর্তমানে কৃষিতে যেমন উৎপাদন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়ও। কিন্ত সে অনুপাতে বাড়ছে না উৎপাদিত ফসলের মূল্য। তবে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের গুটিয়ানী গ্রামের মাঠে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা হওয়ায় জ¦ালানি তেল নির্ভরতা থেকে কৃষকদের অন্তত সেচ খরচ বেশ খানিকটা সাশ্রয় করতে পারছেন। এ পদ্ধতিতে খেতে সেচের জন্য কৃষকদের সরাসরি উপস্থিত থাকতে হয় না।

ফলে কৃষি শ্রমও সাশ্রয় হচ্ছে তাদের। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ অনেকটা ঝামেলামুক্ত। সে কারণে এখন সোলার ইরিগেশন পাম্পিং সিস্টেম (ংরঢ়ং) এর চাহিদা বেড়েছে অনেকগুণ। কথাগুলো ওই গ্রামের একাধিক কৃষকের। তাদের দাবি, সূর্যের আলোনির্ভর সোলার প্লান্টের মাধ্যমে দিনের বেলায় খেতে সেচকাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে। তবে এতে যদি সরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে রাতেও সেচকাজ চালানো যাবে। সঙ্গে সঙ্গে অধিক পরিমাণে জমি সেচের আওতায় আনা যাবে। ফলে কৃষকদের খরচ আরও কমবে। অন্যদিকে সৌর প্লান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হলে সোলার প্লান্ট দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।

সরেজমিন গুটিয়ানী গ্রামের মাঠে গেলে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঝখানে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। বর্তমানে সারা মাঠে চাষ করা হয়েছে বোরো ধানের। দূর থেকেই নজরে পড়ছে বড় টিনের ঘরের মতো সৌরবিদ্যুৎ প্লান্টটি। যেখান থেকে বোরো খেতগুলো ছাড়াও পাম্পের নিকটবর্তী সব ফসলি খেতে পানি সেচের কাজ চলছে। সবুজ সতেজ খেতগুলোতে ভালো ফলনের আভাসে কৃষকদের মনে খুশির দোলা দিচ্ছে। সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে এ সৌর প্লান্টের মাধ্যমে গ্রামটির প্রায় ৩৫-৪০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।

মাঠে কথা হয় ওই গ্রামের কৃষক আবদুর রাজ্জাক ও জয়গোপাল বিশ^াস, আবদুল মান্নানসহ অনেক কৃষকের সঙ্গে। তারা জানান, এক সময় কৃষি কাজ ছিল বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বৃষ্টির মৌসুমেও এখন বৃষ্টির দেখা মেলে না। ফলে চাষাবাদ এখন সম্পূর্ণটাই সেচনির্ভর হয়ে গেছে। যে কারণে উৎপাদন ও সেচ খরচ বাবদ ব্যয় উভয়ই বেড়েছে। এখনও সব গ্রামের মাঠে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি।

আবার ব্যয়বহুল জ¦ালানি তেলে চালিত শ্যালো ইঞ্জিনেও চাষ আকাশচুম্বি খরচ। তবে মাঠে সৌরবিদ্যুতের প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবিঘা বোরো ধানের সেচ বাবদ ৫ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। অথচ আশপাশে জ¦ালানি তেলনির্ভর শ্যালো মেশিনে খরচ ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলে সৌর প্লান্টে তাদের সাশ্রয় হচ্ছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। তারা আরও জানান, সৌর প্লান্টের চাষে অবশ্য সূর্যের আলো না থাকলে আর পানি পাওয়া যায় না। ফলে এ পদ্ধতির পাশাপাশি রাতে সেচকাজ চালানোর জন্য প্লান্টের নিকটবর্তী মাত্র ১৫০ গজ দূরে অবস্থিত পল্লীবিদ্যুতে সংযোগ করাতে পারলে অধিক জমি সেচের আওতায় এনে খরচ আরও সাশ্রয় করা সম্ভব। দীর্ঘদিন যাবত কৃষকেরা এমন দাবি করে আসছেন। সেচের প্রয়োজনে সারাদেশের ফসলি মাঠগুলোতে ব্যাঙের ছাতার মতো স্থাপন করা হয়েছে ডিজেলচালিত গভীর নলকূপ পদ্ধতি, যা ব্যয়বহুল ছাড়াও ঝামেলাও অনেক বেশি। কেননা এ পদ্ধতিতে সেচকাজ চালাতে কৃষকদের সারাদিন কাজ ফেলে সময় দিতে হয়।

