মহাসড়কে কৃষ্ণচূড়া আর কনকচূড়ার দোলনা

গাড়ির জানালায় চোখ রাখতেই মন, সত্যি বলছি, নেচে উঠল। রাস্তার ধারে আশ্চর্য সুন্দর কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে। গত কয়েকদিন ধরেই ফুলটির পানে দৃষ্টি। এর পরও যেন প্রথম দেখার অনুভূতি হয়! চোখ সরাতে মন চায় না। গাড়ির গ্লাস নামাতেই বোঝা গেল, কয়েক দফা বৃষ্টি কৃষ্ণচূড়ার লাল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে বাসে উঠা শুভ রহমান ( ৪৪) নামে এক যাত্রী ঢাকা যাবে। ব্যক্ত করলো তার নানান ফুলে সুশোভিত যাত্রায় ভালো লাগার অনুভূতি।

কবি শামসুর রাহমানের কবিতার পঙ্ক্তি আওড়াতে লাগলেন তিনিÑ আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে...। লাল রঙের পাপড়িতে বাঙালির চেতনার রঙ দেখেছিলেন শামসুর রাহমান। অবিকল যেন আমি ও দেখছি। কৃষ্ণচূড়া দেখার এখন সময়। একপলক দেখার চেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বের হতে হচ্ছে না যাত্রা পথেই মীরসরাই উপজেলার হাদিফকিরহাট, মিঠাছরা, সোনাপাহাড় অংশে কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়া সারি সারি যেন স্বাগত জানাচ্ছে মহাসড়কের দূরদূরান্তের সব যাত্রীদের। যাত্রার ক্লান্তি ও যেন সুখকর শিল্পমনা সবার।

বলার অপেক্ষা রাখে না, গ্রীষ্মের সবচেয়ে উল্লেযোগ্য ফুলটির নাম কৃষ্ণচূড়া। এবারও বৈশাখের শুরুতেই ফুল ফুটেছিল। ক্রমে গাঢ় লাল হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিডইয়ানে সারি সারি লাগানো ফুল গাছগুলো দিনে দিনে যত বড় হচ্ছে ততই বেড়ে চলছে তার শোভা। নানান বাহারি বিলুপ্ত প্রায় ফুলগুলো এখানে যেমন শোভা বর্ধন করেছে তেমনি সবার মন রাঙ্গিয়ে তুলছে যেন। অপলক চোখে অনেকেই তাকিয়ে থাকেন মহাসড়কের ফুলের সারিতে। তার ওপর মেঘের আনাগোনা, বৃষ্টির রিমঝিম স্নিগ্ধ স্নাত বেলাগুলো ভিন্ন ভিন্ন রূপেই আসছে যেন দৃষ্টিবিলাসীদের চোখে। কোথাও রক্ত করবি, কোথাও রাধাচূড়া, কোথাও কনকচূড়া, কোথাও জারুল, কোথাও হিজল আরও কত ফুল দোল খেয়ে যেন লুটিয়ে পড়ে হাসে যাত্রীদের সম্মুখপানে, আর ফেলে আসা পেছনে। সম্মুখপানের কৃষ্ণচূড়া যেন স্বাগত জানাাচ্ছে অনাবিল সামনের পথে। নিসর্গপ্রেমীরা তো ভাবনায় মত্ত যেন। প্রাতঃভ্রমণে আসা সাধারণ মানুষও কৃষ্ণচূড়ার দিকে তাকিয়ে পথ হাঁটেন তারা যেন আনমনে বলছেনÑ এই পথ যদি না শেষ হয়... শেষ না হলেই যেন খুশি সবাই!

এই ফুলের প্রধান বৈশিষ্ট্য এর উজ্জ্বল রঙ। তরুরাজ্যে এত উজ্জ্বল রঙ সত্যি দুর্লভ। ফুলের পাপড়ির রঙ গাঢ় লাল, লাল, কমলা, হলুদ, হালকা হলুদ হয়ে থাকে। পস্ফুটিত ফুলের ব্যাস ২ ইঞ্চি থেকে ৩ ইঞ্চি। বৃত্তির বহিরাংশ সবুজ। ভেতরের অংশ রক্তিম। অবশ্য এসব তথ্য নিসর্গবিদরাই খোঁজেন বেশি। ফুলপ্রেমীরা কৃষ্ণচূড়ার লালে হারিয়ে যেতে ভালোবাসেন। হারিয়ে যান। হারিয়ে যাওয়ার কী যে আনন্দ, পুরো গ্রীষ্মজুড়ে এবার কৃষ্ণচূড়ার ভিন্নরূপ দেখতে ভুলবেন না সবাই। এতে মানুষের সুন্দর দিকই বিকশিত হয়, আলোকিত হয়।

image

মীরসরাই : মহাসড়কের দু’পাশে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া-কনকচূড়া -সংবাদ

আরও খবর
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
একনেকে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন
ঘাতসহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে ইরি’র সহযোগিতার আশ্বাস
হাজী সেলিমের খালাসের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দুদকের
যশোরে এক বছরে ব্যাংকে নগদ লেনদেন ২৭ হাজার কোটি টাকা
আ’লীগের অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে খারাপ হবে, বললেন ফখরুল
নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, ফের গণ্ডগোলে পণ্ড সন্ধানী’র কমিটি গঠন
স্কুলছাত্র ইসরাফিল হত্যা : তিন বছর পর রহস্য উদ্ঘাটন
কাজে যোগদান টিটিই শফিকুলের
পিকে হালদারের সহযোগী স্বপন ও পূর্ণিমার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বুধবার, ১১ মে ২০২২ , ২৮ বৈশাখ ১৪২৮ ০৮ শাওয়াল ১৪৪৩

