পারমাণবিক বিদ্যুতে বদলে গেছে রূপপুরের রূপ

পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ছোঁয়ায় বদলে গেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম রূপপুর। এক সময় সন্ধ্যা হলেই যেখানে গাঢ় অন্ধকারে নামতো রাত্রির নিস্তব্ধতা। ঠিক সেখানেই এখন দিন-রাত কর্মচাঞ্চল্য। প্রায় ৫ হাজার রাশিয়ান, বেলারুশ নাগরিকের পদচারণা বদলে দিয়েছে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক লেখচিত্র। চরের বিরাণভূমিতে গড়ে উঠেছে আকাশচুম্বী সুদৃশ্য আবাসিক ভবন, ঝকঝকে চকচকে শপিং মল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট।

২০১৫ সালে এখানে ছিল শুধু কাঁটাতারের বেড়া। চারদিকে ধু-ধু ফাঁকা মাঠ আর দু-একটি অস্থায়ী স্থাপনা। এখন হঠাৎ দেখায় রূপপুরের নতুন হাট এলাকাকে ইউরোপের কোন আধুনিক শহর ভেবে ভুল হতেই পারে। এমন পরিবর্তন বদলে দিয়েছে গ্রামীণ জনপদের চালচিত্র। রাশিয়ান আর বাঙালির সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়ায় সেখানে সৃষ্টি হয়েছে মধুর এক বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ। নিজে চোখে না দেখলে যা বিশ্বাস করা দায়। এ পরিবর্তনের পেছনে ভূমিকা রেখেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। শুধু রূপপুর নয়, পার্শ্ববর্তী পাকশী, সাহাপুর ও ঈশ্বরদীতেও পরিবর্তনের ছোঁয়া। পাল্টে গেছে জীবনচিত্র। বিদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়াও লেগেছে জীবনে। ফল ও সবজি বিক্রেতারাও রাশিয়ান ভাষা শিখেছেন। তারা রাশিয়ান ভাষায় কথা বলছেন। তাদের মতে, রাশিয়ানদের সঙ্গে মালামাল ক্রয়-বিক্রয় করতে করতে তাদের ভাষা শিখেছেন। পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর পাশেই নদী তীরে চলছে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার বিপুল নির্মাণ কাজ । পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কর্মযজ্ঞ শুরুর পর থেকে বদলে যেতে থাকে এলাকার চিত্র। রূপপুর প্রকল্পে কাজের সুযোগ পেয়েছেন কয়েক হাজার বেকার যুবক। তাদের ভাগ্য যেমন বদলে গেছে, তেমনি বদলে গেছে সামাজিক চিত্রও। এর বাইরে চারপাশে গড়ে ওঠা হোটেল, রিসোর্ট, বিপণিবিতানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো লোকের। বিদেশি নাগরিকদের কেনাকাটাসহ দৈনন্দিন নানা প্রয়োজন মেটাতে পাকশী, সাহাপুর, রূপপুর ও ঈশ্বরদী শহরে গড়ে উঠেছে একাধিক বিপণিবিতান, আধুনিক শপিংমল, সুপার শপ, রিসোর্ট ও তারকা হোটেল।

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের পরিচালক ড. শওকত আকবর জানান, এই প্রকল্পে দেশি-বিদেশি ২৫ হাজার প্রকৌশলী শ্রমিক সর্বদা কাজ করছেন। রাশিয়া, বেলারুশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫ হাজার বিদেশি শ্রমিক ও কর্মকর্তারা দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। বাকিরা দেশের। ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসহাক আলী মালিথা বলেন, হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। শুধু বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না, এখানে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।

রূপপুরের নাম এখন আন্তর্জাতিক মহলে

রাশিয়ানদের পদচারণায় রূপুপর যেন একখ- রাশিয়া পল্লীতে পরিণত হয়েছে। নতুন হাটের বিশ্বাস মার্কেটের মালিক অলিভ বলেন, আগে এখানে আমার রাইচ মিল ছিলো। ব্যবসা ভালো না হওয়ায় সেটা ভেঙে মার্কেট তৈরি করি। এখানে গ্রিন সিটি গড়ে তুলেছে সরকার। ২০ তলা করে গড়া ২০টি ভবনে থাকছেন প্রকল্পের কর্মীরা। রূপপুর প্রকল্পে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ায় এই মার্কেটের দোকানে রাশিয়ানসহ অনেক ক্রেতা আসে, আগের চেয়ে ব্যবসা ভালো হচ্ছে।