কৃষকদের কৃষিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় কম করতে এনজিও সংস্থা ঝিনাইদহের এইড ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে ইনফ্রাকস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড-ইডকলের সহযোগিতায় তাদের গ্রামের মাঠে সোলার প্লান্ট স্থাপন করে কৃষকদের বেশ উপকার হয়েছে। প্রতিবিঘায় ৫ হাজার টাকা দিতে হলেও তা দেয়ার সুযোগ আছে ২-৩ কিস্তিতে। এ টাকাটাও দিতে হবে ৩ কিস্তিতে। পাম্পের দায়িত্ব দেয়া একজন ম্যানেজার নিজ দায়িত্বে প্রয়োজন মতো সেচ দিয়ে দেন।

ওই গ্রামের আরেক কৃষক আবদুল আলিম জানান, সৌর পাম্প পরিবেশবান্ধব। তিনি আরও বলেন, রবিশস্য উৎপাদনে সেচ খরচ অপেক্ষাকৃত আরও কম। সবজি বা রবিশস্যের প্রতিবিঘায় সেচবাবদ আড়াইশ’ টাকা নেয়া হয়। অন্যদিকে ডিজেলচালিত শ্যালো ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি লেগেই থাকে। কোন কোন সময় যান্ত্রিক ত্রুটি ব্যাপক আকার ধারণ করায় খেতে পানির অভাবে ভরা খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার নজিরও অহরহ। সেক্ষেত্রে সৌরপাম্পে বেশ নির্ভর করা যায়।

সেচ পাম্পটির দায়িত্বরত ওই গ্রামের কৃষক জাফর হোসেন জানান, সূর্য উঠার আধা ঘণ্টা পর থেকে সূর্যাস্ত যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগ পর্যন্ত সোলার পাম্পের সেচ কাজ চালানো সম্ভব হয়। বিশেষ করে বোরো ধান চাষের সময়টা তার নিজের খুব ব্যস্ততা থাকে। এই পাম্পের আওতার সব খেত নিজেকে ঘুরে ঘুরে দেখতে হয়। প্রয়োজনীয় সময়ে সেচের জন্য নিজেকেই সব ব্যবস্থা করতে হয়।

জামাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন ম-ল জানান, ঝিনাইদহ এইডের দেয়া কালীগঞ্জ উপজেলার মোট ৮টি প্লান্টের মধ্যে তার নিজের ইউনিয়নের গুটিয়ানী, কামারাইল ও হরদেবপুর গ্রামেই রয়েছে মোট ৬টি। এ গ্রামগুলোর কৃষকেরা কম খরচে সোলার পাম্পের মাধ্যমে সেচকাজ চালিয়ে বেশ উপকৃত হচ্ছে।

সোলার ইরিগেশন পাম্পিং সিস্টেম ঝিনাইদহ এইডের প্রকল্পপ্রধান আলমগীর হোসেন বাবু জানান, এ প্রকল্পের অধীনে কালীগঞ্জ উপজেলাতে মোট ৮টি সৌরবিদ্যুৎ প্লান্ট রয়েছে। তার মধ্যে গুটিয়ানী গ্রামে একটি। দিনের বেলায় সোলারের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ তৈরির ফলে সেচ কাজ কোনভাবেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না। খরচ কম এছাড়া জাতীয়ভাবে বিদ্যুৎ ও আমদানিকৃত জ্বালানি তেল সাশ্রয় করতে ভূমিকা রাখছে। রাতে সেচকাজ চলমান রাখতে পল্লীবিদ্যুতের সংযোগের জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ মোহায়মেন আক্তার জানান, সৌরবিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব ও কৃষকদের ফসলের উৎপাদন ব্যয় কমাচ্ছে। ফলে দিন যত যাচ্ছে বিদ্যুৎ ও আমদানিকৃত জ্বালানি তেল সাশ্রয়ের জন্য সরকারি-বেসরকারি সৌর প্লান্টের বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

