পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা পদ্মা সেতু পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়

দেশের অন্যতম পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে পদ্মা সেতু। তার নমুনা ঈদকে কেন্দ্র করে পদ্মা সেতু এলাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আশা পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় । এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই দুই পাড়ে হাজারো পর্যটকের ভিড় দেখা যায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন পদ্মার ইলিশ খেতে এবং উপভোগ করেন সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু।

গত বুধবার (৪ এপ্রিল), বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্টে অবস্থান করে দেখা যায়, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্টে নির্মিত টোল প্লাজার আশপাশে ক্রমেই মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে ভাসমান মুখরোচক খাবারের দোকান। স্থায়ীভাবে আরো বেড়েছে রেস্টুরেন্টও। দেশের এই বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা সেতুকে কাছ থেকে দর্শনের শেষে সেতু এলাকায় জমে উঠে আগত পর্যটকদের আড্ডা আর ঘুনসুটি। এমনটি শুধু ঈদকে কেন্দ্র করে হয় তা নয়। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ আসে এই এলাকাতে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখে সময় কাটাতে। পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শুরুর পরে গত কয়েক বছর যাবৎ দূর দূরান্ত থেকে পদ্মা সেতু দেখতে আসা মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকা জাজিরা নাওডোবাসহ অন্যান্য এলাকা। তবে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার স্বার্থে সেতুর কাছাকাছি কাউকে যেতে দিচ্ছে না পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শেখ রাসেল সেনানিবাসের সেনা সদস্যরা।

প্রমত্তা পদ্মার বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানো সেতুর অবকাঠামো, বিস্তৃত ধুধু চরভূমি বা ফসলের ক্ষেত, এক্সপ্রেস সড়কের ধার এবং নদী শাসন বাঁধের পাড় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে নদীর স্নিগ্ধ বাতাসের ছোঁয়া আর পদ্মার স্বচ্ছ জলে নৌকা কিংবা অন্যান্য নৌযানে ঘুরে বেড়ানো বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। তাই এর থেকেই পর্যটনের প্রবল সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয়রা। বুধবার (৪ এপ্রিল), বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্টের টোল প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করলে তারা এ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

ফরিদপুর থেকে পদ্মা সেতু দেখতে আসা রায়হান খান বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদে একটু ঘুরে বেড়ানোর সময় পাই। তাই যেকোন একটি দর্শনীয় স্থান নির্বাচন করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি একটু স্বস্তির আশায়। এবার ভাবলাম পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। এখন সেতুটি দেখতে অসাধারণ লাগবে ভেবে এবার পদ্মা সেতু দর্শন করতে চলে এলাম। কিন্তু সেতুর কাছে যেতে দিচ্ছেনা সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে দূর থেকে হলেও পদ্মা সেতু দেখে ভালো লাগছে।’

পদ্মা সেতু দেখতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে রমজান উদ্দিন এসেছেন পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু সবসময় টিভিতেই দেখি।

তাই ভাবলাম ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সবাই মিলে সামনে থেকে পদ্মা সেতু দেখব। কিন্তু সেনাবাহিনী আর পুলিশ পদ্মা সেতুর কাছাকাছি যেতে দিচ্ছে না। তাই দূর থেকেই দেখছি আর সবাইকে নিয়ে আড্ডা করছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, বর্তমানে পদ্মা সেতু দেখতে আসা লোকজনের সংখ্যা এখন অনেক বেশি। এছাড়াও ঈদ, পূজাসহ যেকোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এখন পদ্মা সেতু দেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থাপনা তা দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের উৎফুল্লতা দেখেই বুঝা যায়।

পদ্মা সেতু জাজিরা পয়েন্ট নাওডোবা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা আরো বলেন, এখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ ঘুরতে আসায় আমাদের ব্যবসা-বানিজ্য বেড়েছে। আমাদের এই এলাকা একসময় ছিল একটি উপজেলার শেষ সীমানা। আর এখন হয়েছে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন এলাকা।

বুধবার, ১১ মে ২০২২ , ২৮ বৈশাখ ১৪২৮ ০৮ শাওয়াল ১৪৪৩

পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা পদ্মা সেতু পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়