বিদেশি বিশেষ করে রাশিয়ার নাগরিকদের আনাগোনা স্থানীয় জীবনযাপনে প্রভাব ফেলেছে। আগের সেই নতুন হাট আর নতুন হাট নেই। এখন হয়েছে ইউরোপের কোন শহর। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থাপনায় রুশ সংস্কৃতির ছোঁয়া। সাইনবোর্ডে ইংরেজি বাংলার পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে রুশ ভাষা। রেস্তোরাঁর নাম রাখা হয়েছে- ‘রুশ ডাইন’, রয়েছে ‘রুশ ফ্যাশান’। এদিকে প্রকল্পের কারণে উপজেলার প্রায় সব এলাকার রাস্তাঘাট নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে বড় পরিবর্তন।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর জানান, প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই উপজেলায় ১০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছে। নতুন করে ঈশ্বরদীতে ২৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহিদুল ইসলাম জানান, রূপপুর প্রকল্পের ভারী মালপত্র রেলপথে আনা নেওয়ার জন্য ৩৩৫ কোটি টাকা খরচে ২৬ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মিত হয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ কিরণ বলেন, অভাব-অনটনের কারণে আগে এসব গ্রামে প্রায়ই পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ, দেনা-পাওনার নালিশসহ নানা ধরনের কলহ নিরসন করতে বিচার সালিশ করতে হতো।

.বেকারত্ব দূর হওয়ায় গ্রামে এখন আর সে পরিবেশ নেই। পারিবারিক, সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরেছে।

উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস বলেন, হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এই এলাকায়।

১৯৬১ সালে রূপপুরে এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ সময় পেরোলেও সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে উদ্যোগটিতে গতি আসে। চুক্তি হয় রাশিয়ার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পুরোদমে কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর।

এক হাজার ৬২ একর জমির ওপর স্থাপিত ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে থাকছে দুটি ইউনিট। প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে ২০২২ সালে। পরের বছর চালু কথা রয়েছে সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট। আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা করছে রাশিয়া।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে এক সময় আশেপাশের গ্রামবাসীর মধ্যে ছিলো নানা সংশয়, উদ্বেগ। কিন্তু প্রকল্পে কয়েক হাজার মানুষের কর্ম সংস্থান আর প্রকল্পের দেশি বিদেশি কর্মীদের কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক অঞ্চল পরশ পাথরের মতো বদলে দিয়েছে তাদের ভাগ্য। তাই এখন তাদের মুখেই রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের জয়গান। সম্ভাবনাময় আগামীর স্বপ্নে মধুর প্রতীক্ষা।

শনিবার, ১৪ মে ২০২২ , ৩১ বৈশাখ ১৪২৮ ১২ শাওয়াল ১৪৪৩

পারমাণবিক বিদ্যুতে বদলে গেছে রূপপুরের রূপ

প্রতিনিধি, পাবনা

image

পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ছোঁয়ায় বদলে গেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম রূপপুর। এক সময় সন্ধ্যা হলেই যেখানে গাঢ় অন্ধকারে নামতো রাত্রির নিস্তব্ধতা। ঠিক সেখানেই এখন দিন-রাত কর্মচাঞ্চল্য। প্রায় ৫ হাজার রাশিয়ান, বেলারুশ নাগরিকের পদচারণা বদলে দিয়েছে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক লেখচিত্র। চরের বিরাণভূমিতে গড়ে উঠেছে আকাশচুম্বী সুদৃশ্য আবাসিক ভবন, ঝকঝকে চকচকে শপিং মল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট।

২০১৫ সালে এখানে ছিল শুধু কাঁটাতারের বেড়া। চারদিকে ধু-ধু ফাঁকা মাঠ আর দু-একটি অস্থায়ী স্থাপনা। এখন হঠাৎ দেখায় রূপপুরের নতুন হাট এলাকাকে ইউরোপের কোন আধুনিক শহর ভেবে ভুল হতেই পারে। এমন পরিবর্তন বদলে দিয়েছে গ্রামীণ জনপদের চালচিত্র। রাশিয়ান আর বাঙালির সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়ায় সেখানে সৃষ্টি হয়েছে মধুর এক বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ। নিজে চোখে না দেখলে যা বিশ্বাস করা দায়। এ পরিবর্তনের পেছনে ভূমিকা রেখেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। শুধু রূপপুর নয়, পার্শ্ববর্তী পাকশী, সাহাপুর ও ঈশ্বরদীতেও পরিবর্তনের ছোঁয়া। পাল্টে গেছে জীবনচিত্র। বিদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়াও লেগেছে জীবনে। ফল ও সবজি বিক্রেতারাও রাশিয়ান ভাষা শিখেছেন। তারা রাশিয়ান ভাষায় কথা বলছেন। তাদের মতে, রাশিয়ানদের সঙ্গে মালামাল ক্রয়-বিক্রয় করতে করতে তাদের ভাষা শিখেছেন। পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর পাশেই নদী তীরে চলছে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার বিপুল নির্মাণ কাজ । পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কর্মযজ্ঞ শুরুর পর থেকে বদলে যেতে থাকে এলাকার চিত্র। রূপপুর প্রকল্পে কাজের সুযোগ পেয়েছেন কয়েক হাজার বেকার যুবক। তাদের ভাগ্য যেমন বদলে গেছে, তেমনি বদলে গেছে সামাজিক চিত্রও। এর বাইরে চারপাশে গড়ে ওঠা হোটেল, রিসোর্ট, বিপণিবিতানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো লোকের। বিদেশি নাগরিকদের কেনাকাটাসহ দৈনন্দিন নানা প্রয়োজন মেটাতে পাকশী, সাহাপুর, রূপপুর ও ঈশ্বরদী শহরে গড়ে উঠেছে একাধিক বিপণিবিতান, আধুনিক শপিংমল, সুপার শপ, রিসোর্ট ও তারকা হোটেল।