শনিবার, ০৭ মে ২০২২ , ২৩ বৈশাখ ১৪২৮ ০৪ শাওয়াল ১৪৪৩

সৌরবিদ্যুতে আলোকিত কালীগঞ্জের একটি গ্রাম

সাবজাল হোসেন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

image

কৃষকের মুখে হাসি -সংবাদ

বর্তমানে কৃষিতে যেমন উৎপাদন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়ও। কিন্ত সে অনুপাতে বাড়ছে না উৎপাদিত ফসলের মূল্য। তবে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের গুটিয়ানী গ্রামের মাঠে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা হওয়ায় জ¦ালানি তেল নির্ভরতা থেকে কৃষকদের অন্তত সেচ খরচ বেশ খানিকটা সাশ্রয় করতে পারছেন। এ পদ্ধতিতে খেতে সেচের জন্য কৃষকদের সরাসরি উপস্থিত থাকতে হয় না।

ফলে কৃষি শ্রমও সাশ্রয় হচ্ছে তাদের। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ অনেকটা ঝামেলামুক্ত। সে কারণে এখন সোলার ইরিগেশন পাম্পিং সিস্টেম (ংরঢ়ং) এর চাহিদা বেড়েছে অনেকগুণ। কথাগুলো ওই গ্রামের একাধিক কৃষকের। তাদের দাবি, সূর্যের আলোনির্ভর সোলার প্লান্টের মাধ্যমে দিনের বেলায় খেতে সেচকাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে। তবে এতে যদি সরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে রাতেও সেচকাজ চালানো যাবে। সঙ্গে সঙ্গে অধিক পরিমাণে জমি সেচের আওতায় আনা যাবে। ফলে কৃষকদের খরচ আরও কমবে। অন্যদিকে সৌর প্লান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হলে সোলার প্লান্ট দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।

সরেজমিন গুটিয়ানী গ্রামের মাঠে গেলে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঝখানে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। বর্তমানে সারা মাঠে চাষ করা হয়েছে বোরো ধানের। দূর থেকেই নজরে পড়ছে বড় টিনের ঘরের মতো সৌরবিদ্যুৎ প্লান্টটি। যেখান থেকে বোরো খেতগুলো ছাড়াও পাম্পের নিকটবর্তী সব ফসলি খেতে পানি সেচের কাজ চলছে। সবুজ সতেজ খেতগুলোতে ভালো ফলনের আভাসে কৃষকদের মনে খুশির দোলা দিচ্ছে। সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে এ সৌর প্লান্টের মাধ্যমে গ্রামটির প্রায় ৩৫-৪০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।

মাঠে কথা হয় ওই গ্রামের কৃষক আবদুর রাজ্জাক ও জয়গোপাল বিশ^াস, আবদুল মান্নানসহ অনেক কৃষকের সঙ্গে। তারা জানান, এক সময় কৃষি কাজ ছিল বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বৃষ্টির মৌসুমেও এখন বৃষ্টির দেখা মেলে না। ফলে চাষাবাদ এখন সম্পূর্ণটাই সেচনির্ভর হয়ে গেছে। যে কারণে উৎপাদন ও সেচ খরচ বাবদ ব্যয় উভয়ই বেড়েছে। এখনও সব গ্রামের মাঠে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি।

আবার ব্যয়বহুল জ¦ালানি তেলে চালিত শ্যালো ইঞ্জিনেও চাষ আকাশচুম্বি খরচ। তবে মাঠে সৌরবিদ্যুতের প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবিঘা বোরো ধানের সেচ বাবদ ৫ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। অথচ আশপাশে জ¦ালানি তেলনির্ভর শ্যালো মেশিনে খরচ ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলে সৌর প্লান্টে তাদের সাশ্রয় হচ্ছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। তারা আরও জানান, সৌর প্লান্টের চাষে অবশ্য সূর্যের আলো না থাকলে আর পানি পাওয়া যায় না। ফলে এ পদ্ধতির পাশাপাশি রাতে সেচকাজ চালানোর জন্য প্লান্টের নিকটবর্তী মাত্র ১৫০ গজ দূরে অবস্থিত পল্লীবিদ্যুতে সংযোগ করাতে পারলে অধিক জমি সেচের আওতায় এনে খরচ আরও সাশ্রয় করা সম্ভব। দীর্ঘদিন যাবত কৃষকেরা এমন দাবি করে আসছেন। সেচের প্রয়োজনে সারাদেশের ফসলি মাঠগুলোতে ব্যাঙের ছাতার মতো স্থাপন করা হয়েছে ডিজেলচালিত গভীর নলকূপ পদ্ধতি, যা ব্যয়বহুল ছাড়াও ঝামেলাও অনেক বেশি। কেননা এ পদ্ধতিতে সেচকাজ চালাতে কৃষকদের সারাদিন কাজ ফেলে সময় দিতে হয়।

কৃষকদের কৃষিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় কম করতে এনজিও সংস্থা ঝিনাইদহের এইড ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে ইনফ্রাকস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড-ইডকলের সহযোগিতায় তাদের গ্রামের মাঠে সোলার প্লান্ট স্থাপন করে কৃষকদের বেশ উপকার হয়েছে। প্রতিবিঘায় ৫ হাজার টাকা দিতে হলেও তা দেয়ার সুযোগ আছে ২-৩ কিস্তিতে। এ টাকাটাও দিতে হবে ৩ কিস্তিতে। পাম্পের দায়িত্ব দেয়া একজন ম্যানেজার নিজ দায়িত্বে প্রয়োজন মতো সেচ দিয়ে দেন।

ওই গ্রামের আরেক কৃষক আবদুল আলিম জানান, সৌর পাম্প পরিবেশবান্ধব। তিনি আরও বলেন, রবিশস্য উৎপাদনে সেচ খরচ অপেক্ষাকৃত আরও কম। সবজি বা রবিশস্যের প্রতিবিঘায় সেচবাবদ আড়াইশ’ টাকা নেয়া হয়। অন্যদিকে ডিজেলচালিত শ্যালো ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি লেগেই থাকে। কোন কোন সময় যান্ত্রিক ত্রুটি ব্যাপক আকার ধারণ করায় খেতে পানির অভাবে ভরা খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার নজিরও অহরহ। সেক্ষেত্রে সৌরপাম্পে বেশ নির্ভর করা যায়।

সেচ পাম্পটির দায়িত্বরত ওই গ্রামের কৃষক জাফর হোসেন জানান, সূর্য উঠার আধা ঘণ্টা পর থেকে সূর্যাস্ত যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগ পর্যন্ত সোলার পাম্পের সেচ কাজ চালানো সম্ভব হয়। বিশেষ করে বোরো ধান চাষের সময়টা তার নিজের খুব ব্যস্ততা থাকে। এই পাম্পের আওতার সব খেত নিজেকে ঘুরে ঘুরে দেখতে হয়। প্রয়োজনীয় সময়ে সেচের জন্য নিজেকেই সব ব্যবস্থা করতে হয়।

জামাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন ম-ল জানান, ঝিনাইদহ এইডের দেয়া কালীগঞ্জ উপজেলার মোট ৮টি প্লান্টের মধ্যে তার নিজের ইউনিয়নের গুটিয়ানী, কামারাইল ও হরদেবপুর গ্রামেই রয়েছে মোট ৬টি। এ গ্রামগুলোর কৃষকেরা কম খরচে সোলার পাম্পের মাধ্যমে সেচকাজ চালিয়ে বেশ উপকৃত হচ্ছে।

সোলার ইরিগেশন পাম্পিং সিস্টেম ঝিনাইদহ এইডের প্রকল্পপ্রধান আলমগীর হোসেন বাবু জানান, এ প্রকল্পের অধীনে কালীগঞ্জ উপজেলাতে মোট ৮টি সৌরবিদ্যুৎ প্লান্ট রয়েছে। তার মধ্যে গুটিয়ানী গ্রামে একটি। দিনের বেলায় সোলারের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ তৈরির ফলে সেচ কাজ কোনভাবেই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না। খরচ কম এছাড়া জাতীয়ভাবে বিদ্যুৎ ও আমদানিকৃত জ্বালানি তেল সাশ্রয় করতে ভূমিকা রাখছে। রাতে সেচকাজ চলমান রাখতে পল্লীবিদ্যুতের সংযোগের জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ মোহায়মেন আক্তার জানান, সৌরবিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব ও কৃষকদের ফসলের উৎপাদন ব্যয় কমাচ্ছে। ফলে দিন যত যাচ্ছে বিদ্যুৎ ও আমদানিকৃত জ্বালানি তেল সাশ্রয়ের জন্য সরকারি-বেসরকারি সৌর প্লান্টের বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।