ঈদের চারদিনে বিশ্ব ঐতিহ্য দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন নওগাঁর বদলগাছীর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে (সোমপুর বিহার) প্রায় দেড় লক্ষাধিক পর্যটকরা ভ্রমণ করেছে এই পাহাড়পুরে। মহামারি করোনা ভাইরাসের সংকট কেটে প্রায় দীর্ঘ দুই বছর পর আবারও নতুন করে পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গন। আর ঈদের এই চার দিন পাহাড়পুর বাজার হইতে বৌদ্ধ বিহার ও জামালগঞ্জ বাজার হতে এই বিহার পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তায় দর্শনার্থীদের ভিরে জানজট লেগে গিয়েছিল। যা ইতিহাসের প্রথম। বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকসহ দেশের বিশিষ্টজনরা এই ঈদে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে চালু হওয়া ট্যুরিস্ট বাস ভ্রমণ বিলাস নওগাঁর ঐতিহাসিক স্থানগুলো ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের মাঝে এক নতুন মাত্রার যোগ এনে দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় বিহার এই পাহাড়পুর। এর আদি নাম সোমপুর বিহার। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে অবস্থিত এটি। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। এটি মূলত পাল রাজত্বের রাজধানী ও সেই সময়ে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখানে সে সময় ভিক্ষকুরা পড়ালেখা করতো। নওগাঁ শহর থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। এখানে সারা বছর দেশ ও বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে। তবে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ঘরে বন্দি থাকায় এই ঈদে খোলা পেয়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক দর্শনাথীরা পাহাড়পুরে এসেছেন। বিগত সময়ের তুলনায় এই ঈদে দর্শানার্থীদের আগমন রের্কড পরিমান। আগের চেয়ে অনেক আধুনিকায়ন হওয়ায় পাহাড়পুরের পরিবেশ নিয়েও সন্তোষ জনক দর্শনার্থীরা। আগামী শনিবার সরকারী ছুটির দিন পর্যন্ত দর্শনার্থীদের আগমন বেশি হবে বলে আশা করছেন বৌদ্ধ বিহারের কর্তৃপক্ষ।
বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, সত্যিই পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারটি খুবই সুন্দর। তবে এখানে মোবাইল নেটওয়ার্কের খুবই সমস্যা। কিন্তু আজকের দিনে এমন ঐতিহাসিক স্থানে এমন সমস্যা সত্যিই খুবই দু:খ্যজনক। এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। আমি এখানে এই প্রথম আসলাম। হাজার বছর আগের বিহারটি দর্শন করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আর এখানে যে এতো পর্যটকের সমাগম এর আগে আমি কোথাও কোথাও দেখিনি।
অপরদিকে, গত ৬ মে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. আইটিও নাওকি। বিহারটির ছোট ছোট স্থাপনা, বৌদ্ধ ভিক্ষুক কক্ষ ও টেরাকোটা সহ সার্বিক ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা নেন তিনি। সে সময় রাষ্ট্রদূতকে এসব স্থাপনা ঘুরে দেখান বিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু ও সাথে ছিলেন বদলগাছী থানার ওসি আতিকুল ইসলাম।
জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. আইটিও নাওকি পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারকে বিশ্বের বিশ্বয় উল্লেখ করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখানে দেখবার ও জানবার অনেক কিছু আছে।
রবিবার, ০৮ মে ২০২২ , ২৪ বৈশাখ ১৪২৮ ০৫ শাওয়াল ১৪৪৩
প্রতিনিধি, বদলগাছী (নওগাঁ)
ঈদের চারদিনে বিশ্ব ঐতিহ্য দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন নওগাঁর বদলগাছীর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে (সোমপুর বিহার) প্রায় দেড় লক্ষাধিক পর্যটকরা ভ্রমণ করেছে এই পাহাড়পুরে। মহামারি করোনা ভাইরাসের সংকট কেটে প্রায় দীর্ঘ দুই বছর পর আবারও নতুন করে পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গন। আর ঈদের এই চার দিন পাহাড়পুর বাজার হইতে বৌদ্ধ বিহার ও জামালগঞ্জ বাজার হতে এই বিহার পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তায় দর্শনার্থীদের ভিরে জানজট লেগে গিয়েছিল। যা ইতিহাসের প্রথম। বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকসহ দেশের বিশিষ্টজনরা এই ঈদে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে চালু হওয়া ট্যুরিস্ট বাস ভ্রমণ বিলাস নওগাঁর ঐতিহাসিক স্থানগুলো ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের মাঝে এক নতুন মাত্রার যোগ এনে দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় বিহার এই পাহাড়পুর। এর আদি নাম সোমপুর বিহার। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে অবস্থিত এটি। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। এটি মূলত পাল রাজত্বের রাজধানী ও সেই সময়ে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখানে সে সময় ভিক্ষকুরা পড়ালেখা করতো। নওগাঁ শহর থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। এখানে সারা বছর দেশ ও বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে। তবে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ঘরে বন্দি থাকায় এই ঈদে খোলা পেয়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক দর্শনাথীরা পাহাড়পুরে এসেছেন। বিগত সময়ের তুলনায় এই ঈদে দর্শানার্থীদের আগমন রের্কড পরিমান। আগের চেয়ে অনেক আধুনিকায়ন হওয়ায় পাহাড়পুরের পরিবেশ নিয়েও সন্তোষ জনক দর্শনার্থীরা। আগামী শনিবার সরকারী ছুটির দিন পর্যন্ত দর্শনার্থীদের আগমন বেশি হবে বলে আশা করছেন বৌদ্ধ বিহারের কর্তৃপক্ষ।
বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, সত্যিই পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারটি খুবই সুন্দর। তবে এখানে মোবাইল নেটওয়ার্কের খুবই সমস্যা। কিন্তু আজকের দিনে এমন ঐতিহাসিক স্থানে এমন সমস্যা সত্যিই খুবই দু:খ্যজনক। এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। আমি এখানে এই প্রথম আসলাম। হাজার বছর আগের বিহারটি দর্শন করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আর এখানে যে এতো পর্যটকের সমাগম এর আগে আমি কোথাও কোথাও দেখিনি।
অপরদিকে, গত ৬ মে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. আইটিও নাওকি। বিহারটির ছোট ছোট স্থাপনা, বৌদ্ধ ভিক্ষুক কক্ষ ও টেরাকোটা সহ সার্বিক ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা নেন তিনি। সে সময় রাষ্ট্রদূতকে এসব স্থাপনা ঘুরে দেখান বিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু ও সাথে ছিলেন বদলগাছী থানার ওসি আতিকুল ইসলাম।
জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. আইটিও নাওকি পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারকে বিশ্বের বিশ্বয় উল্লেখ করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখানে দেখবার ও জানবার অনেক কিছু আছে।