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের পরিচালক ড. শওকত আকবর জানান, এই প্রকল্পে দেশি-বিদেশি ২৫ হাজার প্রকৌশলী শ্রমিক সর্বদা কাজ করছেন। রাশিয়া, বেলারুশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫ হাজার বিদেশি শ্রমিক ও কর্মকর্তারা দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। বাকিরা দেশের। ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসহাক আলী মালিথা বলেন, হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। শুধু বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না, এখানে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।

রূপপুরের নাম এখন আন্তর্জাতিক মহলে

রাশিয়ানদের পদচারণায় রূপুপর যেন একখ- রাশিয়া পল্লীতে পরিণত হয়েছে। নতুন হাটের বিশ্বাস মার্কেটের মালিক অলিভ বলেন, আগে এখানে আমার রাইচ মিল ছিলো। ব্যবসা ভালো না হওয়ায় সেটা ভেঙে মার্কেট তৈরি করি। এখানে গ্রিন সিটি গড়ে তুলেছে সরকার। ২০ তলা করে গড়া ২০টি ভবনে থাকছেন প্রকল্পের কর্মীরা। রূপপুর প্রকল্পে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ায় এই মার্কেটের দোকানে রাশিয়ানসহ অনেক ক্রেতা আসে, আগের চেয়ে ব্যবসা ভালো হচ্ছে।

বিদেশি বিশেষ করে রাশিয়ার নাগরিকদের আনাগোনা স্থানীয় জীবনযাপনে প্রভাব ফেলেছে। আগের সেই নতুন হাট আর নতুন হাট নেই। এখন হয়েছে ইউরোপের কোন শহর। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থাপনায় রুশ সংস্কৃতির ছোঁয়া। সাইনবোর্ডে ইংরেজি বাংলার পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে রুশ ভাষা। রেস্তোরাঁর নাম রাখা হয়েছে- ‘রুশ ডাইন’, রয়েছে ‘রুশ ফ্যাশান’। এদিকে প্রকল্পের কারণে উপজেলার প্রায় সব এলাকার রাস্তাঘাট নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে বড় পরিবর্তন।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর জানান, প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই উপজেলায় ১০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছে। নতুন করে ঈশ্বরদীতে ২৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহিদুল ইসলাম জানান, রূপপুর প্রকল্পের ভারী মালপত্র রেলপথে আনা নেওয়ার জন্য ৩৩৫ কোটি টাকা খরচে ২৬ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মিত হয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ কিরণ বলেন, অভাব-অনটনের কারণে আগে এসব গ্রামে প্রায়ই পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ, দেনা-পাওনার নালিশসহ নানা ধরনের কলহ নিরসন করতে বিচার সালিশ করতে হতো।

.বেকারত্ব দূর হওয়ায় গ্রামে এখন আর সে পরিবেশ নেই। পারিবারিক, সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরেছে।

উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস বলেন, হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এই এলাকায়।

১৯৬১ সালে রূপপুরে এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ সময় পেরোলেও সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে উদ্যোগটিতে গতি আসে। চুক্তি হয় রাশিয়ার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পুরোদমে কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর।

এক হাজার ৬২ একর জমির ওপর স্থাপিত ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে থাকছে দুটি ইউনিট। প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে ২০২২ সালে। পরের বছর চালু কথা রয়েছে সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট। আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা করছে রাশিয়া।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে এক সময় আশেপাশের গ্রামবাসীর মধ্যে ছিলো নানা সংশয়, উদ্বেগ। কিন্তু প্রকল্পে কয়েক হাজার মানুষের কর্ম সংস্থান আর প্রকল্পের দেশি বিদেশি কর্মীদের কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক অঞ্চল পরশ পাথরের মতো বদলে দিয়েছে তাদের ভাগ্য। তাই এখন তাদের মুখেই রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের জয়গান। সম্ভাবনাময় আগামীর স্বপ্নে মধুর প্রতীক্ষা।