রেলমন্ত্রীর দাবি, তারা তার আত্মীয় নন
বিনা টিকেটে রেলওয়ে ভ্রমণ করায় টিটিই শফিকুল ইসলাম জরিমানা করেছিলেন রেলমন্ত্রীর তিন আত্মীয়কে। এর পরিণতিতে রেলের সেই টিটিইকে বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে। তবে ওই যাত্রীরা রেলমন্ত্রী কোন আত্মীয় নয় বলে দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘ওদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। নাম ভাঙিয়ে কেউ হয়তো সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেছে। ঘটনার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি গতকাল সকালেই শুনেছি। রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, ওই টিটিই বিনা টিকেটের যাত্রীদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেছেন। সে কারণেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
রেলের দাপ্তরিক কার্যক্রমের সঙ্গে মন্ত্রীর কোন সংযোগ নেই জানিয়ে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আমার কোন আত্মীয় জড়িত নন। রেল কর্মকর্তারা ওই টিটিইর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না।’
সরকার রেলসেবা বাড়াতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিনা টিকেটের যাত্রী যদি মন্ত্রীর আত্মীয়ও হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। একইভাবে কোন রেল কর্মকর্তা যদি যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, তাকেও শাস্তি পেতে হবে। যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণে টিটিইর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
টিটিই মানসিকভাবে হীনম্মন্যতায় ভোগেন বলে দাবি ডিসিও পাকশীর
টিটিই শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত হওয়া বিষয়ে ডিসিও (বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা) পাকশী মো. নাসির উদ্দীন লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, গত ৫ মে রাতে কিছু যাত্রী ঈশ্বরদী স্টেশনে কাউন্টারে আসেন। কিন্তু কাউন্টারে কোন টিকেট পাননি। তাদের ঢাকা যেতেই হবে। তাই অগত্যা বাধ্য হয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে যেখানে জায়গা পান সেখানেই উঠে পড়েন।
টিটিই শফিক ট্রেনে উঠে যাত্রীদের কাছে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তিন হাজার টাকা করে ভাড়া দাবি করেন। তখন যাত্রীরা জানান, তারা ঈশ্বরদী থেকে টিকেট না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রেনে উঠেছেন। তারা ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে ভাড়া নেয়ার জন্য টিটিইকে অনুরোধ করেন। কিন্তু টিটিই জবাবে বলেন, ট্রেন কি তোর বাপের তখন যাত্রী বলেন, ‘ট্রেন কি তোর বাপের মানে কি বিপদে পইড়া ট্রেনে উঠেছি। আপনি ভাড়াটা নেন।’
তখন টিটিই বলেন দ্বিগুণ জরিমানাসহ খুলনা থেকে ভাড়া দিতেই হবে। তখন যাত্রীরা বলেন, এত টাকা আমাদের কাছে নেই। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে রাখেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য গত ৩ মাস আগে টিটিই শফিককে পাকশী দপ্তরে বুক অফ করা হয়। তারপর তিনি যাত্রীদের সঙ্গে এমন আচরণ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর তাকে কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়। শফিক আইন বিষয়ে এলএলএম করেন। মূলত তিনি তার মানসিক হীনম্মন্যতায় ভুগছেন। এজন্যই তিনি যাত্রীসাধারণের সঙ্গে বেশিরভাগ সময়ই অযাচিতভাবে খারাপ আচরণ করেন।
এই লিখিত বক্তব্যটি গতকাল রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম রেলওয়ের একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করেছেন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে শরিফুল আলমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে টিটিই শফিকুল ইসলাম গত শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি যাত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি তার ওপর তারা মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। তারা টিকেট ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদী জংশন থেকে শুক্রবার রাতে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি কেবিনে ওঠেন। তাদের শোভন শ্রেণীর বগিতে পাঠানো হয়। সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তার নির্দেশে ৩৫০ টাকা করে জরিমানা করা হয়। ট্রেন ঢাকা পৌঁছানোর আগেই ভোররাতে টিটিই শফিকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার মোবাইল ফোনে কল করে বরখাস্তের খবর জানানো হয় বলে জানান তিনি। শুক্রবার এ খবর প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রেলওয়ের
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে। গত শুক্রবার রাতেই রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) সাজেদুল ইসলাম বাবুকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির অন্য সমস্যরা হলেন রেলওয়ে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (এইএন) শিপন আলী ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহকারী কমান্ডেন্ট (এসিআরএনবি) আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ভ্রাম্যমাণ টিকেট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে রোববার পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে তলব করেছে তদন্ত কমিটি।’
টিটিই বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা ন্যক্কারজনক, মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি টিআইবির
রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণের দায়ে জরিমানা করায় টিটিই বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা ন্যক্কারজনক; নৈতিকবোধ থেকে মন্ত্রীর সাময়িক সময়ের জন্য পদত্যাগের আহ্বান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থটি উল্লেখ করেন, বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণের দায়ে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর তিন আত্মীয়কে জরিমানা করায় সংশ্লিষ্ট টিকেট পরিদর্শককে (টিটিই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি একটি ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গভীর উদ্বেগ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি নির্লজ্জ ও নিকৃষ্টতম উদাহরণ। এখানে মূলত দুইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে, প্রথমত রেলমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়দের বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণ অর্থাৎ তারা ধরেই নিয়েছিলেন যে, রেলের প্রচলিত আইন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়! দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট টিকেট পরিদর্শক তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করায় তাকে কোন ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করেই তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল ফোনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুরস্কৃত হওয়ার পরিবর্তে বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা-দেশবাসীর কাছে এই বার্তাটিই পৌঁছেছে যে, ক্ষমতার দাপট ও অনিয়মই হচ্ছে বাস্তবতা। তাছাড়া এই নিকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত এখনও গুটিকয়েক যারা নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের জন্য একটি শক্তিশালী নেতিবাচক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।’
রবিবার, ০৮ মে ২০২২ , ২৪ বৈশাখ ১৪২৮ ০৫ শাওয়াল ১৪৪৩
রেলমন্ত্রীর দাবি, তারা তার আত্মীয় নন
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
বিনা টিকেটে রেলওয়ে ভ্রমণ করায় টিটিই শফিকুল ইসলাম জরিমানা করেছিলেন রেলমন্ত্রীর তিন আত্মীয়কে। এর পরিণতিতে রেলের সেই টিটিইকে বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে। তবে ওই যাত্রীরা রেলমন্ত্রী কোন আত্মীয় নয় বলে দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘ওদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। নাম ভাঙিয়ে কেউ হয়তো সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেছে। ঘটনার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি গতকাল সকালেই শুনেছি। রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, ওই টিটিই বিনা টিকেটের যাত্রীদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেছেন। সে কারণেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
রেলের দাপ্তরিক কার্যক্রমের সঙ্গে মন্ত্রীর কোন সংযোগ নেই জানিয়ে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আমার কোন আত্মীয় জড়িত নন। রেল কর্মকর্তারা ওই টিটিইর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না।’
সরকার রেলসেবা বাড়াতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিনা টিকেটের যাত্রী যদি মন্ত্রীর আত্মীয়ও হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। একইভাবে কোন রেল কর্মকর্তা যদি যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, তাকেও শাস্তি পেতে হবে। যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণে টিটিইর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
টিটিই মানসিকভাবে হীনম্মন্যতায় ভোগেন বলে দাবি ডিসিও পাকশীর
টিটিই শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত হওয়া বিষয়ে ডিসিও (বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা) পাকশী মো. নাসির উদ্দীন লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, গত ৫ মে রাতে কিছু যাত্রী ঈশ্বরদী স্টেশনে কাউন্টারে আসেন। কিন্তু কাউন্টারে কোন টিকেট পাননি। তাদের ঢাকা যেতেই হবে। তাই অগত্যা বাধ্য হয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে যেখানে জায়গা পান সেখানেই উঠে পড়েন।
