লাখ টাকা বাড়িয়ে হজ প্যাকেজ ঘোষণা

করোনা মহামারীর প্রকোপের মধ্যে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার হজযাত্রার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। হজযাত্রায় আগ্রহীদের জন্য সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ এবং বেসরকারিভাবে একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে অন্য বছরের তুলনায় সর্বনি¤œ প্যাকেজে খরচ বেড়েছে লাখ টাকার বেশি। এবার চার লাখ ৫৬ হাজার টাকার কমে কেউ হজে যেতে পারবেন না। গতকাল সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় সরকারিভাবে দুটি এবং বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য একটি প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়।

সভা শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সাংবাদিকের বলেন, এ বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হলো। প্যাকেজ-১ এ হজে যেতে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা খরচ হবে। এ প্যাকেজের যাত্রীরা মসজিদুল হারামের ১০০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে থাকবেন। সর্বনি¤œ প্যাকেজ ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা (প্যাকেজ-২) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্যাকেজের আওতায় হজযাত্রীরা মসজিদুল হারামের ১৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করবেন।

তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকার প্যাকেজ প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ এজেন্সিগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ ও প্যাকেজ-২ এর সঙ্গে মিল রেখে একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

এদিকে, কেবল বয়সের সীমাবদ্ধতার কারণে এবার আবেদন করেও ১০ হাজার আবেদনকারী হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, সৌদি আরব সরকারের

ঘোষণা অনুযায়ী ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বিদ্যমান প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার পরিবর্তে হজ এজেন্সি ইউজার তার এজেন্সিতে ৬৫ বছরের ওপরে নিবন্ধিত এবং ২০২২ সালে নিবন্ধনের সময় ওই ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধিত ৬৫ বছরের কম বয়সী নারী/অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের যারা মাহরামজনিত কারণে যেতে পারবেন না, সেই তালিকার বিপরীতে সমান সংখ্যক প্রাক নিবন্ধিতকে সরাসরি পিলগ্রিম আইডি দেয়া হবে। এই তালিকার জন্য কোটা নির্ধারিত থাকবে না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মুয়াল্লিম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে ২০২২ সালের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার ২টি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সিগুলোর জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের কোরবানি বাবদ প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৮১০ সৌদি রিয়াল বা ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

এর আগে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই বছরের জন্য হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ওই বছর বা গত বছর বাংলাদেশ থেকে কেউ হজ করতে সৌদি আরবে যেতে পারেননি।

২০২০ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। প্যাকেজ-১ এ সর্বমোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২ এ তিন লাখ ৬০ হাজার এবং প্যাকেজ-৩ এ তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। আর বেসরকারি প্যাকেজে তিন লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। সে হিসাবে এবার হজে যাওয়ার খরচ বাড়ছে লাখ টাকার বেশি।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে সৌদি রিয়ালের বিনিময় হার ছিল ২৩ টাকা। বর্তমানে এই হার ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। এটিও প্যাকেজ মূল্য বাড়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া সৌদি আরবে সব খাতের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ, কর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোয়াচ্ছাছা এর খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে।

হজ এজেন্সিজ আসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম জানান, বৃহস্পতিবার তারা তাদের পূর্ণাঙ্গ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবেন।

বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২ , ২৯ বৈশাখ ১৪২৮ ০৯ শাওয়াল ১৪৪৩

লাখ টাকা বাড়িয়ে হজ প্যাকেজ ঘোষণা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনা মহামারীর প্রকোপের মধ্যে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার হজযাত্রার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। হজযাত্রায় আগ্রহীদের জন্য সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ এবং বেসরকারিভাবে একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে অন্য বছরের তুলনায় সর্বনি¤œ প্যাকেজে খরচ বেড়েছে লাখ টাকার বেশি। এবার চার লাখ ৫৬ হাজার টাকার কমে কেউ হজে যেতে পারবেন না। গতকাল সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় সরকারিভাবে দুটি এবং বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য একটি প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়।

সভা শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সাংবাদিকের বলেন, এ বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হলো। প্যাকেজ-১ এ হজে যেতে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা খরচ হবে। এ প্যাকেজের যাত্রীরা মসজিদুল হারামের ১০০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে থাকবেন। সর্বনি¤œ প্যাকেজ ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা (প্যাকেজ-২) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্যাকেজের আওতায় হজযাত্রীরা মসজিদুল হারামের ১৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করবেন।

তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকার প্যাকেজ প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ এজেন্সিগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ ও প্যাকেজ-২ এর সঙ্গে মিল রেখে একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

এদিকে, কেবল বয়সের সীমাবদ্ধতার কারণে এবার আবেদন করেও ১০ হাজার আবেদনকারী হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, সৌদি আরব সরকারের

ঘোষণা অনুযায়ী ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বিদ্যমান প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার পরিবর্তে হজ এজেন্সি ইউজার তার এজেন্সিতে ৬৫ বছরের ওপরে নিবন্ধিত এবং ২০২২ সালে নিবন্ধনের সময় ওই ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধিত ৬৫ বছরের কম বয়সী নারী/অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের যারা মাহরামজনিত কারণে যেতে পারবেন না, সেই তালিকার বিপরীতে সমান সংখ্যক প্রাক নিবন্ধিতকে সরাসরি পিলগ্রিম আইডি দেয়া হবে। এই তালিকার জন্য কোটা নির্ধারিত থাকবে না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মুয়াল্লিম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে ২০২২ সালের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার ২টি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সিগুলোর জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের কোরবানি বাবদ প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৮১০ সৌদি রিয়াল বা ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

এর আগে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই বছরের জন্য হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ওই বছর বা গত বছর বাংলাদেশ থেকে কেউ হজ করতে সৌদি আরবে যেতে পারেননি।

২০২০ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। প্যাকেজ-১ এ সর্বমোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২ এ তিন লাখ ৬০ হাজার এবং প্যাকেজ-৩ এ তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। আর বেসরকারি প্যাকেজে তিন লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। সে হিসাবে এবার হজে যাওয়ার খরচ বাড়ছে লাখ টাকার বেশি।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে সৌদি রিয়ালের বিনিময় হার ছিল ২৩ টাকা। বর্তমানে এই হার ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। এটিও প্যাকেজ মূল্য বাড়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া সৌদি আরবে সব খাতের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ, কর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোয়াচ্ছাছা এর খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে।

হজ এজেন্সিজ আসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম জানান, বৃহস্পতিবার তারা তাদের পূর্ণাঙ্গ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবেন।