ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযান বন্ধের দাবি ব্যবসায়ীদের

চোর না হয়ে অহেতুক ব্যবসায়ীদের চোর বানানো থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রংপুরের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা। সেইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ এবং ভোক্তা অধিকার দপ্তরের অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

গতকাল দুপুরে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনে রংপুরের ভোজ্যতেলের পরিবেশকদের সঙ্গে চেম্বার নেতাদের মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।

রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটুর সভাপতিত্বে সভায় ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন রংপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আজিজুল ইসলাম মিন্টু, চেম্বারের পরিচালক, আভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও দ্রব্যমূল্য নির্ধারণবিষয়ক উপপরিষদের আহ্বায়ক ও নবাবগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আকবর আলী, রংপুরের ভোজ্যতেলের হোলসেলার মো. আজিজুল ইসলাম মুকুল, গোবিন্দ সাহা, বিশ^জিৎ পাল, মো. লেলিন, মো. মোস্তাফিজার রহমান, আবদুল হালিম, সাদেকুল ইসলাম, হিরণ কুমার মহতো, বদরুদ্দীন আহমেদ, মো. আবদুল হাকিম, আশেকুর রহমান তুষার, চেম্বারের পরিচালকদের মধ্যে মো. জুলফিকার আজিজ খান ভুট্টু, মো. সাবিহুল হক ও জাভেদ হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে মোকামে ও মিলারদের কাছ থেকে ভোজ্যতেল কিনতে না পারা এবং অহেতুক প্রশাসনিক চাপ ভোজ্যতেলের বাজারকে আরও অস্থির করে তুলবে। ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা আরও উল্লেখ্য করেন, যখন সয়াবিন তেলের লিটার ছিল ৮০ টাকা তখন কমিশন ছিল ৪ টাকা আর এখন সয়াবিন তেলের লিটার যখন ১৯৮ টাকা তখন আমাদের কমিশন শূন্য।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ইতোমধ্যে প্রশাসনিক চাপ ও ব্যবসায়িক সুনাম নষ্টের কারণে রংপুরের ভোজ্যতেলের হোলসেলাররা বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহে অনীহা প্রকাশ করছেন। তারা বলেন, হোলসেলারদের অবশ্যই পণ্য মজুদ করে সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হয়, গোডাউনে যদি পণ্য মজুদ না থাকে তবে সরবরাহ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হলে এর দায়-দায়িত্ব কে নেবে?

তাই তারা মজুদের নীতিমালা বাস্তবায়নপূর্বক ভোক্তা অধিদপ্তরকে অভিযান পরিচালনার অনুরোধ জানান। বক্তারা ব্যবসায়ীদের মিথ্যা অপবাদ থেকে রক্ষার্থে সরকারের প্রতি জ¦ালানি তেলের মতো ভোজ্যতেলের সরবরাহ প্রক্রিয়া চালু করার অনুরোধ জানান। পরিশেষে তারা প্রশাসনিক চাপে ব্যবসায়ীদের অহেতুক আতঙ্কিত না করে কিভাবে সরবরাহ বৃদ্ধি করে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায় সে ব্যাপারে সরকারের আশু সহযোগিতা কামনা করেন। সরবরাহ প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্ন হলে দেশে ভোজ্যতেলের সংকট থাকবে না মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে রংপুর চেম্বারেরর সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, ভোগ্যপণ্য নিয়ে সিন্ডিকেট বাণিজ্যের প্রতি নজর রাখার পাশাপাশি দেশে তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে। তেল আমদানিকারক বৃদ্ধি পেলে একদিকে যেমন প্রতিযোগিতা বাড়বে, অন্যদিকে ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ থাকবে না বলে মতামত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে উৎপাদন এবং বিপণনের অনেক বিকল্প থাকে। ফলে একজন উৎপাদক বা সরবরাহকারী চাইলেই পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে ভোক্তার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। পরিশেষে তিনি ব্যবসায়ীদের অহেতুক হয়রানি না করে কিভাবে ভোজ্যতেলের সরবরাহ প্রক্রিয়া ঠিক রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায় সে ব্যাপারে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর চেম্বারেরর পরিচালক, রংপুর চেম্বারের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও দ্রব্যমূল্য নির্ধারণবিষয়ক উপপরিষদের সদস্য এবং রংপুরের ভোজ্যতেলের পরিবেশকরা।

