কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ
প্রায় পাঁচ হাজার গ্রাহকের ৩০ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারারেটিভ সোসাইটির কর্মকর্তারা। গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে গতকাল বিকেলে খিলগাঁও তালতলা এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে হাজার হাজার নারী-পুরুষ। এদিকে বিক্ষোভের মুখে গ্রিন বার্ডের মালিক আলাউদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ। আলাউদ্দিনকে আটকের খবর পেয়ে শত শত নারী-পুরুষ গতকাল রামপুরা থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা সেখানে টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানায়। এ ঘটনায় গ্রাহকদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিম্নআয়ের পরিবার গ্রিন বার্ড নামের মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে টাকা জমিয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের নানাভাবে লভ্যাংশ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে রিকশাচালক, দিনমজুর, মুদি দোকানদার থেকে শুরু করে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের নারী-পুরুষরা টাকা জমা দিত। এভাবে প্রায় ৫ হাজার গ্রাহক হয়েছে। এসব গ্রাহকের জমানো অন্তত ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উঠে মালিক আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। বিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের মালিক আলাউদ্দিন হোসেনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। সেই পাওনা টাকা ফেরতের দাবিতে গতকাল দুপুর থেকে রামপুরা থানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন হাজারো গ্রাহক।
কথিত এ সমবায় সমিতি থেকে পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে রামপুরা থানার সামনে বিক্ষোভ চললেও কোন গ্রাহক এখনও মামলা করতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারী গ্রাহকদের মধ্যে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদের মাধ্যমে তথ্য কাগজে-কলমে পাওনা টাকার হিসাব চলছে।
বিক্ষোভকারী গ্রাহকরা জানান, মঙ্গলবার রাতেই প্রায় ৫ হাজার গ্রাহকের ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. এর মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। গ্রাহকদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত। দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশের লোভে টাকা নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছেন না তারা। এজন্য মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. এর অফিস ঘেরাও করা হয়। অবরুদ্ধ হন মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। পরে রাতেই পুলিশ গিয়ে তাকে হেফাজতে নিয়ে নেয়। গতকাল সকালে প্রথমে মেরাদিয়ার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন প্রাহকরা পরে পুলিশের অনুরোধে রাস্তা ছাড়লেও পরবর্তীতে রামপুরা থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের কার্যালয় রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকায়। এর মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। তিনি এটিকে সমবায় সমিতি হিসেবে পরিচালনা করছিলেন। অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্তরা এ সমিতিতে টাকা জমা রাখছিলেন। ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত আলাউদ্দিন হোসেনকে থানা হেফাজতে রাতেই আনা হয়েছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের টাকা ফেরতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে তারা কাগজে-কলমে তথ্য নির্ভর পাওনাদার গ্রাহকের সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ নিরূপণ করছেন। এখন পর্যন্ত গ্রাহকদের দাবি পাওনা টাকার পরিমাণ কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকা। আর মালিক আলাউদ্দিন স্বীকার করেছেন ৩০ কোটি।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, মালিক আলাউদ্দিন হোসেন তাদের প্রলোভন দেখিয়েছিলেন, ব্যাংকের চেয়ে অনেক বেশি মুনাফা দেবেন। কিন্তু এখন মালিক আলাউদ্দিন মুনাফা তো দূরে থাক জমানো টাকাও ফেরত দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় কার্যালয় ঘেরাও করেন গ্রাহকরা। আজ থানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন পাওনা টাকার দাবিতে
বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২ , ২৯ বৈশাখ ১৪২৮ ০৯ শাওয়াল ১৪৪৩
কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
প্রায় পাঁচ হাজার গ্রাহকের ৩০ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারারেটিভ সোসাইটির কর্মকর্তারা। গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে গতকাল বিকেলে খিলগাঁও তালতলা এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে হাজার হাজার নারী-পুরুষ। এদিকে বিক্ষোভের মুখে গ্রিন বার্ডের মালিক আলাউদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ। আলাউদ্দিনকে আটকের খবর পেয়ে শত শত নারী-পুরুষ গতকাল রামপুরা থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা সেখানে টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানায়। এ ঘটনায় গ্রাহকদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিম্নআয়ের পরিবার গ্রিন বার্ড নামের মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে টাকা জমিয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের নানাভাবে লভ্যাংশ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে রিকশাচালক, দিনমজুর, মুদি দোকানদার থেকে শুরু করে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের নারী-পুরুষরা টাকা জমা দিত। এভাবে প্রায় ৫ হাজার গ্রাহক হয়েছে। এসব গ্রাহকের জমানো অন্তত ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উঠে মালিক আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। বিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের মালিক আলাউদ্দিন হোসেনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। সেই পাওনা টাকা ফেরতের দাবিতে গতকাল দুপুর থেকে রামপুরা থানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন হাজারো গ্রাহক।
কথিত এ সমবায় সমিতি থেকে পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে রামপুরা থানার সামনে বিক্ষোভ চললেও কোন গ্রাহক এখনও মামলা করতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারী গ্রাহকদের মধ্যে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদের মাধ্যমে তথ্য কাগজে-কলমে পাওনা টাকার হিসাব চলছে।
বিক্ষোভকারী গ্রাহকরা জানান, মঙ্গলবার রাতেই প্রায় ৫ হাজার গ্রাহকের ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. এর মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। গ্রাহকদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত। দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশের লোভে টাকা নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছেন না তারা। এজন্য মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. এর অফিস ঘেরাও করা হয়। অবরুদ্ধ হন মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। পরে রাতেই পুলিশ গিয়ে তাকে হেফাজতে নিয়ে নেয়। গতকাল সকালে প্রথমে মেরাদিয়ার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন প্রাহকরা পরে পুলিশের অনুরোধে রাস্তা ছাড়লেও পরবর্তীতে রামপুরা থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের কার্যালয় রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকায়। এর মালিক আলাউদ্দিন হোসেন। তিনি এটিকে সমবায় সমিতি হিসেবে পরিচালনা করছিলেন। অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্তরা এ সমিতিতে টাকা জমা রাখছিলেন। ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত আলাউদ্দিন হোসেনকে থানা হেফাজতে রাতেই আনা হয়েছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের টাকা ফেরতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে তারা কাগজে-কলমে তথ্য নির্ভর পাওনাদার গ্রাহকের সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ নিরূপণ করছেন। এখন পর্যন্ত গ্রাহকদের দাবি পাওনা টাকার পরিমাণ কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকা। আর মালিক আলাউদ্দিন স্বীকার করেছেন ৩০ কোটি।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, মালিক আলাউদ্দিন হোসেন তাদের প্রলোভন দেখিয়েছিলেন, ব্যাংকের চেয়ে অনেক বেশি মুনাফা দেবেন। কিন্তু এখন মালিক আলাউদ্দিন মুনাফা তো দূরে থাক জমানো টাকাও ফেরত দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় কার্যালয় ঘেরাও করেন গ্রাহকরা। আজ থানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন পাওনা টাকার দাবিতে