শিমুলিয়া-দৌলতদিয়া ঢাকামুখী মানুষের ঢল অব্যাহত, ভোগান্তি চরমে

ঈদ শেষে ঢাকামুখী মানুষের ফেরিঘাটে ভোগান্তি কমছে না। ৩০-৪০ মিনিটের নৌ-পথ অতিক্রম করতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা। দীর্ঘ সময় ফেরিঘাটে অপেক্ষার কারণে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। গতকালও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ছিল ঢাকামুখী মানুষের ঢল। ফেরিঘাটে পরিবহন সংকট, অতিরিক্ত ভাড়া ও যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে যাত্রী ও চালকরা জানান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদের সপ্তম দিনেও ভিড় কমেনি মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। গতকাল সকাল থেকে বাংলাবাজার থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়াগামী প্রতিটি ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে ছিল কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের ভিড়। বাংলাবাজার ঘাট থেকে ফেরিতে উঠতে যানবাহনগুলোকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে এই নৌপথে ফেরি পারাপারে এসে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। তবে শিমুলিয়াগামী মোটরসাইকেলগুলো ঘাট এলাকায় আসার এক ঘণ্টার মধ্যেই ফেরিতে উঠতে পারছে বলে যাত্রীরা জানান।

সরেজমিনে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহনশূণ্য ফেরিগুলো বাংলাবাজার ঘাটে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনগুলো ফেরিতে উঠতে হুড়োহুড়ি শুরু করে। ঘাটে মোটরসাইকেলের চাপ বেশি থাকায় মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়িগুলো ফেরিতে পারে না। ফলে মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির চালকদের কমপক্ষে দুই ঘণ্টা ঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

খুলনা থেকে আসা ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফেরিঘাটে ভিড়লেই মোটরসাইকেল আর কথিত ভিআইপি গাড়ি দিয়ে ফেরির ডেক ভরে যায়। আমাদের সিরিয়াল থেকে প্রতিটি ফেরিতে চার থেকে পাঁচটা গাড়ি তোলা হয়। এ কারণেই ঘাটে আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। বেলা ১০টায় ঘাটে এসে এখন দুপুর ১২টা বাজে। এখনও ফেরিতে উঠতে পারলাম না। এসব পুলিশ ও ঘাট কর্তৃপক্ষের চোখের সামনেই হচ্ছে। তারা দেখেও কিছুই বলছেন না।’

ঢাকামুখী একটি মাইক্রোবাসের এক চালক বলেন, ‘ফেরি ঘাটে ভোগান্তি হবে এটা এখন নিয়ম। শত অনুরোধেও আগে যেতে পারেননি তারা। আর হুট করে কিছু গাড়ি ঘাটে আসামাত্রই ফেরিতে উঠে পড়ছে। এগুলো দেখে এখন অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই বলার নেই।’

এছাড়া বাংলাবাজারের লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটেও ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় ছিল বেশি। গাদাগাদি করে যাত্রীরা পদ্মা পার হতে দেখা গেছে। প্রতিটি স্পিডবোট ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীর পাশাপাশি বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা।

বরিশাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রী ইকবাল নামের এক যাত্রী বলেন, ‘স্পিডবোট ভাড়া ১৫০ টাকা। এখন ঈদ বলে ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। বোটগুলোয় ১২ জন করে নেয়ার কথা থাকলেও এখন নেয় ১৮ থেকে ২০ জন। লঞ্চগুলোতে আরও বেশি ভিড়।’ দুর্ভোগ কমাতে বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই স্পিডবোটে উঠেছেন বলে জানান তিনি। খুলনা থেকে আসা মনির নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ঘাটে অনেক লঞ্চ আছে। তবুও লঞ্চগুলো গাদাগাদি করে যাত্রী তুলছে। লঞ্চের ভেতরে বসার জায়গা নেই। পুরো পথটি পরিবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।’

অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি) বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানায়, গত রোববার থেকে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীমুখী যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে। শুক্র ও শনিবার এই নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের উপচে পড়া ভিড় ছিল। এ সময় ঘাটে ফেরি পারাপারে আসা যাত্রী ও চালকদের ছয় থেকে থেকে ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। তবে গত রোববার থেকে ভিড় কিছুটা কমতে শুরু করলেও এখনও বাংলাবাজার ঘাটে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের ভিড় আছে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামলাতে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ৬টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও দেড় শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে।

বিআইডব্লিটিসি বাংলাবাজারের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় কমেছে। এখন আর উপচেপড়া ভিড় নেই। ঘাটে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই যানবাহন ফেরিতে উঠতে পারছে। ভিআইপির কোন সুবিধা ঘাটে চালু নেই। তারা নিয়ম মেনেই ফেরিতে যানবাহন তুলছেন। এখানে সমস্যা হলো শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে ফেরিগুলো গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। তাই শিমুলিয়া থেকে ফেরিগুলো আসতে দেরি করছে। আর এ কারণে কিছু সময় বাংলাবাজার ঘাটে যানবাহনের বেশি দেখা যায়।’

দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা

ভোগান্তি কমছে না রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে, ৪০ মিনিটের পথ পদ্মা নদী পাড়ি দিতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।

সাতক্ষীরা থেকে ফেরিঘাটে আসা পারভিন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ফেরিঘাটে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। কিং ফিসার পরিবহনের ঢাকায় যাচ্ছি। রাত ১২টা থেকে ঘাটে আটকে আছি। আমরা তো মেয়েমানুষ, আমরা তো ছেলেদের মতো বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে পারি না। কত সময় আমরা গাড়িতে বসে থাকতে পারি বলেন? দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা এর বেশি না। এখানে নেই কোন বাথরুমের ব্যবস্থা। খুঁজেও পাইনি। মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করেছি, বলে আরও তিন-চার ঘণ্টা নাকি লাগবে। এখন তো চিৎকার করে কান্না পাচ্ছে।’’

নুসরাত জাহান নামের অপর এক মহিলা যাত্রী বলেন, ‘রাত থেকে ফেরির জন্য বসে আছি। এখন সোমবার সকাল ১০টা বাজলেও দুই কিলোমিটার দূরে জ্যামে বসে আছি। আরও তিন ঘণ্টাতেও ফেরিতে উঠতে পারব কি-না জানি না। ঈদ শেষে পরিবার নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি, সঙ্গে শিশু বাচ্চা আছে। গরমে অস্থির হয়ে যাচ্ছে।’

সিদ্দিকুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমি খুলনা থেকে এসেছি। রাত ১টা থেকে ফেরি ঘাটে আটকে আছি। এখন সকাল সাড়ে ১০টা বাজলেও ফেরিতে উঠতে পারিনি। জ্যামে না থাকলে হয়তো অনেক আগেই গাজীপুর পৌঁছে যেতাম।’

বিআইডব্লিউটিসি মানিকগঞ্জের আরিচা বন্দরের উপ-পরিচালক মো. খালেক নেওয়াজ বলেন, ‘যানবাহনের চাপ রয়েছে। ফলে যানবাহনগুলোকে দৌলতদিয়া প্রান্তে ফেরির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এই নৌ-পথে ২১টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হলেও তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি মঙ্গলবারের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’

মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২ , ২৭ বৈশাখ ১৪২৮ ০৭ শাওয়াল ১৪৪৩

শিমুলিয়া-দৌলতদিয়া ঢাকামুখী মানুষের ঢল অব্যাহত, ভোগান্তি চরমে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঈদ শেষে ঢাকামুখী মানুষের ফেরিঘাটে ভোগান্তি কমছে না। ৩০-৪০ মিনিটের নৌ-পথ অতিক্রম করতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা। দীর্ঘ সময় ফেরিঘাটে অপেক্ষার কারণে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। গতকালও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ছিল ঢাকামুখী মানুষের ঢল। ফেরিঘাটে পরিবহন সংকট, অতিরিক্ত ভাড়া ও যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে যাত্রী ও চালকরা জানান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদের সপ্তম দিনেও ভিড় কমেনি মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। গতকাল সকাল থেকে বাংলাবাজার থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়াগামী প্রতিটি ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে ছিল কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের ভিড়। বাংলাবাজার ঘাট থেকে ফেরিতে উঠতে যানবাহনগুলোকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে এই নৌপথে ফেরি পারাপারে এসে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। তবে শিমুলিয়াগামী মোটরসাইকেলগুলো ঘাট এলাকায় আসার এক ঘণ্টার মধ্যেই ফেরিতে উঠতে পারছে বলে যাত্রীরা জানান।

সরেজমিনে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহনশূণ্য ফেরিগুলো বাংলাবাজার ঘাটে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনগুলো ফেরিতে উঠতে হুড়োহুড়ি শুরু করে। ঘাটে মোটরসাইকেলের চাপ বেশি থাকায় মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়িগুলো ফেরিতে পারে না। ফলে মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির চালকদের কমপক্ষে দুই ঘণ্টা ঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

খুলনা থেকে আসা ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফেরিঘাটে ভিড়লেই মোটরসাইকেল আর কথিত ভিআইপি গাড়ি দিয়ে ফেরির ডেক ভরে যায়। আমাদের সিরিয়াল থেকে প্রতিটি ফেরিতে চার থেকে পাঁচটা গাড়ি তোলা হয়। এ কারণেই ঘাটে আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। বেলা ১০টায় ঘাটে এসে এখন দুপুর ১২টা বাজে। এখনও ফেরিতে উঠতে পারলাম না। এসব পুলিশ ও ঘাট কর্তৃপক্ষের চোখের সামনেই হচ্ছে। তারা দেখেও কিছুই বলছেন না।’

