সোনারগাঁয়ের রসালো মিষ্টি লিচু বাজারে

ফলন কম হলেও নষ্ট না হওয়ায় খুশি কৃষক

এবার রমজান মাসের শেষে বাজারে এসেছে ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ে সুস্বাদু রসালো ফল লিচু। নির্ধারিত সময়েই পাকতে শুরু করায় উৎফুল্ল মন নিয়ে রসালো এই ফল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় এবছর ফলন কম হলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিচু নষ্ট হয়নি। সোনারগাঁয়ের লিচু কয়েকটি জাতের বিধায় ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে দেশী ছোট জাতের (পাতি) লিচু। তবে বাজারে আসতে শুরু করেছে কদমী লিচু ও আসার অপেক্ষায় রয়েছে বোম্বাই, এলাচী, চায়না-৩ এবং মোজাফফরপুরীসহ অন্যান্য জাতের লিচু। উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, মেঘনা, কাঁচপুর ও বৈদ্যেরবাজার এলাকার লিচু ব্যবসায়ী তুষার, হাসান, নুরুজ্জামান, রজন, কামরুল ও মামুনসহ আরো অনেকে জানান রোজার শেষে এবার লিচু বাজারে এসেছে।

দেশের অন্যান্য এলাকার লিচুর চাইতে সোনারগাঁয়ের লিচুর স্বাদ ভিন্ন বিধায় এর চাহিদা ও দাম রয়েছে একটু বেশি। শুরু থেকে দেশী জাতের (পাতি) লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। পাতি লিচু প্রথম অবস্থায় ৩ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা শ’ বিক্রি হলেও পরের দিকে দেড় থেকে ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাতি লিচুর পাশাপাশি সম্প্রতি বাজারে আসতে শুরু করেছে কদমী লিচু।

তবে কদমী লিচু বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ টাকা দরে। আর কয়েকদিন পরই আসবে বোম্বাই, এলাচী, মোজাফফরপুরী ও চায়না-৩ জাতের লিচু। চায়না-৩ লিচু ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা দরেও বিক্রি হয়ে থাকে। তবে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর পাতি ও কদমী লিচু ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি ফুলেছেও কিছুটা কম, তবে প্রচন্ড দাবদাহেও লিচু ফেঁটে নষ্ট হয়নি। ব্যবসায়ীরা আরো জানান, লিচুর মধ্যে সবার আগে দেশী (পাতি) লিচু পাকে বলে ক্রেতা সবার আগে এ লিচু হাতে পায়।

পর্যায়ক্রমে কদমী, এলাচী ও অন্যান্য জাতের লিচু বাজারে আসে। অনেক ক্রেতা জানান, সোনারগাঁয়ের লিচু আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ার কারণে চাহিদা বেশি থাকে। দাম একটু বেশি হলেও স্বাদের কাছে টাকার মূল্য খুব বেশি না।

লিচু বাগানের কয়েকজন মালিক জানান, পুরো সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩ শতাধিক লিচু বাগান রয়েছে। এই বছর লিচুর মুকুল প্রচুর আসলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অর্থ্যাৎ সময় মতো বৃষ্টি না আসায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মুকুল নষ্ট হয়েছে অনেক এবং পাতি ও কদমী লিচু ফুলেছে কিছুটা কম। সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর চাষ করেন মালিকরা। এর মধ্যে রয়েছে দেশী (পাতি), কদমী, বোম্বাই, চায়না-৩, এলাচী, মোজাফফরপুরী ইত্যাদি। তবে অন্যান্য লিচু থেকে কদমী লিচুতে অধিক লাভ হয় বলে এই লিচু চাষের প্রতি মনোযোগী হচ্ছেন চাষিরা।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুনিরা আক্তার জানান, সোনারগাঁয়ের মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য খুবই উপযোগি। তাই দিন দিন লিচু চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন সোনারগাঁয়ের মানুষ।

শনিবার, ১৪ মে ২০২২ , ৩১ বৈশাখ ১৪২৮ ১২ শাওয়াল ১৪৪৩

সোনারগাঁয়ের রসালো মিষ্টি লিচু বাজারে

ফলন কম হলেও নষ্ট না হওয়ায় খুশি কৃষক

প্রতিনিধি, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

image

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) : বাজারে লিচু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী -সংবাদ

এবার রমজান মাসের শেষে বাজারে এসেছে ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ে সুস্বাদু রসালো ফল লিচু। নির্ধারিত সময়েই পাকতে শুরু করায় উৎফুল্ল মন নিয়ে রসালো এই ফল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় এবছর ফলন কম হলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিচু নষ্ট হয়নি। সোনারগাঁয়ের লিচু কয়েকটি জাতের বিধায় ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে দেশী ছোট জাতের (পাতি) লিচু। তবে বাজারে আসতে শুরু করেছে কদমী লিচু ও আসার অপেক্ষায় রয়েছে বোম্বাই, এলাচী, চায়না-৩ এবং মোজাফফরপুরীসহ অন্যান্য জাতের লিচু। উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, মেঘনা, কাঁচপুর ও বৈদ্যেরবাজার এলাকার লিচু ব্যবসায়ী তুষার, হাসান, নুরুজ্জামান, রজন, কামরুল ও মামুনসহ আরো অনেকে জানান রোজার শেষে এবার লিচু বাজারে এসেছে।

দেশের অন্যান্য এলাকার লিচুর চাইতে সোনারগাঁয়ের লিচুর স্বাদ ভিন্ন বিধায় এর চাহিদা ও দাম রয়েছে একটু বেশি। শুরু থেকে দেশী জাতের (পাতি) লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। পাতি লিচু প্রথম অবস্থায় ৩ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা শ’ বিক্রি হলেও পরের দিকে দেড় থেকে ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাতি লিচুর পাশাপাশি সম্প্রতি বাজারে আসতে শুরু করেছে কদমী লিচু।

তবে কদমী লিচু বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ টাকা দরে। আর কয়েকদিন পরই আসবে বোম্বাই, এলাচী, মোজাফফরপুরী ও চায়না-৩ জাতের লিচু। চায়না-৩ লিচু ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা দরেও বিক্রি হয়ে থাকে। তবে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর পাতি ও কদমী লিচু ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি ফুলেছেও কিছুটা কম, তবে প্রচন্ড দাবদাহেও লিচু ফেঁটে নষ্ট হয়নি। ব্যবসায়ীরা আরো জানান, লিচুর মধ্যে সবার আগে দেশী (পাতি) লিচু পাকে বলে ক্রেতা সবার আগে এ লিচু হাতে পায়।

পর্যায়ক্রমে কদমী, এলাচী ও অন্যান্য জাতের লিচু বাজারে আসে। অনেক ক্রেতা জানান, সোনারগাঁয়ের লিচু আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ার কারণে চাহিদা বেশি থাকে। দাম একটু বেশি হলেও স্বাদের কাছে টাকার মূল্য খুব বেশি না।

লিচু বাগানের কয়েকজন মালিক জানান, পুরো সোনারগাঁয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩ শতাধিক লিচু বাগান রয়েছে। এই বছর লিচুর মুকুল প্রচুর আসলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অর্থ্যাৎ সময় মতো বৃষ্টি না আসায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মুকুল নষ্ট হয়েছে অনেক এবং পাতি ও কদমী লিচু ফুলেছে কিছুটা কম। সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর চাষ করেন মালিকরা। এর মধ্যে রয়েছে দেশী (পাতি), কদমী, বোম্বাই, চায়না-৩, এলাচী, মোজাফফরপুরী ইত্যাদি। তবে অন্যান্য লিচু থেকে কদমী লিচুতে অধিক লাভ হয় বলে এই লিচু চাষের প্রতি মনোযোগী হচ্ছেন চাষিরা।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুনিরা আক্তার জানান, সোনারগাঁয়ের মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য খুবই উপযোগি। তাই দিন দিন লিচু চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন সোনারগাঁয়ের মানুষ।