মহাসড়কে কৃষ্ণচূড়া আর কনকচূড়ার দোলনা

রণজিত ধর, মীরসরাই (চট্টগ্রাম)

image

মীরসরাই : মহাসড়কের দু’পাশে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া-কনকচূড়া -সংবাদ

গাড়ির জানালায় চোখ রাখতেই মন, সত্যি বলছি, নেচে উঠল। রাস্তার ধারে আশ্চর্য সুন্দর কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে। গত কয়েকদিন ধরেই ফুলটির পানে দৃষ্টি। এর পরও যেন প্রথম দেখার অনুভূতি হয়! চোখ সরাতে মন চায় না। গাড়ির গ্লাস নামাতেই বোঝা গেল, কয়েক দফা বৃষ্টি কৃষ্ণচূড়ার লাল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে বাসে উঠা শুভ রহমান ( ৪৪) নামে এক যাত্রী ঢাকা যাবে। ব্যক্ত করলো তার নানান ফুলে সুশোভিত যাত্রায় ভালো লাগার অনুভূতি।

কবি শামসুর রাহমানের কবিতার পঙ্ক্তি আওড়াতে লাগলেন তিনিÑ আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে...। লাল রঙের পাপড়িতে বাঙালির চেতনার রঙ দেখেছিলেন শামসুর রাহমান। অবিকল যেন আমি ও দেখছি। কৃষ্ণচূড়া দেখার এখন সময়। একপলক দেখার চেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বের হতে হচ্ছে না যাত্রা পথেই মীরসরাই উপজেলার হাদিফকিরহাট, মিঠাছরা, সোনাপাহাড় অংশে কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়া সারি সারি যেন স্বাগত জানাচ্ছে মহাসড়কের দূরদূরান্তের সব যাত্রীদের। যাত্রার ক্লান্তি ও যেন সুখকর শিল্পমনা সবার।

বলার অপেক্ষা রাখে না, গ্রীষ্মের সবচেয়ে উল্লেযোগ্য ফুলটির নাম কৃষ্ণচূড়া। এবারও বৈশাখের শুরুতেই ফুল ফুটেছিল। ক্রমে গাঢ় লাল হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিডইয়ানে সারি সারি লাগানো ফুল গাছগুলো দিনে দিনে যত বড় হচ্ছে ততই বেড়ে চলছে তার শোভা। নানান বাহারি বিলুপ্ত প্রায় ফুলগুলো এখানে যেমন শোভা বর্ধন করেছে তেমনি সবার মন রাঙ্গিয়ে তুলছে যেন। অপলক চোখে অনেকেই তাকিয়ে থাকেন মহাসড়কের ফুলের সারিতে। তার ওপর মেঘের আনাগোনা, বৃষ্টির রিমঝিম স্নিগ্ধ স্নাত বেলাগুলো ভিন্ন ভিন্ন রূপেই আসছে যেন দৃষ্টিবিলাসীদের চোখে। কোথাও রক্ত করবি, কোথাও রাধাচূড়া, কোথাও কনকচূড়া, কোথাও জারুল, কোথাও হিজল আরও কত ফুল দোল খেয়ে যেন লুটিয়ে পড়ে হাসে যাত্রীদের সম্মুখপানে, আর ফেলে আসা পেছনে। সম্মুখপানের কৃষ্ণচূড়া যেন স্বাগত জানাাচ্ছে অনাবিল সামনের পথে। নিসর্গপ্রেমীরা তো ভাবনায় মত্ত যেন। প্রাতঃভ্রমণে আসা সাধারণ মানুষও কৃষ্ণচূড়ার দিকে তাকিয়ে পথ হাঁটেন তারা যেন আনমনে বলছেনÑ এই পথ যদি না শেষ হয়... শেষ না হলেই যেন খুশি সবাই!

এই ফুলের প্রধান বৈশিষ্ট্য এর উজ্জ্বল রঙ। তরুরাজ্যে এত উজ্জ্বল রঙ সত্যি দুর্লভ। ফুলের পাপড়ির রঙ গাঢ় লাল, লাল, কমলা, হলুদ, হালকা হলুদ হয়ে থাকে। পস্ফুটিত ফুলের ব্যাস ২ ইঞ্চি থেকে ৩ ইঞ্চি। বৃত্তির বহিরাংশ সবুজ। ভেতরের অংশ রক্তিম। অবশ্য এসব তথ্য নিসর্গবিদরাই খোঁজেন বেশি। ফুলপ্রেমীরা কৃষ্ণচূড়ার লালে হারিয়ে যেতে ভালোবাসেন। হারিয়ে যান। হারিয়ে যাওয়ার কী যে আনন্দ, পুরো গ্রীষ্মজুড়ে এবার কৃষ্ণচূড়ার ভিন্নরূপ দেখতে ভুলবেন না সবাই। এতে মানুষের সুন্দর দিকই বিকশিত হয়, আলোকিত হয়।