প্রতিনিধি, শরীয়তপুর (জাজিরা)

দেশের অন্যতম পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে পদ্মা সেতু। তার নমুনা ঈদকে কেন্দ্র করে পদ্মা সেতু এলাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আশা পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় । এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই দুই পাড়ে হাজারো পর্যটকের ভিড় দেখা যায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন পদ্মার ইলিশ খেতে এবং উপভোগ করেন সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু।

গত বুধবার (৪ এপ্রিল), বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্টে অবস্থান করে দেখা যায়, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্টে নির্মিত টোল প্লাজার আশপাশে ক্রমেই মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে ভাসমান মুখরোচক খাবারের দোকান। স্থায়ীভাবে আরো বেড়েছে রেস্টুরেন্টও। দেশের এই বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা সেতুকে কাছ থেকে দর্শনের শেষে সেতু এলাকায় জমে উঠে আগত পর্যটকদের আড্ডা আর ঘুনসুটি। এমনটি শুধু ঈদকে কেন্দ্র করে হয় তা নয়। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ আসে এই এলাকাতে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখে সময় কাটাতে। পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শুরুর পরে গত কয়েক বছর যাবৎ দূর দূরান্ত থেকে পদ্মা সেতু দেখতে আসা মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকা জাজিরা নাওডোবাসহ অন্যান্য এলাকা। তবে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার স্বার্থে সেতুর কাছাকাছি কাউকে যেতে দিচ্ছে না পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শেখ রাসেল সেনানিবাসের সেনা সদস্যরা।

প্রমত্তা পদ্মার বুকে মাথা তুলে দাঁড়ানো সেতুর অবকাঠামো, বিস্তৃত ধুধু চরভূমি বা ফসলের ক্ষেত, এক্সপ্রেস সড়কের ধার এবং নদী শাসন বাঁধের পাড় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে নদীর স্নিগ্ধ বাতাসের ছোঁয়া আর পদ্মার স্বচ্ছ জলে নৌকা কিংবা অন্যান্য নৌযানে ঘুরে বেড়ানো বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। তাই এর থেকেই পর্যটনের প্রবল সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয়রা। বুধবার (৪ এপ্রিল), বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্টের টোল প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করলে তারা এ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

ফরিদপুর থেকে পদ্মা সেতু দেখতে আসা রায়হান খান বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদে একটু ঘুরে বেড়ানোর সময় পাই। তাই যেকোন একটি দর্শনীয় স্থান নির্বাচন করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি একটু স্বস্তির আশায়। এবার ভাবলাম পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। এখন সেতুটি দেখতে অসাধারণ লাগবে ভেবে এবার পদ্মা সেতু দর্শন করতে চলে এলাম। কিন্তু সেতুর কাছে যেতে দিচ্ছেনা সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে দূর থেকে হলেও পদ্মা সেতু দেখে ভালো লাগছে।’

পদ্মা সেতু দেখতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে রমজান উদ্দিন এসেছেন পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু সবসময় টিভিতেই দেখি।

তাই ভাবলাম ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সবাই মিলে সামনে থেকে পদ্মা সেতু দেখব। কিন্তু সেনাবাহিনী আর পুলিশ পদ্মা সেতুর কাছাকাছি যেতে দিচ্ছে না। তাই দূর থেকেই দেখছি আর সবাইকে নিয়ে আড্ডা করছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, বর্তমানে পদ্মা সেতু দেখতে আসা লোকজনের সংখ্যা এখন অনেক বেশি। এছাড়াও ঈদ, পূজাসহ যেকোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এখন পদ্মা সেতু দেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থাপনা তা দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের উৎফুল্লতা দেখেই বুঝা যায়।

পদ্মা সেতু জাজিরা পয়েন্ট নাওডোবা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা আরো বলেন, এখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ ঘুরতে আসায় আমাদের ব্যবসা-বানিজ্য বেড়েছে। আমাদের এই এলাকা একসময় ছিল একটি উপজেলার শেষ সীমানা। আর এখন হয়েছে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন এলাকা।