টিটিই শফিক ট্রেনে উঠে যাত্রীদের কাছে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তিন হাজার টাকা করে ভাড়া দাবি করেন। তখন যাত্রীরা জানান, তারা ঈশ্বরদী থেকে টিকেট না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রেনে উঠেছেন। তারা ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে ভাড়া নেয়ার জন্য টিটিইকে অনুরোধ করেন। কিন্তু টিটিই জবাবে বলেন, ট্রেন কি তোর বাপের তখন যাত্রী বলেন, ‘ট্রেন কি তোর বাপের মানে কি বিপদে পইড়া ট্রেনে উঠেছি। আপনি ভাড়াটা নেন।’
তখন টিটিই বলেন দ্বিগুণ জরিমানাসহ খুলনা থেকে ভাড়া দিতেই হবে। তখন যাত্রীরা বলেন, এত টাকা আমাদের কাছে নেই। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে রাখেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য গত ৩ মাস আগে টিটিই শফিককে পাকশী দপ্তরে বুক অফ করা হয়। তারপর তিনি যাত্রীদের সঙ্গে এমন আচরণ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর তাকে কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়। শফিক আইন বিষয়ে এলএলএম করেন। মূলত তিনি তার মানসিক হীনম্মন্যতায় ভুগছেন। এজন্যই তিনি যাত্রীসাধারণের সঙ্গে বেশিরভাগ সময়ই অযাচিতভাবে খারাপ আচরণ করেন।
এই লিখিত বক্তব্যটি গতকাল রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম রেলওয়ের একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করেছেন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে শরিফুল আলমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে টিটিই শফিকুল ইসলাম গত শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি যাত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি তার ওপর তারা মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। তারা টিকেট ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদী জংশন থেকে শুক্রবার রাতে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি কেবিনে ওঠেন। তাদের শোভন শ্রেণীর বগিতে পাঠানো হয়। সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তার নির্দেশে ৩৫০ টাকা করে জরিমানা করা হয়। ট্রেন ঢাকা পৌঁছানোর আগেই ভোররাতে টিটিই শফিকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার মোবাইল ফোনে কল করে বরখাস্তের খবর জানানো হয় বলে জানান তিনি। শুক্রবার এ খবর প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রেলওয়ের
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে। গত শুক্রবার রাতেই রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) সাজেদুল ইসলাম বাবুকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির অন্য সমস্যরা হলেন রেলওয়ে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (এইএন) শিপন আলী ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহকারী কমান্ডেন্ট (এসিআরএনবি) আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ভ্রাম্যমাণ টিকেট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে রোববার পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে তলব করেছে তদন্ত কমিটি।’
টিটিই বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা ন্যক্কারজনক, মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি টিআইবির
রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণের দায়ে জরিমানা করায় টিটিই বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা ন্যক্কারজনক; নৈতিকবোধ থেকে মন্ত্রীর সাময়িক সময়ের জন্য পদত্যাগের আহ্বান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থটি উল্লেখ করেন, বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণের দায়ে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর তিন আত্মীয়কে জরিমানা করায় সংশ্লিষ্ট টিকেট পরিদর্শককে (টিটিই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি একটি ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গভীর উদ্বেগ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি নির্লজ্জ ও নিকৃষ্টতম উদাহরণ। এখানে মূলত দুইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে, প্রথমত রেলমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়দের বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণ অর্থাৎ তারা ধরেই নিয়েছিলেন যে, রেলের প্রচলিত আইন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়! দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট টিকেট পরিদর্শক তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করায় তাকে কোন ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করেই তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল ফোনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুরস্কৃত হওয়ার পরিবর্তে বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা-দেশবাসীর কাছে এই বার্তাটিই পৌঁছেছে যে, ক্ষমতার দাপট ও অনিয়মই হচ্ছে বাস্তবতা। তাছাড়া এই নিকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত এখনও গুটিকয়েক যারা নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের জন্য একটি শক্তিশালী নেতিবাচক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।’