ঢাকামুখী একটি মাইক্রোবাসের এক চালক বলেন, ‘ফেরি ঘাটে ভোগান্তি হবে এটা এখন নিয়ম। শত অনুরোধেও আগে যেতে পারেননি তারা। আর হুট করে কিছু গাড়ি ঘাটে আসামাত্রই ফেরিতে উঠে পড়ছে। এগুলো দেখে এখন অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই বলার নেই।’

এছাড়া বাংলাবাজারের লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটেও ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় ছিল বেশি। গাদাগাদি করে যাত্রীরা পদ্মা পার হতে দেখা গেছে। প্রতিটি স্পিডবোট ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীর পাশাপাশি বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা।

বরিশাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রী ইকবাল নামের এক যাত্রী বলেন, ‘স্পিডবোট ভাড়া ১৫০ টাকা। এখন ঈদ বলে ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। বোটগুলোয় ১২ জন করে নেয়ার কথা থাকলেও এখন নেয় ১৮ থেকে ২০ জন। লঞ্চগুলোতে আরও বেশি ভিড়।’ দুর্ভোগ কমাতে বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই স্পিডবোটে উঠেছেন বলে জানান তিনি। খুলনা থেকে আসা মনির নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ঘাটে অনেক লঞ্চ আছে। তবুও লঞ্চগুলো গাদাগাদি করে যাত্রী তুলছে। লঞ্চের ভেতরে বসার জায়গা নেই। পুরো পথটি পরিবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।’

অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি) বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানায়, গত রোববার থেকে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীমুখী যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে। শুক্র ও শনিবার এই নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের উপচে পড়া ভিড় ছিল। এ সময় ঘাটে ফেরি পারাপারে আসা যাত্রী ও চালকদের ছয় থেকে থেকে ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। তবে গত রোববার থেকে ভিড় কিছুটা কমতে শুরু করলেও এখনও বাংলাবাজার ঘাটে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের ভিড় আছে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামলাতে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ৬টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও দেড় শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে।

বিআইডব্লিটিসি বাংলাবাজারের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় কমেছে। এখন আর উপচেপড়া ভিড় নেই। ঘাটে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই যানবাহন ফেরিতে উঠতে পারছে। ভিআইপির কোন সুবিধা ঘাটে চালু নেই। তারা নিয়ম মেনেই ফেরিতে যানবাহন তুলছেন। এখানে সমস্যা হলো শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে ফেরিগুলো গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। তাই শিমুলিয়া থেকে ফেরিগুলো আসতে দেরি করছে। আর এ কারণে কিছু সময় বাংলাবাজার ঘাটে যানবাহনের বেশি দেখা যায়।’

দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা

ভোগান্তি কমছে না রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে, ৪০ মিনিটের পথ পদ্মা নদী পাড়ি দিতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।

সাতক্ষীরা থেকে ফেরিঘাটে আসা পারভিন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ফেরিঘাটে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। কিং ফিসার পরিবহনের ঢাকায় যাচ্ছি। রাত ১২টা থেকে ঘাটে আটকে আছি। আমরা তো মেয়েমানুষ, আমরা তো ছেলেদের মতো বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে পারি না। কত সময় আমরা গাড়িতে বসে থাকতে পারি বলেন? দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা এর বেশি না। এখানে নেই কোন বাথরুমের ব্যবস্থা। খুঁজেও পাইনি। মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করেছি, বলে আরও তিন-চার ঘণ্টা নাকি লাগবে। এখন তো চিৎকার করে কান্না পাচ্ছে।’’

নুসরাত জাহান নামের অপর এক মহিলা যাত্রী বলেন, ‘রাত থেকে ফেরির জন্য বসে আছি। এখন সোমবার সকাল ১০টা বাজলেও দুই কিলোমিটার দূরে জ্যামে বসে আছি। আরও তিন ঘণ্টাতেও ফেরিতে উঠতে পারব কি-না জানি না। ঈদ শেষে পরিবার নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি, সঙ্গে শিশু বাচ্চা আছে। গরমে অস্থির হয়ে যাচ্ছে।’

সিদ্দিকুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমি খুলনা থেকে এসেছি। রাত ১টা থেকে ফেরি ঘাটে আটকে আছি। এখন সকাল সাড়ে ১০টা বাজলেও ফেরিতে উঠতে পারিনি। জ্যামে না থাকলে হয়তো অনেক আগেই গাজীপুর পৌঁছে যেতাম।’

বিআইডব্লিউটিসি মানিকগঞ্জের আরিচা বন্দরের উপ-পরিচালক মো. খালেক নেওয়াজ বলেন, ‘যানবাহনের চাপ রয়েছে। ফলে যানবাহনগুলোকে দৌলতদিয়া প্রান্তে ফেরির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এই নৌ-পথে ২১টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হলেও তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি মঙ্গলবারের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’