শুক্রবার, ১৩ মে ২০২২ , ৩০ বৈশাখ ১৪২৮ ১০ শাওয়াল ১৪৪৩

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযান বন্ধের দাবি ব্যবসায়ীদের

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

চোর না হয়ে অহেতুক ব্যবসায়ীদের চোর বানানো থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রংপুরের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা। সেইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ এবং ভোক্তা অধিকার দপ্তরের অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

গতকাল দুপুরে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনে রংপুরের ভোজ্যতেলের পরিবেশকদের সঙ্গে চেম্বার নেতাদের মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।

রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটুর সভাপতিত্বে সভায় ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন রংপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আজিজুল ইসলাম মিন্টু, চেম্বারের পরিচালক, আভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও দ্রব্যমূল্য নির্ধারণবিষয়ক উপপরিষদের আহ্বায়ক ও নবাবগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আকবর আলী, রংপুরের ভোজ্যতেলের হোলসেলার মো. আজিজুল ইসলাম মুকুল, গোবিন্দ সাহা, বিশ^জিৎ পাল, মো. লেলিন, মো. মোস্তাফিজার রহমান, আবদুল হালিম, সাদেকুল ইসলাম, হিরণ কুমার মহতো, বদরুদ্দীন আহমেদ, মো. আবদুল হাকিম, আশেকুর রহমান তুষার, চেম্বারের পরিচালকদের মধ্যে মো. জুলফিকার আজিজ খান ভুট্টু, মো. সাবিহুল হক ও জাভেদ হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে মোকামে ও মিলারদের কাছ থেকে ভোজ্যতেল কিনতে না পারা এবং অহেতুক প্রশাসনিক চাপ ভোজ্যতেলের বাজারকে আরও অস্থির করে তুলবে। ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা আরও উল্লেখ্য করেন, যখন সয়াবিন তেলের লিটার ছিল ৮০ টাকা তখন কমিশন ছিল ৪ টাকা আর এখন সয়াবিন তেলের লিটার যখন ১৯৮ টাকা তখন আমাদের কমিশন শূন্য।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ইতোমধ্যে প্রশাসনিক চাপ ও ব্যবসায়িক সুনাম নষ্টের কারণে রংপুরের ভোজ্যতেলের হোলসেলাররা বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহে অনীহা প্রকাশ করছেন। তারা বলেন, হোলসেলারদের অবশ্যই পণ্য মজুদ করে সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হয়, গোডাউনে যদি পণ্য মজুদ না থাকে তবে সরবরাহ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হলে এর দায়-দায়িত্ব কে নেবে?

তাই তারা মজুদের নীতিমালা বাস্তবায়নপূর্বক ভোক্তা অধিদপ্তরকে অভিযান পরিচালনার অনুরোধ জানান। বক্তারা ব্যবসায়ীদের মিথ্যা অপবাদ থেকে রক্ষার্থে সরকারের প্রতি জ¦ালানি তেলের মতো ভোজ্যতেলের সরবরাহ প্রক্রিয়া চালু করার অনুরোধ জানান। পরিশেষে তারা প্রশাসনিক চাপে ব্যবসায়ীদের অহেতুক আতঙ্কিত না করে কিভাবে সরবরাহ বৃদ্ধি করে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায় সে ব্যাপারে সরকারের আশু সহযোগিতা কামনা করেন। সরবরাহ প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্ন হলে দেশে ভোজ্যতেলের সংকট থাকবে না মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে রংপুর চেম্বারেরর সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, ভোগ্যপণ্য নিয়ে সিন্ডিকেট বাণিজ্যের প্রতি নজর রাখার পাশাপাশি দেশে তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে। তেল আমদানিকারক বৃদ্ধি পেলে একদিকে যেমন প্রতিযোগিতা বাড়বে, অন্যদিকে ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ থাকবে না বলে মতামত ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে উৎপাদন এবং বিপণনের অনেক বিকল্প থাকে। ফলে একজন উৎপাদক বা সরবরাহকারী চাইলেই পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে ভোক্তার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। পরিশেষে তিনি ব্যবসায়ীদের অহেতুক হয়রানি না করে কিভাবে ভোজ্যতেলের সরবরাহ প্রক্রিয়া ঠিক রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখা যায় সে ব্যাপারে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর চেম্বারেরর পরিচালক, রংপুর চেম্বারের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও দ্রব্যমূল্য নির্ধারণবিষয়ক উপপরিষদের সদস্য এবং রংপুরের ভোজ্যতেলের পরিবেশকরা।