রুশ যুদ্ধজাহাজডুবির নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর দুই মাসেরও কম সময়ের মাথায় কৃষ্ণসাগরে যেন সলিল সমাধি ঘটে রাশিয়ার এক অহংকারের। গত ১৪ এপ্রিল ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাগরে ডুবে যায় রাশিয়ার ফ্লাগশিপ যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা মিসাইল ক্রুজার। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা ইউক্রেনকে ওই যুদ্ধজাহাজটি ডুবিয়ে দিতে সাহায্য করেছিল।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী আমেরিকানদের কাছে ওডেসার দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগরে একটি জাহাজ যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার পরই ওই হামলার ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে মস্কোভা হিসেবে চিহ্নিত করে সেটির অবস্থান নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এরপরই ইউক্রেনীয়রা জাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। পতন হয় কৃষ্ণসাগরে রুশ বহরের অহংকার হিসেবে পরিচিত ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ মস্কোভার।

মার্কিন কর্মকর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, ইউক্রেন যে যুদ্ধজাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকে জানতো না। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রাশিয়ার সামরিক অবস্থান এবং অন্যান্য বিশদ বিবরণ সরবরাহ করেছে। এসব পর্যালোচনা করে সিনিয়র রাশিয়ান অফিসারদের শনাক্ত করতে সমর্থ হয় কিয়েভ। এরপর তারা এসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠানো নিয়ে ন্যাটোকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। তিনি বলেন, ইউক্রেনের উদ্দেশে পাঠানো অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জামের চালান তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। এই যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছে। এভাবে অস্ত্র সরবরাহ পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে দাবি করছে রাশিয়া। এদিকে, মস্কোভা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে জাহাজটি জাহাজটি ডুবিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলেছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি। ওই প্রতিবেদন সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

পেন্টাগনের এই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে মস্কোভার জন্য সুনির্দিষ্ট টার্গেটিং তথ্য সরবরাহ করিনি। জাহাজটিতে হামলার ব্যাপারে ইউক্রেনীয়দের সিদ্ধান্ত বা তারা যে অপারেশন চালিয়েছে তাতে আমরা যুক্ত ছিলাম না।’ তিনি বলেন, জাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার ইউক্রেনের অভিপ্রায় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকে কিছু জানতো না। রাশিয়ান নৌযানগুলোকে চিহ্নিত করা এবং সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় গোয়েন্দা সক্ষমতা ইউক্রেনের রয়েছে বলেও দাবি করেন পেন্টাগনের মুখপাত্র।

মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছিল, ইউক্রেনীয় বাহিনী আমেরিকানদের কাছে ওডেসার দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগরে একটি জাহাজ যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার পরই ওই হামলার ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে মস্কোভা হিসেবে চিহ্নিত করে সেটির অবস্থান নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এরপরই ইউক্রেনীয়রা জাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। পতন হয় কৃষ্ণসাগরে রুশ বহরের অহংকার হিসেবে পরিচিত ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ মস্কোভার।

শনিবার, ০৭ মে ২০২২ , ২৩ বৈশাখ ১৪২৮ ০৪ শাওয়াল ১৪৪৩

রুশ যুদ্ধজাহাজডুবির নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র

image

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর দুই মাসেরও কম সময়ের মাথায় কৃষ্ণসাগরে যেন সলিল সমাধি ঘটে রাশিয়ার এক অহংকারের। গত ১৪ এপ্রিল ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাগরে ডুবে যায় রাশিয়ার ফ্লাগশিপ যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা মিসাইল ক্রুজার। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা ইউক্রেনকে ওই যুদ্ধজাহাজটি ডুবিয়ে দিতে সাহায্য করেছিল।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী আমেরিকানদের কাছে ওডেসার দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগরে একটি জাহাজ যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার পরই ওই হামলার ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে মস্কোভা হিসেবে চিহ্নিত করে সেটির অবস্থান নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এরপরই ইউক্রেনীয়রা জাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। পতন হয় কৃষ্ণসাগরে রুশ বহরের অহংকার হিসেবে পরিচিত ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ মস্কোভার।

মার্কিন কর্মকর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, ইউক্রেন যে যুদ্ধজাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকে জানতো না। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রাশিয়ার সামরিক অবস্থান এবং অন্যান্য বিশদ বিবরণ সরবরাহ করেছে। এসব পর্যালোচনা করে সিনিয়র রাশিয়ান অফিসারদের শনাক্ত করতে সমর্থ হয় কিয়েভ। এরপর তারা এসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠানো নিয়ে ন্যাটোকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। তিনি বলেন, ইউক্রেনের উদ্দেশে পাঠানো অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জামের চালান তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। এই যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছে। এভাবে অস্ত্র সরবরাহ পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে দাবি করছে রাশিয়া। এদিকে, মস্কোভা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে জাহাজটি জাহাজটি ডুবিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলেছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি। ওই প্রতিবেদন সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

পেন্টাগনের এই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে মস্কোভার জন্য সুনির্দিষ্ট টার্গেটিং তথ্য সরবরাহ করিনি। জাহাজটিতে হামলার ব্যাপারে ইউক্রেনীয়দের সিদ্ধান্ত বা তারা যে অপারেশন চালিয়েছে তাতে আমরা যুক্ত ছিলাম না।’ তিনি বলেন, জাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার ইউক্রেনের অভিপ্রায় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকে কিছু জানতো না। রাশিয়ান নৌযানগুলোকে চিহ্নিত করা এবং সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় গোয়েন্দা সক্ষমতা ইউক্রেনের রয়েছে বলেও দাবি করেন পেন্টাগনের মুখপাত্র।

মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছিল, ইউক্রেনীয় বাহিনী আমেরিকানদের কাছে ওডেসার দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগরে একটি জাহাজ যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার পরই ওই হামলার ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে মস্কোভা হিসেবে চিহ্নিত করে সেটির অবস্থান নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এরপরই ইউক্রেনীয়রা জাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। পতন হয় কৃষ্ণসাগরে রুশ বহরের অহংকার হিসেবে পরিচিত ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ মস্কোভার।